শুধু আত্মীয় সভারই নয়, বহু সংগঠণ গড়ে উঠছিল কলকাতাজুড়ে। ১৮৩০এর এংলো হিন্দু এসোসিয়েশন (কালেজের ছাত্ররা), ডিবেটিং
ক্লাব(চোরবাগানের সাধারণদের নিয়ে), বঙ্গরঞ্জিনী সভা(ঈশ্বর গুপ্ত), ১৮৩৩এ
সর্বতত্বদীপিকা সভা(দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর), ১৮৩৬এ জ্ঞাণচন্দ্রোদয় সভা(ঠনঠনিয়ায়
সাধারণদের নিয়ে), ১৮৩৮এ সাধারণ জ্ঞানোপার্জিকা সভা(তারাচাঁদ চত্রবর্তী, রামতনু
লাহিড়ী, প্যারীচাঁদ মিত্র), ১৮৩৯এ তত্ববোধিনী সভা (দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর) গুরুত্বপূর্ণ
মানুষদের সমন্বয়ে গড়ে উঠছিল। ৬ অক্টোবর,
১৮৩৯এ তত্ববোধিনী সভার স্থাপন যখন হচ্ছে, তখন ইংরেজপন্থী আলালি বিদ্রোহীরা
কোম্পানি সরকারকে নিয়ে ধর্ম আর সমাজ সংস্কারে নেমেছে, হরিশ্চন্দ্রেরমত কয়েকজন নীল
সংগ্রাম বিষয়ে লেখা শুরু করছেন। বারাসাতে
তিতুমিরের ওয়াহাবি নেতৃত্ব ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে প্রাণপন লড়াই করছেন। ঢাকা-ফরিদপুরের ফরাজি স্বাধীণতা সংগ্রাম তুঙ্গে তুলে অবোধ, অজ্ঞাণ,
অশিক্ষিত জনগণ শরিয়তুল্লার নেতৃত্বে ইংরেজ রাজত্ব উচ্ছেদে ব্রতী হয়েছেন।
তো ধর্মসংস্কারে তত্ববোধিনী সভা গড়ে উঠল। বিদ্যাসাগর গবেষক বিনয় ঘোষমশাই বললেন, তত্ববোধিনী সভায় ঈশ্বরচন্দ্র
বিদ্যাসাগর অথবা অক্ষয় কুমার দত্তেরমত মানুষদের ভারতীয় শাস্ত্রীয়বাক্যের
অভ্রান্ততায় অবিশ্বাসীর স্থান হওয়া যুগান্তকারী ঘটনা। সত্যিই কী তাই! এঁরা ভারতীয় শাস্ত্রের অভ্রান্ততায় বিশ্বাসী কীনা সেটি বড়
কথা নয়, শর্ত হল, এঁদের নতুন যুগের ইওরোপিয় শাস্ত্রের অভ্রান্ততায় বিশ্বাসী হতে
হবে। তবেই তাঁরা নবযুগের কারিগররূপে ঐতিহাসিকদের নিরাপত্তা
পাবেন।
নবজাগরণের অগ্রদূতেরা সংস্কার চাইছেন! কী ধরণের সংস্কার
বুঝে নেওয়া যাক! ১৮৫৪র ১৫ ডিসেম্বর কাশীপুরে কিশোরীচাঁদ মিত্রের বাড়িতে বঙ্গের সামাজিক
উন্নতিবিধায়িনী সমিতি তৈরির জন্য সভা আয়োজন হয়। সভাপতি হন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। আহ্বায়ক
কিশোরীচাঁদ বক্তৃতার এক অংশে বললেন, ...আমাদিগের ব্যবহারিক ধর্ম্ম বহু দোষের
আকর। ইহা সকলপ্রকার উন্নতির বিঘ্নকারী। ইহা প্রতিনিয়ত আমাদিগের সকল সামাজিক অনুষ্ঠানের সহিত সংঘর্ষে আইসে। ইহা কেবল আমাদিগের আহার-নিদ্রার নিয়ম নির্দ্দিষ্ট করিয়া ক্ষান্ত নহে, এমন
কি, শৌচাদি বিষয়েও নিয়ম নির্দ্দিষ্ট করিয়াছে। ইহা যে কবল আমাদিগের যাতায়াতের সময় নির্দ্দিষ্ট করিয়াছে তাহা নহে, কবল
আমাদিগের যাত্রা নিরোধ করিতেছে, বত্সরের মধ্যে অর্ধেক সময় ইহা অমঙ্গলকর বলিয়া ঘোষণা করিতেছে এবং কালাপানি পার হইতে নিষেধ
করিতেছে, এমনও নহে, পরন্তু আমাদিগকে বসিয়া থাকিতে এবং বিশ্রাম করিতে উপদেশ দিতেছে। ... মনু যাজ্ঞবল্ক্য এবং অন্যান্য
স্মৃতিকারগণ আমাদিগের জীবনের নিত্যকর্ম্মগুলি ধর্ম্মের গাম্ভীর্য্য ও পবিত্রতার
সহিত সুচতুরভাবে সংশ্লিষ্ট করিয়া সর্ব্বপ্রকার সামাজিক উন্নতির পথ অতি অব্যর্থভাবে
রুদ্ধ করিয়া দিয়াছেন। ...রেমান
ক্যাথলিক ধর্ম্ম ইহার নানান গর্হিত নিয়ম এবং অনিষ্টকারীতা সত্বেও(আর্ণন্ড এবং
মেকলে উভয়েই তাহা দেখাইয়াছেন) যুরোপে অতি কল্যাণকর ফল প্রদান করিয়াছিল। ইহা জ্ঞাণচর্চ্চা বর্দ্ধিত করিয়াছিল, তাই নির্জ্জন প্রদেশে ধর্ম্মযাজকগণ
সাংসারিক কর্ম্ম হইতে মুক্ত হইয়া, বহির্জগতের মতামত এবং কুসংস্কারের প্রভাব হইতে
স্বতন্ত্র থাকিয়া জ্ঞাণচর্চ্চায় আপনাদিগকে উত্সৃষ্ট করিতে পারিতেন এবং সেই জ্ঞাণ
সাধারণ জনসংঘের মধ্যে বিস্তৃত করিতে পারিতেন। কিন্তু আমাদিগের জাতীয় কুসংস্কার সকল প্রকার সামাজিক সামাজিক সংস্কারে অতি
প্রবলভাবে বাধা প্রদান করে। সুতরাং একটি
বিনাশের সঙ্গে অপরটির উন্নতি অবিচ্ছেদ্যভাবে বিজড়িত। (মন্মথনাথ রায় - কর্ম্মবীর কিশোরীচাঁদ মিত্র)। ডাফেরমত বিদেশি পাদ্রিদের তত্বে প্রভাবিত হয়েছিলেন, শুধু কিশোরীচাঁদই নয়,
তত্কালীন আলালদের অধিকাংশই। তাই
কিশোরীচাঁদেরমত আলালেরা সামান্য ছুতোতেই হিন্দুধর্মের খুঁত খুঁজে খ্রিস্ট ধর্মকে
বেছে নিচ্ছেন। চাকরির ভয় নেই!
মদ্যপান করা সভ্যতার চিহ্ন, উহাতে দোষ
নাই
সারা গ্রামীণবাঙলা বিগত ৭০ বছর ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে গর্জে উঠছে। একের পর এক এলাকায় যথন স্বাধীণতা সংগ্রাম ছড়িয়ে চলেছে তখন হিন্দু কালেজের
ছাত্রদের সম্বন্ধে রাজনারায়ণ বসু লিখছেন, তখন
হিন্দু কলেজের ছাত্ররা মনে করতেন যে, মদ্যপান করা সভ্যতার চিহ্ন, উহাতে দোষ নাই। তখনকার কালেজের ছোকরারা মদ্যপায়ী ছিলেন, কিন্ত বেশ্যাসক্ত ছিলেন না। তাঁহাদিগের একপুরুষ পূর্বের যুবকেরা মদ্যপান করিত না – কিন্তু অত্যন্ত বেশ্যাসক্ত ছিল, গাঁজা, চরস খাইত, বুলবুলের লড়াই দেখিত,
বাজি রাখিয়া ঘুড়ি উড়াইত ও বাবরি রাখিয়া মস্ত পাড়ওয়ালা ঢাকাই ধুতি পরিত। কালেজের ছোকরারা এই সকল রীতি একেবারে পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। যে ছাত্রদের
কথা তিনি বলছেন তাঁরা আদতে হিন্দু কালেজের প্রথম দিককার। আচার্য কৃষ্ণকমল ১৮৪৮এ সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন। স্মৃতিকথায় তিনি বলছেন গণতান্ত্রিক ইংরেজদের রেসেরমাঠে ঢুকতে না পেরে শাসক
প্রভুদের দেখাদেখি বাঙালিরা তখন আলাদা একটি রেসেরমাঠ তৈরি করে। দৌড় হয় পোস্তার রাজা নরসিংহের বাগানে। ছিল স্টার্টার, জকি, বুকমেকার আর ছিল বেটিং। সতুবাবুর দৌহিত্র শরতবাবু, লাটুবাবুর পোষ্যপুত্র মন্মথবাবু, হাটখোলার
দত্তবাবুরা দৌড়ের জন্য ঘোড়া আনতেন। শরতবাবু নিজে
জকি হতেন। সতুবাবুর বাড়ির মাঠেহত বুলবুলির
লড়াই।
১৮৪২এ বিদ্যাদর্শন পত্রিকায় জনৈক বড়মানুষের কয়েক
দিনের রোজনামচা প্রকাশ হয়। উত্সাহীদের
জন্য সে বর্ণনা তুলেদেওয়াগেল। গত বৃহস্পতিবার – প্রাতঃকালে বেলা ৯ ঘন্টার সময়ে
নিদ্রাভঙ্গ হইল, ১০|| ঘন্টার সময়ে প্রাতঃক্রিয়া সম্পন্ন
করিয়া চা-পান করিলাম, পরে দুইচারিজন বন্ধু আসিলেন তাঁহার দিগের সহিত দুটি খোসগল্প
করিয়া স্নান করিলাম, স্নানকরিয়া আর কর্ম্ম কি, বেলা যথন ১১|| তখন ভোজন করা গেল, ভোজনান্তে যেমন অভ্যেস আছে, কিঞ্চিত্ কাল নিদ্রাগত
হইলাম, এবং বেলা যখন দুই প্রহর চারি ঘন্টা তখন শয্যা হইতে গাত্রত্থান পূর্ব্বক
দশজন বন্ধুর সহিত তাস খেলা এবং অন্যান্য প্রকার আমোদ করা গেল, তাহাতে বড়ই উল্লাস
হইয়াছিল, পরন্তু সন্ধ্যারপর রাত্রি দস ঘন্টাবধি গান বাদ্য করিয়া আহারান্তে
স্থানান্তর গমন করিলাম।
শুক্রবার – ৭ ঘন্টার সময় বাটী আসিয়া একবার নিদ্রা গেলাম, ১০টার সময় নিদ্রা ভঙ্গ হইলে,
সে দিন আর চা পান করিতে ইচ্ছা হইল না, স্নানভোজন করিতে দুই প্রহর আতীত হইল, পরে
নিদ্রাগিয়া বেলা যথন ৩টা তখন একবার নীলাম দেখিতে গমন করিলাম, আমার চেরেটের জন্য
একটা যুড়ি ক্রয় করিবার মানয় ছিল, কিন্তু মনোমত প্রাপ্ত হইলাম না, সুতরাং নীলাম
পরিত্যাগ পূর্ব্বক একবার সুপ্রীম কোর্ট এবং কার ঠাকুরের হৌস দেখিয়া বাটী আসিলাম,
বস্ত্র ত্যাগ করিয়া জলপান করিলে আমি, হরিবাবু, এবং শ্যামবাবু একত্র হইয়া বাগানে
গমন করিলাম, সেদিন আর বাটী আসা হইল না, রাত্রি ১০টার সময়ে বাগান হইতে স্থানান্তরে
গমন করিয়াছিলাম।
শনিবার – শুক্রবার কেনও বিষয় উপলক্ষ্যে অধিক রাত্রি জাগরণ প্রযুক্ত স্থানান্তরে
অধিক বেলা অবধি নিদ্রা যাইতেছিলাম, পরে দুই জন বন্ধু সেই স্থানে উপস্থিত হইয়া বেলা
১০টার সময়ে আমার নিদ্রা ভঙ্গ করিলেন, তাহাদিগের সহিত অনেক পরিহাস ও
কথেপকথনপূর্ব্বক স্থির হইল যে, খড়দহে রাসযাত্রা দেখিতে যাইব, অনন্তর বাটী আসিয়া
স্নান ভেজনান্তে খড়দহে যাত্রা করিলাম, দুইজন...লোকও সঙ্গে ছিল, তাহাতে যেরূপ
আমোদ হইয়াছে তাহা বর্ণনা করা যায় না।
রবিবার – অদ্য বেলা দুই প্রহরের সময় বাটী আসিয়াছি, আবার –বাবুর বাগানে নিমন্ত্রণ আছে, বৈকালে যাইব, সেখানেও অদ্য রাত্রিতে অত্যন্ত
আমোদ হইবে। কলিকাতা ৬ অগ্রহায়ন, রবিবার,
বড়মানুষ।
১৮৪৫এ তত্ববেধিনী পত্রিকা লিখছে, এই কলিকাতা নগরের প্রতি পল্লীতে এ প্রকার সমূহ ব্যক্তির অধিষ্ঠান আছে,
যাহারা ক্রমাগত দলবদ্ধ হইয়া বিবিধ কুকর্ম্মসূচক আমোদেই লিপ্ত থাকে। ...বিশেষতঃ
বালকেরা যখন শাসন কর্ত্তা পিতাভ্রাতা প্রভৃতিকে অহরহ দুষ্কর্ম পঙ্কে পতিত হইতে
দেখে, তখন আপনারা তত্পথ অবলম্বন করিতে কেন শঙ্কা করিবে! ইহা কি শতস্থানে
প্রত্যক্ষ্য হয় নাই, যে পিতার রক্ষিতাগণিকার গৃহে অতি বালক পুত্রাদি সম্বন্ধে
গমানাগমন করিতেছে! তথায় তাহারা পরিপাটীরূপে লম্পট ব্যবহার শিক্ষা করিয়া বয়স্ক হইলে
কন্টকস্বরূপ যে তাহাদিগের পরিবারের পীড়াদায়ক হইবেক তাহাতে সন্দেহ কি!
অধুনা
লম্পটবিদ্যা শিক্ষার পাঠশালা স্বরূপ কলিকাতা হইয়াছে। পল্লীগ্রামস্থ ভদ্র অথচ ধনহীন যুবারা অনেকে বিষয় কার্যের জন্য কলিকাতায়
আগমনপীর্ব্বক অনেক কৌশলে কোন এক বয়স্ক ধনির আশ্রয় গ্রহণ করে। তাহাদিগের ভাগ্য বশতঃ যদি সেই বাবু কুচরিত্র এবং লম্পট হয়েন, তবি বিদ্যা,
বুদ্ধি, যশ, বীর্য্য একেবারে তাহাদ্গের নষ্ট হয়। তাহারা সেই
বাবুর তুষ্টির জন্য তাঁহার প্রিয় কুকর্ম্ম সকলের উত্সাহ প্রদান করিতে থাকে, বরঞ্চ
তাহার সম্পাদনের জন্য উদ্যোগি এবম নিপুণ হয়, এবং যে সকল ঘৃণিত ও গর্হিত আমোদের
আস্বাদন পূর্ব্বে অজ্ঞাত ছিল, তাহাতেও ঐ বাবুর নিকটে সুন্দররূপে শিক্ষিত হয়।
১৮২৩এ ১৮ নভেনম্বর চিতপুর রোডে গৌরচরণ মল্লিকের পুত্র,
রূপলাল মল্লিকের নতুন বাড়ির উদ্বোধন উপলক্ষে এক উত্সবের বিবরণ দিচ্ছেন পাদ্রী
হেব্বার। তাঁর স্ত্রীর বর্ননায় পাওয়া যাচ্ছে
সেই উত্সবে নাচনেওয়ালিরা নির্মোক নৃত্য করছেন।
নন্দকুমারের খুনি ইম্পের দেওয়ান নকুধরের পুত্র সন্তান
জন্মালনা। দেশের মানুষ বলল পলাশির অভিশাপ। সুখময়ের দৌহিত্রকে তাঁর সাম্রাজ্যদাসত্বের জন্য যথাযোগ্য পুরস্কার দিল
ব্রিটিশেরা বেঙ্গল ব্যাঙ্কের দেওয়ান করে এবং মহারাজা উপাধি দিয়ে। তার দুই উত্তরাধিকারী বৈদ্যনাথ ও নৃসিংহচন্দ্র সেকালের কলিকাতায় বাবুগিরির
চুড়ান্ত করেন। সেকালের কলকাতা বৈদ্যনাথকে নাম
বদনচন্দ্র আর নৃসিংহচন্দ্রকে নরসিং নামে সম্বোধন করত। বৈদ্যনাথ ১৮ ডিসেম্বর, ১৮২৫এ রাজাবাহাদুর উপাধি পান। রায়বাহাদুর প্রমথনাথ মল্লিক, কলিকাতার কথায় বলছেন, লর্ড
আমহার্স্টের চিঠিপত্রে দেখাযায় সেকালে কোম্পানি সেনাপতিরা বদনচন্দ্রের বাগানে
ভোজাদি উত্সবে আপাযায়িত হইতেন। ১০ই জুন
ভরতপুর যুদ্ধ জয়লাভের পর সেনাপতি লর্ড কম্বরমিয়ারের অভ্যর্থনা ভোজ রাজা বৈদ্যনাথের
বাগানে হইয়াছিল। কাঁথির জগমোহন
দালালের বংশধর জগদিন্দ্র বানোয়ারিলাল বর্মা যুদ্ধে কোম্পানিকে এক লক্ষ টাকা
সাহায্য করে মহারাজা বাহাদুর উপাধি পেলেন।
শিখযুদ্ধের পর ইংরেজ শাসনে উত্সাহের বন্যা বয়ে যায়। শিখজাতির পরাভের বৃত্তান্ত ইংরাজ জাতির পরম গৌরবের বিষয়। উহাতে ভারত সাম্রাজ্যের রাজধানী কলিকাতায় আনন্দোত্সবে প্রতিধ্বনিত হয়,
সেইরূপে শতাধিক গুণে বিলাতে গভর্ণর জেলারেল ও প্রধান সেনাপতির জয় কীর্তন উপাধিলাভ
ও ধন্যবাদ ধ্বনিতে মুখর হইয়াছিল। কলিকাতায়
ঈশ্বরগুপ্ত কবিতায় লাট সাহবের সুখ্যাতি করেন। লাট হার্ডিঞ্জের গুণ গৌরব সেকালের শতাধিক বাঙ্গালা ছাত্ররা ইংরেজি ভাষা
শিক্ষার্থে বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করিয়া ঐরূপ গান গাইতে গাইতে বাড়ী যাইত। ...কলিকাতায় শিখ কামানগুলি প্রাপ্তির এক বিজয়োত্সব হয়। উহাতে কলিকাতার লাট সাহেবের বাড়ীর উত্সবের ছবিতে নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণের
নাম দেখিতে পাওয়া যায়- রাজা রাধাকান্ত দেব, কালাকৃষ্ণ দেব, প্রতাপচন্দ্র সিং,
প্রসন্নকুমার ঠাকুর, রাধামাধব বন্দ্যোপাধ্যায়, আশুতোষ দে, আগা কারবেলিয়া মহম্মদ,
রুস্তমজী কায়াসজী ইত্যাদি(রায়বাহাদুর প্রমথনাথ মল্লিক,
কলিকাতার কথা, ২৩৭)।
১৮৫৫তে বর্ধমানের মহারাজা মহাতাবচাঁদ সাঁওতাল বিদ্রোহে
কোম্পানির সাহায্য করে ব্যক্তিগতভাবে ১৩টি কামানদাগা সম্মান লাভ করেন। রাজেন্দ্রলাল মিত্র রাজা উপাধি লাভ করলেন, এবং এশিয়াটিক
সোসাইটির প্রথম ভারতীয় সভাপতি হলেন। দয়াল ক্যানিং কোম্পানি
উত্তর ভিক্টোরিয়া শাসিত ভারতে শাসন করতে এলেন। তিনটে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হল।
No comments:
Post a Comment