খনিজ এবং তাদের ধর্মসমূহ
গারুড় পুরাণ বিভিন্ন রত্নের ভৌত ধর্মের জ্ঞান বিশদে বর্ণনা করছে। বিভিন্ন রত্নের
নানান ধরনে খুঁতের বিদ্যাও গারুড় পুরাণে
আলচিত হচ্ছে। আসল এবং নকল হীরা চেনার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে প্রাথমিকভাবে আলো
প্রতিসরনের ধর্মগুলো নজরদারি করা, এলকালাইন সঙ্গে রাখলে বিকৃত বা হওয়া বা তার
কাঠিন্য বা তাতে আঁচড় পড়ার ধর্ম পরীক্ষা করা। রুবি, এমারেল্ড এবং মুক্তার ক্ষেত্রেও
এ ধরণের নানান পরীক্ষার কথা বিশদে বলা হয়েছে। প্লিনি বলছেন, বিশ্বের রত্ন জ্ঞানের
বাজারে ভারতই একমাত্র মাতৃসমা। এবং প্লিনি আরও বলছেন, বিভিন্ন কৃস্টালকে রঙে
ছুপিয়ে দামি রত্নের নকল তৈরি করার কাজে সিদ্ধহস্ত ছিল ভারতীয়রা।
ররসতে আরও বিশদে নানান রত্ন এবং রত্ন ব্যতীই খণিজ দ্রব্যের বিশদ বিবরণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও
রত্নের নানান খুঁত যেমন অকলুসন(গ্রাস),
অন্য পদার্থ বিন্দুর উপস্থিতি(ত্রাস), কাল ছোপ/দাগ(বিন্দু), বুদবুদ/বাবলস(জলঘরভাট)
ইত্যাদি বিশদে আলচিত হয়েছে ররসতে। কোরান্ডামএর (করুবিন্দ) (অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড)
উতপত্তি এবং সেটির ভারতীয়ত্ব বিষয়ে বিশদে আলোচিত হয়েছে। গোমেদই জারকন বনাম গারনেট
কিনা এবং রাজাবর্ত্ম্য লাপিস লাজুলি বা আয়ামেথেইস্ট কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে
পণ্ডিত মহলে।
ত্রয়োদশ শতকেই ভারত বিপুল এবং বিচিত্র সংখ্যক
এসিড, অ্যালকালি, লবণসহ অভ্র(মাইকা), পাইরাইট(আয়রন সালফাইড), কোয়ার্তজ়, সালফার,
লোহা, কপার, লেড(সীসা?), দস্তার মত নানান ধরণের খণিজ সম্বন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন,
এবং বিশদ চর্চা করে ফেলেছে। সালফেটের রাসায়নিক পরিবর্তন করিয়ে এ্যালাম(তুভারি),
ফেরাস সালফেট(কাসিসা), কপার সালফেট(সাস্যক)এর মত যৌগ তৈরি করে ফেলেছে, এবং তাদের
ধর্ম বিচার হয়ে গিয়েছে। সেগুলিকে রঙ করা এবং রঙ স্থায়ী করার রাসায়নিক হিসেবে
ব্যবহার করা চালু হয়ে গিয়েছে। পটাসিয়াম কারবনেটএর সঙ্গে ক্লোরাইড মিশিয়ে, ররস যাকে
বলছে কুলিক লবণ বা নবসার অ্যালকালি(ক্ষার)(পারদকে ক্যালোমেল বা মারকারাস ক্লোরাইডে
পরিবর্তিত করার) এবং সার হিসেবে ব্যব্যহার
কআর জ্ঞান অর্জন করে ফেলেছে। অনেক খণিজ দ্রব্যের আধুনিক মানে হয়ত ঠিক করছিনা বলে
মনে করছেন আরুনবাবু। যেমন, অঞ্জনা র অর্থ কলিরিয়াম, কারিকুষ্ঠ আদতে SnO2
or As2S2 কিনা, গৌরিপসন,
ভারটিক কি যথাক্রমে কলোফেন বা বক্সাইট কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে পিনাক
অভ্রএর ধর্ম বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে আগুনে দিলে বেড়ে যায় এবং তা যে ভারমিকিউলাইট সে
ব্যপারে তিনি নিশ্চিন্ত।
No comments:
Post a Comment