অরুন কুমার বিশ্বাস, ১৯৮৬
ভারতের ধাতু প্রক্রিয়াকরণের ইতিহাস, ভারতের প্রযুক্তির
ইতিহাস সংগ্রহকারীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় এক জ্ঞানচর্চা। প্রায় অপ্রকাশিত এই ইতিহাসএর
খোঁজাটি কিন্তু বেশ ঝঞ্ঝাটময় প্রক্রিয়া। প্রত্নতাত্বিক খোঁড়াখুঁড়িতে নানাবিধ যে সব
আকর্ষণীয় ধাতুজ, অধাতুজ বস্তু, উদ্ধার হয়েছে, তার তৈরির প্রক্রিয়া, ব্যবহৃত
কাঁচামাল খোঁজা দেশ দুঃসাধ্য কাজ। এই কাজে হাইপথিসিস বা সঠিক প্রমাণ ছাড়া কোনোকিছু
ধরে নিয়ে অগ্রসর হয়ে কিছু একটা প্রমাণ করা একটি গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ। ভারতীয় প্রাচীন
সাহিত্যে ধাতু প্রক্রিয়াকরণ এবং ধাতু বিদ্যার কুড় খোঁজা এসবের থেকেও বেশ কঠিন কাজ।
ফলে ভারতের প্রাচীন রত্ন এবং ধাতুবিদ্যার গৌরব অনুসন্ধানের পথ, বিদ্যার্জনকারী
ব্যক্তির কঠোর অনুসন্ধিৎসার দাবি করে।
রস-রত্ন-সমুচ্চয়(এর পর থেকে ররস হিসেবে লেখা হবে)
আনুমানিক ত্রয়োদশ শতকে ধাতুবিদ্যা সংক্রান্ত একটি পুঁথি। লেখক ভগভট্টাচার্য্য।
সংস্কৃতে রচিত এই পুঁথি অবলম্বন করে আমরা জানতে পারি সে সময়ের বিশ্বের তুলনায়
ভারতে ধাতুবিদ্যারস্তরটি। একই সঙ্গে আমরা জানতে পারি সে সময়ের অধীত ধাতুধর্মের
জ্ঞান, খনিজ দ্রব্য পরিষ্করণ, ধাতু নিষ্কাশন, জ্বালানি, ক্রুসিবল(কার্বন মিশেল
দেওয়া বা কার্বণ সঙ্কর) এবং চুল্লি, ধাতু, সঙ্কর ধাতু এবং তাঁদের ধর্ম, ধাতব লবণ
এবং এধরনের আরও অনেক বিদ্যা।
Rasa-Ratna-Samuccaya and mineral processing
state-of-the art in 13th century a.d. india প্রবন্ধে অরুন কুমার বিশ্বাস দেখতে চেয়েছেন অতীত থেকে ররসএর সময় পর্যন্ত
ভারতের খনিজ দ্রব্য এবং ধাতু বিদ্যার বিকাশের ইতিহাস। ৫০০০ খৃস্টপুর্বাব্দ থেকে
কপার(তামা), ব্রোঞ্জ(কাঁসা), লাপিস লাজুলি(লাজাবর্ত বা রাবত বা রাজাবর্ত্ম্য),
টারকয়েজ(ফিরোজ়া) ব্যবহার এবং স্ট্যাটাইট(সাবান পাথর বা সিলাখড়ি) এবং স্ট্যাটাইট
কাটার কর্মশালার নিদর্শন পাওয়া যাচ্ছে মেহেরগড় উৎখননের সময়। হরপ্পা-পুর্ব
সিদ্ধুওয়ালা বা গনেশওয়ারের মত বসতিতে তামার ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে। হরপ্পা
সভ্যতায় সোনা, রূপা, দস্তা এবং টিনের অস্ত্বিত্ব এবং এগুলির সঙ্গে নানান খণিজ
দ্রব্য ব্যবহার করে নানান ধরণের দ্রব্য তৈরির উদাহরণ পাওয়া যাচ্ছে। এই সময়ে বিশাল
সংখ্যক দামি রত্ন ব্যবহার হচ্ছে নানান
ধরণের সাজসজ্জার কাজে। এবং প্লিনির সুত্রে জানতে পারি, এই ঐতিহ্যের সূত্র ধরে
ভারতীয়রা এই কাজে নিজেদের অসম্ভব দক্ষ করে তুলেছেন।
No comments:
Post a Comment