সমসাময়িক কলকাতার আলালি বাবুদের হালহকিকত প্রকাশ পেয়েছে বটতলা সাহিত্যে আর
সংবাদপত্রে। ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি
ব্যঙ্গাত্মক রচনা কলিকাতার কমলালয়(১৮২৩) আর নব-বাবুবিলাস(১৮২৫)
আলালদের চরিত্র তুলে ধরেছে অসম্ভব সততায়। ভবানীচরণ সে
যুগের কলকাতার বাবু সমাজের অসামান্য ব্যবচ্ছেদ করেছেন এই দুটিতে। কলকাতার কমলালয়এ বিষয়ী ভদ্রলোকেদের তিন স্তরে ভাগ
করেছেন লেখক। যাঁরা বড় কাজ করেন অর্থাত দেওয়ানি বা মুদচ্ছুদ্দিগিরি কর্ম্ম
করিয়া থাকেন(রামমোহন, দ্বারকানাথ!)
এবং অপূর্ব্ব পোষাক জামাজেড়া (রামমোহনের পোষাক সম্বন্ধে ক্ষিতীন্দ্রনাথ
ঠাকুর দ্বারকানাথ ঠাকুরের জীবনী পুস্তকে লিখছেন, ...যদিও রাজা সমাজে পদব্রজে যাইতেন, কিন্তু তিনি কখোনো ধুতি চাদর পরিতেন
না।
...মুসলমানদিগের বাহ্য আচার বাহ্য আচার ব্যবহারের প্রতি রাজার বিশেষ অনুরাগ
ছিল।)ইত্যাদি পরিধান করিয়া পালকী বা অপূর্ব্ব শকটারোহণে কর্ম্মস্থান গমন করেন। দ্বিতীয়স্তরে
সাধারণ মধ্যবিত্ত লোক, অর্থাত যাঁহারা
ধণাঢ্য নহেন কেবল অন্নযোগে আছেন। এঁদের রীতিনীতিসম্বন্ধে ভবানীচরণ বলছেন, কেবল দানবৈঠকী আলাপের অল্পতা আর পরিশ্রমের বাহুল্য। আর তৃতীয় স্তরের কলকাতাবাসীদের ভবানীচরণ বলছেন দরিদ্র অথচ ভদ্রলোক। এদের চরিত্র, কেবল আহার, দানাদিকর্ম্মের লাঘব আছে আর শ্রম
বিষয়ে প্রাবল্য বড় কারন কেহ মুহুরি কেহ মোট কেহবা বাজার সরকার ইত্যাদি কর্ম্ম
করিয়া থাকেন। এছাড়া অসাধারণ ভাগ্যবান নামে ভবানীচরণ আরও একটি
আলাদা স্তরের কথা বলছেন ভগবানের কৃপাতে
যাঁহাদিগের প্রচুরতর ধন আছে সেই ধনের বৃদ্ধি অর্থাত সুদ হইতে কাহার বা জমিদারির
উপস্বত্ব হইতে ন্যাহ্য ব্যয় হইয়াও উদ্বৃত্ত হয়।
পরের দিকে ব্রিটিশ সরকারের শোষণ নীতির বিরুদ্ধে
দেশব্যাপী গ্রামীণ স্বাধীণতা সংগ্রামের আগুনের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ভবানীচরণের
বর্ণনায় প্রথম শ্রেণীর যে সব কেষ্টুবিষ্টু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আর ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যের সঙ্গে সমঝোতা করে লুঠের অর্থের বখরা পেয়েছেন তাদের অনেকেই কলকাতার
এজেন্সি হাউসগুলোর অংশিদার হয়েছেন, পরোক্ষে লুঠের সাম্রাজ্যের অংশিদারি করেছেন।
ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার নব-বাবুবিলাস (১৮২৫)এ বলছেন ...ধন্য
ধন্য ধার্মিক ধর্মাবতার ধর্মপ্রবর্তক দুষ্টনিবারক সত্প্রজাপালক সদ্বিবেচক ইংরাজ
কোম্পানি বাহাদুর অধিক ধনী হওনের অনেক পন্থা করিয়াছেন এই কলিকাতা নামক মহানগর
আধুনিক কাল্পনিক বাবুদিগের পিতা কিম্বা জৈষ্ঠভ্রাতা আসিয়া স্বর্ণকার চর্মকার মঠকার
বেতনোপভুক হইয়া কিম্বা রাজের সাজের কাঠের ঘাটের মাঠের ইটের সরদারি চৌকিদারি
জুয়াচুরি পোদ্দারী করিয়া অথবা অগম্যাগমন মিথ্যাবাচন পরকীয় রমনীয়সংঘটনকামি ভাড়ামি
রাস্তাবন্দ দাস দৌত্য গীতবাদ্যতত্পর হইয়া কিম্বা পৌরোহিত্য ভিক্ষাপুত্র গুরুশিষ্য
ভাবে কিঞ্চিত্ অর্থসঙ্গতি করিয়া কোম্পানির কাগজ কিম্বা জমিদারি ক্রয়াধীন বহুতর
দিবসাবসানে অধিকতর ধণাঢ্য হইয়াছেন...।
রামতনু লাহিড়ী ও তত্কালীন বঙ্গসমাজ গ্রন্থে শিবনাথ শাস্ত্রী বলছেন তখন
নিমক মহলের দেওয়ানি লইলেই লোকে দুই দিনে ধনী হইয়া উঠিত(দ্বারকানাথের দিকে আঙুল
নাকী!)। এইরূপে সহরের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি ধনী হইয়াছেন। অথবা কালীপ্রন্ন সিংহমশাই হুতোম প্যাঁচার নক্সায়
কোম্পানির সঙ্গে দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করে ব্যবসা ফাঁদার কথা বলছেন, কোম্পানির বাঙলা দখলের কিছু পরে, নন্দকুমারের
ফাঁসি হবার কিছু পূর্ব্বে আমাদের বাবুর প্রপিতামহ নিমকের দাওয়ান ছিলেন, সেকালে
নিমকীর দাওয়ানিতে বিলক্ষণ দশটাকা উপায় ছিল, সুতরাং বাবুর প্রপিতামহ পাঁচ বত্সরের
কর্ম করে মৃত্যুকালে প্রায় বিশ লক্ষ টাকা রেখে যান – সেই অবধি বাবুরা বনেদি বড় মানুষ হয়ে পড়েন।
১৮২০তে কলকাতার রামদুলাল দে, দুই পুত্র, (ছা)সাতুবাবু আর
লাটুবাবুর বিয়েতে গভর্নমেন্ট গেজেটে বিজ্ঞাপণ দিয়ে কলকাতাবাসীকে নিমন্ত্রণ করেন। ইংগ্লণ্ডীয় সাহেবদের জন্য দুদিন নির্ধারিত হয়। জানানো হয় যেন ঐ দুদিন তাঁহারা
শিমলের বাটীতে গিয়া নাচ প্রভৃতি দেখেন ও খানা করেন। অন্য চারদিন ঠিকহয় আরব ও মোগল ও হিন্দু ভাগ্যবান লোকেদের জন্য
এবং তাঁহারাও উপযুক্ত মত আমোদ করিবেন। ঐ একই বছরে রামরতন মল্লিক তাঁর পুত্রের বিবাহ দেন। তত্কালীন সংবাদ পত্রে লেখা হল, এমন
বিবাহ শহর কলিকাতায় কেহ কখনও দেন নাই। বিবাহে যেরকম
সমারোহ হয়, তাতে অনুমান হয় যে সাত আট লক্ষ টাকার ব্যয় ব্যাতিরেকে এমত মহাঘটা হইতে
পারে না...সকল লোকেই এ বিবাহের প্রশংসা করিতেছে ও কহিতেছে যে এমন বিবাহ আমরা দেখি
নাই। (লক্ষ লক্ষ টাকা খরচের বিপরীতে, ঐ
বছরের আশেপাশেই, মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় জীবিকার খোঁজে আসা জনৈক ঠাকুরদাস, যিনি
পরে বিদ্যাসাগরের পিতারূপে প্রখ্যাত হবেন, মাসে ২ টাকা রোজগার করে স্বচ্ছল ভেবে
বাড়িতে টাকা পাঠাবার চিন্তা করছিলেন।)
সেসময় কলকাতায় বেড়াতে এসেছিলেন জনৈক ব্রিটিশ মহিলা, ফ্যানি
পার্কস। ফ্যানির স্মৃতিকথা সেসময়ের অভিজাত
মহলের দরজা পরের প্রজন্মের সামনে খুলে দেয়। তিনি বলছেন,
গভর্নমেন্ট হাউসে প্রচুর পার্টি হত, এবং এদেশি ধনিকদের প্রাসাদেও ভোজসভা ও বলনাচও
হত। ১৮২৩এর মে মাসের রামমোহন রায়ের বাড়ির ভোজসভার বর্ণনা
দিচ্ছেন ফ্যানি(বিনয় ঘোষ, বিদ্যাসাগর ও বাঙালি সমাজ), সেদিন সন্ধ্যাবেলা আমরা একজন ধনী বাঙালি বাবু রামমোহন রায়ের বাড়িতে
ভোজসভায় গিয়েছিলাম। প্রচুর আলো দিয়ে বাড়ি আর বাগান
সাজানো হয়েছিল, বাজিও যথেষ্ট পোড়ানো হয়েছিল। গৃহের বিভিন্ন
কক্ষে নর্তকীদের নাচগান হচ্ছিল। ভোজ শেয হওয়ার পর ভারতীয় জাদুগরেরা
নানান রকম মজার খেলা দেখাল। কেউ তরবারি গিলেফেলল, কেউবা মুখ দিয়ে
আগুন আর ধোঁয়া বের করল। একজন ডান পায়ে ভরদিয়ে দাঁড়িয়ে,
বাঁপা পেছন দিকে ঘুরিয়ে কাঁধে আটকে দিল। আর এক ধনী বাঙালিবাবুর বাড়ির দুর্গোত্সব প্রসঙ্গে ফ্যানি লিখছেন, উত্সবে বহু সাহেব আমন্ত্রিত হয়েছিলেন এবং
গ্যান্টার এন্ড হুপার কোম্পানি তাঁদের খাদ্য পরিবেশনের ভার নিয়েছিলেন। বরফের সঙ্গে ফরাসী মদ্য তাঁদের পান করতে দেওয়া হয়েছিল। দলে দলে নর্তকীরা বিভিন্ন কক্ষে নাচ করছিল হিন্দুস্থানীগানে। ১৮২৩এর ১৫ মার্চে দয়ালচাঁদ আঢ্যের ভাগনে রাজেন্দ্র মল্লিকের কানফোঁড়ানো
উত্সবের উপলক্ষ্যে এক ইওরোপিয় অভিজ্ঞতা কলিকাতার কথায় উল্লেখ করছেন রায়বাহাদুর
প্রমথনাথ মল্লিক, বাটির বাইরে যেরূপ আলো দেওয়া হইয়াছিল ভেতরের আড়ম্বর উহা
অপেক্ষা কেন অংশে ন্যুন ছিল না। ... অলৌকিক
সৌন্দর্যশালিনী নিকির গান ও রূপের বর্ণনা তাহার সঙ্গিনীর সঙ্গে মানাইয়াছিল। ...ইওরোপবাসীরা টেবিলে বসিয়া ...মদ্যপান করিয়া ছিল ও হিন্দুরা অন্দরে গিয়া
ভেজনাদি করিয়াছিল।
১৮২৩এ দ্বারকানাথ ঠাকুর তাঁর নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশ
উত্সব করেন। তাতে তিনি অনেক ভাগ্যবান সাহেব ও বিবীরদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া আনাইয়া চতুর্বিধ ভোজনীয়
দ্রব্য ভোজন করাইয়া পরিতৃপ্ত করেছিলেন এবং ভোজনাবসানে ঐ বাসভবনে উত্তম গানে ও
ইংগ্লন্ডীয় বাদ্য শ্রবণে ও নৃত্য দর্শনে সাহেবেরা যথেষ্ট আমোদ করেছিলেন। পরে ভাঁড়েরা নানান রকম সং সেজেছিল এবং তাহাদের মধ্যে একজন গোবেশ ধারণপূর্ব্বক ঘাস চর্ব্বণাদি করিল। সেসময় বিদ্রেহীবাঙলার দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়ে বহু মহাতেজ
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কয়েক আঁটি ছুঁড়ে দেওয়া ঘাস চিবিয়ে বাঙলা নবজাগরণের অগ্রদূতের
উপাধি পেয়েছিলেন। আজ সেই দাস্যভাবের দরজা খুলে হাট করে
দিচ্ছে নতুন প্রজন্ম। রায়ত লুঠের ধনে বেলেল্লাপনাকরে যাঁরা
ভাগিরথীর জলে অজস্র অর্থ বইয়ে দিলেন, তাঁরা স্বাধীণতার পরেও বাঙলার নবজাগরণের
অগ্রদূতরূপে পুজ্যই থেকে যান।
এ বাব্বা! তুমি জাননা!
ভারতের স্বাধীণতার পর ইংরেজি মাধ্যমে পড়া, বিদেশে উচ্চশিক্ষা লাভ করে চোস্ত
ইংরেজিতে কথা বলা, এক বাঙলি বামপন্থী বুদ্ধিজীবি নেতা, নতুন কমরেড পেলেই তাঁকে সর্বাগ্রে
ইওরোপের ইতিহাস পড়তে অনুপ্রাণিত করতেন। তার সামনে
ইওরোপিয় জ্ঞাণই বিশ্বজ্ঞাণ, ইওরোপের ইতিহাসই বিশ্ব ইতিহাস, ইওরোপের জীবনযাত্রাই
বিশ্বের দরবারে একমাত্র মান্য জীবনযাত্রার পদ্ধতি। ইওরোপ প্রমাণ করে ছেড়েছে এরবাইরে আর সব জ্ঞাণ প্রাচীণ, প্রিমিটিভ, পারম্পরিক। বহুদিনের প্রচারের ঢক্কানিনাদে এ ধরণের গেলানো তথ্য এ বাব্বা! তুমি
জাননা! গোছের সাধারণ জ্ঞাণের রাজনীতিতে ঢুকে পড়ে কুইজ প্রতিযোগিতায় স্থান
পেয়েছে। সেই তথ্যের রাজনীতিতে বিশ্ব স্বীকার
করতে বাধ্য হয়েছে, ইওরোপীয় অর্থেই ক্ষুরধার বুদ্ধি, ক্ষুরধার চিন্তা, মুক্ত বুদ্ধি,
যুক্তির পরাকাষ্ঠা, আধুনিকতার চূড়ান্ত, অসম্ভব অসাম্প্রদায়িক, দুরন্ত আন্তর্জাতিক,
মানবাধিকার ভাবনায় অগ্রগণ্য, আধুনিক প্রযুক্তিতে অসম্ভব দক্ষ। পশ্চমি গণতন্ত্র নিজের ওপর যতকিছু গুণ আরোপ করেছে, তার সবই একজন
ইওরোপিয়র(বর্তমানে সাদাচামড়াওয়ালা আমেরিকিয়রও) রয়েছে। আমেরিকা, ইওরোপের বাইরের জনসমাজগুলো সবাকটি মূঢ়, অজ্ঞ, অশিক্ষিত,
কুসংস্কারাচ্ছন্ন, এবং মূলস্রোতের বাইরে। এদের জন্য
পলিটিক্যালি কারেক্ট শব্দ ব্যবহার জরুরি। এদের জন্য অন্য
ধরনের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। তবে উচ্চমধ্যবিত্তের পাশে সরিয়ে রেখে।
মানবাধিকার আর অবাধ চিন্তা এই দুটি শব্দবন্ধ লক্ষ্য
করারমত। ইওরোপিয় শর্তে মানবাধিকার থাকবে
একমাত্র সাদাচামড়ার আর কলোনির দ্বিতীয় শ্রেণীর ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত শহুরে
মানুষদেরই। আর সকলেই উদ্বৃত্ত, অবাধ খুনের যোগ্য। কার মানবাধিকার, কারইবা অবাধ চিন্তা! বাঙলার চাষী, রায়ত, গ্রামীণ শিল্পী আর
গ্রামীণ কারখানার শ্রমিক-মালিক, ছোট ব্যবসায়ীদের মানবাধিকারও নেই, অবাধ আর মুক্ত
চিন্তাতো নেই। এরা সকলেই মূঢ়, অজ্ঞ ইত্যাদি
ইত্যাদি বাছা বাছা বিশেষণে ভূষিত। অথচ বাঙলার
গ্রামীণরা ইংরেজদের লুঠেরা অত্যাচারী শাসন থেকে স্বাধীণতা চাইছেন। আর কলকাতার ধাক্কাপাড় ধুতি পরা অথবা ইওরোপিয় সভ্যতার দস্তুরমত কোট প্যান্ট
অথবা খ্রিস্টান যাজকদের পরিধেয় অর্জন করা
নব্যভাগ্যবান বাঙালিরা ব্রিটিশদের শাসন প্রক্রিয়ায় আরও নিজেদের জড়িয়ে ধরতে চাইছেন। সাম্রাজ্যের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ভারতজুড়ে চাকরি, বুদ্ধিরজগতে একাধিপত্য তৈরি
করতে চাইছে। কী বিপুল বৈপরীত্যে বাঙলার সমাজ সেজে
উঠছে।
শিল্পবিপ্লবের কান্ডারীরা ইওরোপে মানুষ মেরে, চাষীদের
ওপর ৫০শতাংশের বেশি কর চাপিয়ে, পশুচারণভূমি দখল করে শিল্পের রথ চালিয়েছে। সাধারণ মানুষ উচ্চবিত্তের কলোনীতে বাস করেছে। কালো চামড়ার উপনিবেশের শ্রমিকরাতো ব্যবসার মুনাফার জন্য সরাসরি বধ্য। ডিরোজিওর মানস সন্তানেরা হয়ত বিশ্বাস করত তাঁরা উচ্চশ্রেণীর সভ্যতায় বাস
করছেন। গ্রামীণদের এই শাসনের বিরুদ্ধে
সংগ্রামের ন্যুনতম অধিকারটুকুও নেই। এরা অজ্ঞ,
মুর্খ। তাই প্রজাপালক ইংরেজদের বিরোধিতা করছে। প্রায় দুশতাব্দ পরে বসে মনে হয়, বাঙলার স্বাধীণতা সংগ্রামী প্রজাদের
ভাগ্যভাল তাদের স্বাধীণতা সংগ্রামে কলকাতার ছদ্ম-বিপ্লবী রিফর্মিস্টরা অংশ নেয় নি। শহরের মুখাপেক্ষী না হয়েই ইংরেজদের বাঙলা ধংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে স্বাধীণতার
জন্য উঠে দাঁড়িয়েছে নিজের পায়ে, নিজের বুদ্ধিতে। পথ খুঁজে নিয়েছে অত্যাচারের বিরুদ্ধে মাঠোময়দানে লড়তে লড়তে। হেরেছে। রাজ ইতিহাস এঁদের কথা মনে রাখে নি। কেননা এরা মানবাধিকারের
যোগ্য নয়। মানবাধিকার শুধু
কলকাতার ইংরেজি শিক্ষিত ভাগ্যবানদের জন্যই সংরক্ষিত।
No comments:
Post a Comment