কৌসাম্বিতে পাওয়া লোহার বর্শার ফলার
মাইক্রো-স্ট্রাকচারের পরীক্ষা করে দুটি ধাতুর স্তর পাওয়া গিয়েছে। একটি কম
কার্বনওয়ালা কার্বুরাইজ়ড অন্যটি আনকার্বুরাজ়ড পেটাই(রট) লোহা। এটির একটি
সুক্ষ্ম, ধারওয়ালা প্রান্তকে ঠাণ্ডা করার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে এবং এটির কার্বন
মিশ্রণের মাত্রা ০।৬% এবং মাইক্র-হার্ডনেস ২১৬। অন্যান্য ধাতব বস্তুতেও ল্যামিনেসন
পদ্ধতি ব্যবহার হয়েছে। এবং আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে, ৪০০-৫০০ শতে
কারবুরাইজ়েসন পদ্ধতি জানতেন এবং উচ্চ কার্মন মিশ্রণের ইস্পাত বানাতে পারতেন।
কর্ণাটক এবং উত্তর প্রদেশের পরীক্ষায় বোঝা গেল যে এই
ধাতব বস্তুগুলি ল্যামিনেসন প্রক্রিয়া দ্বারা তৈরি হয়েছে। আকরিক থেকে সরাসরি শুদ্ধ
লোহা তৈরি করে, তার থেকে লোহার নানান যন্ত্রপাতি তৈরি করতেন কামাররা। ১০০০-১১০০
ডিগ্রি সেলসিয়াসের উচ্চ তাপে, সাধারণ ছোট চুল্লিতে, যার নাম ব্লুম, লোহা গলিয়ে
শুদ্ধ ব্লুমারি লোহা তৈরি হয়। এবং কখনও কখনও লোহার চাদরকে সরাসরি কাঠকয়লার আঁচে
ডুবিয়ে লোহার কার্বুরাইজ়েসন করা হত। এই পদ্ধতির নাম সেমেন্টেসন, কারবুরাইজ়েসন বা
কেস হার্ডেনিং। তবে ধাতুতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কার্বন মিশ্রিত হয়ে গেলে লোহা
ভঙ্গুর হয়ে পড়তে পারত। লোহা থেকে অতিরিক্ত
কার্বন বার করার জন্য লোহাকে বারবার গরম করা আর পেটানো হত। ভাঁজ করে, ফোর্জ করে
কারবুরাইজ়ড এবং আনকারবুরাইজ়ড দুপ্রকার লোহাই পর পর বিভিন্ন স্তরে সাজানো হত।
অবশ্যই শেষ স্তরটির লোহা কার্বুরাইজ়ড লোহা হতে হবে। এই স্তরগুলিকে এবারে একসঙ্গে
করে ক্রিটিক্যাল তাপমাত্রার নিচে রেখে চাহিদা মত আকার প্রদান করা হত। কার্বনের উপস্থিতি
খন্ডটিকে যেমন দৃঢতা দেচ্ছে, তেমনি, শুদ্ধ লোহা তাকে দিচ্ছে নমনীয়তা। এই পদ্ধতিতে
বস্তুটি ভেতরে এবং বাইরে, দুদিকেই দৃঢতা অর্জন করত।
উত্তর প্রদেশের জযমুর কুঠারটিতে কার্বন মিশ্রণ অনেক
বেশি। ল্যমিনেসন ছাড়াও এটিকে দ্রত ঠাণ্ডা গরমের প্রক্রিয়া এবং হাওয়া চালিয়ে মধ্যে
শোধন করা হয়েছে। ফলে ধারওয়ালা অংশটি অতিরিক্ত শক্ত এবং দৃঢ কয়েছে। এটির
মাইক্রো-স্ট্রাকচারের পরীক্ষা করে দুটি ধাতুর স্তরকে জোড় অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। এর
মধ্যে একটি কম কার্বন স্তর, অন্যটি বেশী কার্বন স্তর। বেশী কার্বন স্তরটি ধারযুক্ত
অংশের দিকে রয়েছে, এবং ভেতরের দিকে রয়েছে বেশী কার্বন স্তর। এই এলাকায় উদ্ধার করা
তীরের ফলা, বর্শার ফলা, পেরেক, ছুরি, তরোয়াল, হাতুড়ি সব কটিই ল্যামিনেসন পদ্ধতিতে
তৈরি।
ভরদ্বাজ, রাজঘাটের(৬০০-৪০০ খ্রিস্টপুর্বাব্দ) ৬টি ধাতব
বস্তুর রাসায়নিক পরীক্ষা করেছেন। এগুলির কার্বন সঙ্করতা ০.১২ – ০.৪২ শতাংশ। কম
কার্বনের উপস্থিতি হয়ত প্রমাণ করে যে ফোর্জিংএর সময় এগুলিকে সাধারনভাবেই
কার্বুরাইজ়ড করা হয়েছে। একটি ধাতব বস্তুতে ১.১% কার্বনের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে।
এর থেকে এটি প্রমাণ হয় যে এই খন্ডটিকে পরিকল্পিত ভাবে কার্বুরাইজ়েসন করা হয়েছে।
উত্তর প্রদেশের অতরঞ্জিখেড়া(৬০০ খ্রিস্টপুর্বাব্দ
থেকে ৩০০ খ্রিস্টাব্দ)র ৪টি ধাতব বস্তুর মেটালোগ্রাফিক পরীক্ষা করেন হরি নারায়ইণ(hari
narain) এবং অন্যান্যরা। দুটির মাইক্রো-স্ট্রাকচারের গঠন
হল মূলত ফেরাইটওয়ালা পিয়েরলাইট(স্তরীভুত)। এটিকেও মিনারেলাইজ়ড করা হয়েছে এবং খুব
কম রেসিডিউ ধাতু রয়েছে। তিনি বলছেন, ‘ফেরাইট স্ট্রাকচার উইথ পিয়ারলাইট অ্যান্ড
রেলিক কার্বাইড স্ট্রাকচার হোমোগেনয়াসলি ডিসট্রিবিউটেড ইন দ্য রেসিডুয়াল অ্যান্ড
মিনেরেলাইজ়ড মেটাল ওয়াজ রিভিল্ড ইন দ্য কেল্ট।’ কার্বন মিশ্রণ ০.৫-০.৬ শতাংশ।’
কার্বুরাইজ়ড পেটাই লোহাকে ফোর্জ করে পরিকল্পিত আকার দেওয়া হয়েছে এবং তার পর তাকে
সাধারণ তাপমাত্রায় দ্রুত ঠাণ্ডা করা হইয়েছে। চিজ়েলে হেটারোজেনিয়াস কার্বন কন্সেন্ট্রেসন(পিয়ারলাইট উইথ ফেরাইট স্ট্রেক্স অ্যান্ড মেইনলি পিয়ারলাইট) রয়েছে
০.৫-০.৮%। হাতিয়ারটি ধারের অংশটি অত্যধিক কার্বুরাইজ় করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment