বিশেষজ্ঞরা বলছেন কাঁসা এবং লোহা যুগ অনেকদিন পরস্পর হাত
ধরাধরি করে হেঁটেছে। আফগানিস্তানের মুন্ডিগাক ৪এ ২৩০০ খৃস্টপুর্বাব্দে লোহার বাটন (বোতাম!)
এবং স্পেকিউলার হেমাটাইট নডিউল দেখা যাচ্ছে। ১০০০ খৃস্টপুর্বাব্দে কর্ণাটকের
টাডাকানাহাল্লির মেগালিথিক উতখননে দেখা গিয়েছে সেই কোন কাল থেকে বিভিন্ন লোহার
দ্রব্য জমে রয়েছে একইভাবে – এদের কিছু অংশ কার্বনযুক্ত (কার্বুরাইজড) এবং এগুলোর
হিট ট্রিটমেন্ট হয়েছিল। তাই জোর গলায় বলা দরকার, অতীত থেকেই উত্তর ভারতের লোহার
প্রযুক্তি বিকাশে যেমন ভিনগ্রহের প্রানিদের যেমন হাত ছিল না তেমনি আবার এটি
আক্রমণকারী আর্যদেরও দান নয়। ইতিহাসের বিভিন্ন স্তরে খোঁজ থেকে পাওয়া নানান ধরণের
ধাতু এবং খনিজ দ্রব্যের একটি বিশদ তালিকা তৈরি করেছেন শ্রীবাস্তবমশাই। প্রথম
তালিকায় অতীত থেকে ভারতে কি কি ধরণের ধাতু এবং খনিজ ব্যবহৃত হত তার একটি চুম্বক
তুলে দেওয়া গেল। দ্বিতীয় তালিকায় বিশ্ব সভ্যতায় ভারতের দামি পাথর এবং রত্নের জ্ঞানচর্চার আরও একটি সংক্ষিপ্তসার তুলে দেওয়া
গেল।
দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তালিকাটি ররস থেকে নেওয়া। এই পুঁথি পাঠ
করে আমরা পাচ্ছি, ত্রয়োদশ শতকে ভারতের রত্ন সহ দামি পাথর, পাথর-বিহীন খণিজ দ্রব্য,
ধাতু চুর(মেটালিক ওর) এবং সঙ্কর ধাতুর উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানের চর্চার এক ধ্রুপদী
বিবরণ। এই পুঁথিটিকে বর্ননা করতে গিয়ে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, হিস্ট্রি অব
কেমিস্ট্রি ইন এনসিয়েন্ট অ্যান্ড মেডিভ্যাল ইন্ডিয়ায়, বললেন, a typical
production of latrochemical period, coming after the extravagance of the
Trantric Alchemical texts. ররস’র পর,
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আগে পর্যন্ত আরও পাঁচ দশক ধরে, রত্ন চর্চায়, ধাতুবিদ্যায় এবং
রসায়ন বিদ্যায় যে ধরণের বিকাশ ঘটেছে এই প্রবন্ধের তার একটি সারমর্ম উপস্থিত করা
যাবে, পাঠকের জ্ঞান তৃষ্ণা নিবারনের স্বার্থে। কিন্তু এটি স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া
যাক, এখনও পর্যন্ত যত পুঁথি পাওয়া গিয়েছে এই ধারনের বিদ্যাচর্চা সংক্রান্ত, তাতে
বলে যায়, ররসএর সময়ই ব্রিটিশ পুর্ব ভারত ধাতু এবং রত্ন বিদ্যায় শৃঙ্গে আরোহণ করেছিল।
No comments:
Post a Comment