আগের পোস্টের লেখাটি পেয়েছি কনক বর্মনের ফেবু থেকে।
এবারে আমার কিছু কথা।
আমার মামাতো বোন বুলি যখন একুশ , কলকাতায় মহাবিদ্যালয়ে পড়ত, দেখতে সে ঠিক ছিল যেন প্রীতিলতা। প্রীতিলতা বিষয়ে বুকের ভেতরের জমে থাকা কয়েকটা কথা বলার আগে একটি তথ্য বলে নিই।
নবম শ্রেণীতে পড়ার সময়ে প্রীতিলতাকে নিয়ে লেখা অমর শহীদ বিষয়ে একটা লেখা করেছিলাম। অনেককে ছেড়ে প্রীতিলতা কেন? জেনেছিলাম, প্রীতিলতা আত্মহত্মা করেছিলেন এই নয় যে তিনি গোরাদের লাঞ্ছনা এড়াতে চাইছিলেন। তিনি বিশ্বকে জানাতে চাইছিলেন যে বাংলার শহরের মেয়েরাও এনকউন্টারের যুদ্ধে যথেষ্ট পারদর্শী এবং সফল হতেও জানে। বাংলার গ্রামের মেয়েরা তার আগের দেড়শ বছর, পলাশীর পর থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জান বাজি রেখে লড়ছেন। প্রীতিলতা জালালাবাদের যুদ্ধ শেষে অক্ষত দেহে থেকে গেলে বিপ্লব-পাগল মধ্যবিত্ত বাঙ্গালিরা সেই সত্যে বিশ্বাস নাও করতে পারত হয়ত। তিনি প্রাণ দিয়ে বুঝিয়ে গিয়েছিলেন অকম্পিত চরিত্র, অবুঝ অসমঝোতার দেশপ্রেম, নিজের, দশের বা ন্যুনতম নিজের গোষ্ঠীর তৈরি করা দুর্দম স্বপ্নের মালা গাঁথা মানুষেরাও নিজেদের কাজ সফলভাবে সম্পাদন করেও ঠাণ্ডা মাথায় মরতে জানেন।
মহীয়সী নারী কথাটি আজ বহু ব্যবহারে দীর্ন, জীর্ন। সে তার সৌরভ হারিয়েছে প্রায় চিরতরে। কিন্তু প্রীতিলতাদের সম্বন্ধে আর অন্য কোনও শব্দ বোধহয় ব্যবহার করা যায় না। ক্ষুদিরামের আত্মদানের পর, বাংলার শহুরে সমাজে এটি যে কত বড় ঘটনা, আজ এই বিশ্বায়নের সরকারি-বেসরকারি লুঠের মুখে দাঁড়িয়ে ,হয়ত আমরা বুঝব না। আমাদেরই মধ্যে অনেকেই সেই লুঠের ভাগীদার যে। আজ প্রীতিলতাদের স্বপ্ন সব সরকারি চাকরি, সরকারি প্রকল্প আর কর্পোরেটদের সিন্দুকে লুকিয়েছে।
অন্ততঃ এই ভারতীয় বাংলায় ক্ষুদিরাম এখন ব্যঙ্গাত্মক শব্দ। প্রীতিলতারও অনেক আগে কলকাতার দেশপ্রেমী মধ্যবিত্তের সমস্ত ক্রুরতা উপেক্ষা করে চুপ থেকে ছিলেন কলকাতার বাইরে থেকে আসা ক্ষুদিরাম। ফাঁসির দড়ি পরা প্রায়-নিশ্চিত হয়েগিয়েছে, ক্ষুদিরাম প্রতিশোধ নিতে, তার বড় নেতাদের ব্রিটিশ পুলিশের(হায় সেখানেও চাকরি করছেন বাংলার মানুষই) কাছে নানান গোপন তথ্য প্রকাশ করে ফাঁসিয়ে দিতে পারেন, এই ভয় ছড়িয়ে পড়েছিল কলকাতার বিপ্লবী সমাজের মাথাজুড়ে। ক্ষুদিরাম তার নিজের পক্ষ, বিপক্ষের নানান ছল, প্ররোচনা উপেক্ষা করেই নির্বিকল্প চিত্তে প্রাণ দিয়েছিলেন।
ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতারা নিজেদের তৈরি করেছিলেন অধরা এক স্বপ্ন বাস্তব করতে। তারা পারেন নি, কিন্তু বীজ পুঁতে গিয়েছিলেন। তার পরের প্রজন্ম আঞ্জলিভরে পেয়েছিল সেই ব্যাপ্ত সুযোগ। কিন্তু সেই পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনা স্বপ্ন লুঠ হতে বসেছে রাষ্ট্রব্যবস্থার কর্নধারদের আত্মসমর্পনে। বিদেশের ঠাকুর পুজোর কাছা খোলা প্রতিযোগিতায় উদ্বাহু নৃত্যবান তারা।
তবুও প্রীতিলতাদের স্বপ্ন সফল করতে আজও হাজারে হাজারে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েন মাঠে ময়দানে, বন্দুকের সামনে, কর্পোরেট-রাষ্ট্রের উদ্যত তর্জনীর সামনে বুক চিতিয়ে।
তাদের জন্য বাংলার গ্রাম-শিল্পীদের পক্ষ থেকে রইল, ক্ষুদিরাম-প্রীতিলতাদের স্বপ্নভরা দুর্মদ সম্মান, ভালবাসা, প্রণাম।
এবারে আমার কিছু কথা।
আমার মামাতো বোন বুলি যখন একুশ , কলকাতায় মহাবিদ্যালয়ে পড়ত, দেখতে সে ঠিক ছিল যেন প্রীতিলতা। প্রীতিলতা বিষয়ে বুকের ভেতরের জমে থাকা কয়েকটা কথা বলার আগে একটি তথ্য বলে নিই।
নবম শ্রেণীতে পড়ার সময়ে প্রীতিলতাকে নিয়ে লেখা অমর শহীদ বিষয়ে একটা লেখা করেছিলাম। অনেককে ছেড়ে প্রীতিলতা কেন? জেনেছিলাম, প্রীতিলতা আত্মহত্মা করেছিলেন এই নয় যে তিনি গোরাদের লাঞ্ছনা এড়াতে চাইছিলেন। তিনি বিশ্বকে জানাতে চাইছিলেন যে বাংলার শহরের মেয়েরাও এনকউন্টারের যুদ্ধে যথেষ্ট পারদর্শী এবং সফল হতেও জানে। বাংলার গ্রামের মেয়েরা তার আগের দেড়শ বছর, পলাশীর পর থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জান বাজি রেখে লড়ছেন। প্রীতিলতা জালালাবাদের যুদ্ধ শেষে অক্ষত দেহে থেকে গেলে বিপ্লব-পাগল মধ্যবিত্ত বাঙ্গালিরা সেই সত্যে বিশ্বাস নাও করতে পারত হয়ত। তিনি প্রাণ দিয়ে বুঝিয়ে গিয়েছিলেন অকম্পিত চরিত্র, অবুঝ অসমঝোতার দেশপ্রেম, নিজের, দশের বা ন্যুনতম নিজের গোষ্ঠীর তৈরি করা দুর্দম স্বপ্নের মালা গাঁথা মানুষেরাও নিজেদের কাজ সফলভাবে সম্পাদন করেও ঠাণ্ডা মাথায় মরতে জানেন।
মহীয়সী নারী কথাটি আজ বহু ব্যবহারে দীর্ন, জীর্ন। সে তার সৌরভ হারিয়েছে প্রায় চিরতরে। কিন্তু প্রীতিলতাদের সম্বন্ধে আর অন্য কোনও শব্দ বোধহয় ব্যবহার করা যায় না। ক্ষুদিরামের আত্মদানের পর, বাংলার শহুরে সমাজে এটি যে কত বড় ঘটনা, আজ এই বিশ্বায়নের সরকারি-বেসরকারি লুঠের মুখে দাঁড়িয়ে ,হয়ত আমরা বুঝব না। আমাদেরই মধ্যে অনেকেই সেই লুঠের ভাগীদার যে। আজ প্রীতিলতাদের স্বপ্ন সব সরকারি চাকরি, সরকারি প্রকল্প আর কর্পোরেটদের সিন্দুকে লুকিয়েছে।
অন্ততঃ এই ভারতীয় বাংলায় ক্ষুদিরাম এখন ব্যঙ্গাত্মক শব্দ। প্রীতিলতারও অনেক আগে কলকাতার দেশপ্রেমী মধ্যবিত্তের সমস্ত ক্রুরতা উপেক্ষা করে চুপ থেকে ছিলেন কলকাতার বাইরে থেকে আসা ক্ষুদিরাম। ফাঁসির দড়ি পরা প্রায়-নিশ্চিত হয়েগিয়েছে, ক্ষুদিরাম প্রতিশোধ নিতে, তার বড় নেতাদের ব্রিটিশ পুলিশের(হায় সেখানেও চাকরি করছেন বাংলার মানুষই) কাছে নানান গোপন তথ্য প্রকাশ করে ফাঁসিয়ে দিতে পারেন, এই ভয় ছড়িয়ে পড়েছিল কলকাতার বিপ্লবী সমাজের মাথাজুড়ে। ক্ষুদিরাম তার নিজের পক্ষ, বিপক্ষের নানান ছল, প্ররোচনা উপেক্ষা করেই নির্বিকল্প চিত্তে প্রাণ দিয়েছিলেন।
ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতারা নিজেদের তৈরি করেছিলেন অধরা এক স্বপ্ন বাস্তব করতে। তারা পারেন নি, কিন্তু বীজ পুঁতে গিয়েছিলেন। তার পরের প্রজন্ম আঞ্জলিভরে পেয়েছিল সেই ব্যাপ্ত সুযোগ। কিন্তু সেই পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনা স্বপ্ন লুঠ হতে বসেছে রাষ্ট্রব্যবস্থার কর্নধারদের আত্মসমর্পনে। বিদেশের ঠাকুর পুজোর কাছা খোলা প্রতিযোগিতায় উদ্বাহু নৃত্যবান তারা।
তবুও প্রীতিলতাদের স্বপ্ন সফল করতে আজও হাজারে হাজারে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েন মাঠে ময়দানে, বন্দুকের সামনে, কর্পোরেট-রাষ্ট্রের উদ্যত তর্জনীর সামনে বুক চিতিয়ে।
তাদের জন্য বাংলার গ্রাম-শিল্পীদের পক্ষ থেকে রইল, ক্ষুদিরাম-প্রীতিলতাদের স্বপ্নভরা দুর্মদ সম্মান, ভালবাসা, প্রণাম।
No comments:
Post a Comment