মুসলমানের
আগমন
কলিঙ্গ
নগর ছাড়ি প্রজা লয় ঘর বাড়ী,
নানা জাতি বীরের নগরে।
বীরের
পাইয়া পাণ, বসিল মুসলমান,
পশ্চিম দিকে বীর দিল তারে।।
আইসে
চড়িয়া তাজি, সৈয়দ মোগল কাজী,
খয়রাতে বীর দিল বাড়ি।
পূরের
পশ্চিম পটী, বলায় হাসান হাটী
একত্র সবার ঘর বাড়ি।।
ফজর
সময়ে উঠি, বিছায়ে লোহিত পাটী,
পাঁচবেরি করয়ে নমাজ।
সোলেমানি
মালা ধরে, যপে পীর পেগম্বরে
পীরের মোকামে দেই সা’জ।।
দোষ
বিষ বেরাদারে, বসিয়া বিচার করে,
অনুদিন পড়য়ে কোরাণ।
সাঁঝে
ডালা দেই হাটে, পীরের শিরনি বাঁটে
সাঁঝে বাজে দগড় নিশান।।
বড়ই
দানিশবন্দ, কারো নাহি করে
ছন্দ,
প্রাণ গেলে রোজা নাহি ছাড়ি।
ধরয়ে
কম্বোজ দেশ, মাথায় না রাখে কেশ,
বুক আচ্ছাদিয়া রাখে দাড়ি।।
না
ছাড়ে আপন পথে, দোষ রোখা টুপি মাথে
ইজার পড়য়ে দৃঢ নারী।
যব
দেখে খালি মাথা তা সনে না কহে কথা
সারিয়া ঢেলাব মারে বাড়ী।।
আপন
টোপর নিয়া বসিল অনেক মিঞা,
ভুঞ্জিয়া কাপড়ে পোঁছে হাত।
সাবালি
লহানি আর, লদানি সুরয়ানি চার
পাঠান বসিল নানা জাত।।
আপন
তরফ নিয়া বসিল অনেক মিঞা,
কেহ নিকা কেহ করে বিয়া।
মল্লা
পড়ায়ে নিকা, দান পায় সিকা সিকা,
দোয়া করে কলমা পড়িয়া।।
করে
ধরি খর ছুরী, মুরগী জবাই করি,
দশ গণ্ডা দান পায় কড়ি।
বখরী
জবাই যথা, মোল্লারে হেয় মাথা,
দান পায় কড়ি ছয় বুড়ি।।
যত
শিশু মুসলমান, তুলিল মক্তব
স্থান,
মখদম পড়ায় পঠনা।
করিয়া
চণ্ডীর ধ্যান, শ্রীকবিকঙ্কণ
জ্ঞান,
গুজরাট পুরির বর্ণনা।।
মুসলমানগণের
শ্রেনিভেদ
রোজা
নামাজ করি কেহ হইল গোলা।
তাসন
করিয়া নাম বাজাইল জোলা।।
বলদ
বহিয়া কেহ বলায় মুকোরি।
পিঠা
বেচিয়া নাম কেহ বলায় পিঠারি।।
মৎস
বেচি নাম কেহ ধাবাল কাবারি।
নিরবতর
মিথ্যা কহে নাহি রাখে দাড়ি।।
হিন্দু
হয়ে মুসলমান হয় গরসাল।
নিশাকালে
ভিক্ষা মাগে নাম ধরে কাল।।
সানা
বান্ধি নাম বলাইল সানাকর।
জীবন
উপায় তাঁর পেয়ে তাঁতি ঘর।।
পট
পড়িয়া বুলে কেহ নগরে নগর।
তীরকর
হয়ে কেহ নিরমায় শর।।
কাগজ
কুটিয়া নাম ধরাই কাগাতি।
কলন্দর
হয়ে কেহ ফিরে দিবারাতি।
বসন
রাঙ্গায়ে কেহ ধরে রংরেজ।
লোহিত
বসন শিরে ধরে মহা তেজ।।
সুন্নত
করিয়া নাম বলায়ে হাজাম।
শহরে
শহরে ফিরে না করে বিশ্রাম।
কাটিয়া
কাপড় জোড়ে দজির ঘটা।
নেয়াল
বুনিয়া নাম বলায় বেনটা।।
নানান
বৃত্তি করিয়া বসিল মুসলমান।
সাবধান
হয়ে শুন হিন্দুর বাখান।।
No comments:
Post a Comment