কিভাবে তিনি অর্থ অর্জন করে সেই জমিদারিগুলি নিলামে কিনছেন, সেই পদ্ধতি
নিয়েও সেসময়ের বাঙলা বাজারে বেশ কানাকানি ছিল, আজও রয়েছে। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির উদ্যত নিরাবয়ব ঘড়্গসম তর্জনীতেও দেখিয়েও সেই
ফিসফিসানি থামানো যায় নি। ক্ষিতীন্দ্রনাথের সাফাই ...নিমকি
বিভাগে কর্ম্ম করিবার প্রসঙ্গে অনেক লোকে তাঁহারও নামে জুয়াচুরী ও ঘুষের অপবাদ
দিয়া থাকে। আমরা যতদূর অনুসন্ধানে জানিয়াছি,
তাহাতে সাহস পূর্ব্বক বলিতে পারি যে তিনি একটি পয়সাও ঘুষ লয়েন নাই। অনেকগুলি ঘটনা তাঁর উপার্জ্জনের সহায়ক হইয়াছিল, প্রথমত তিনি নিজে পৈতৃক
জমিদারীর অধিকারী ছিলেন, তাহা হইতে বাত্সরিক আয় ন্যুন্যাধিক ষাট হাজার ছিল। সে সময়ে তাঁহার খরচ পরিবার হিসাবে ধরিলে বাত্সরিক দুই তিন হাজারের অধিক
হইবে না। আমরা তত্স্থানে দশহাজার টাকা ধরিলেও
বত্সর বত্সর প্রায় পঞ্চাশ হাজার করিয়া সঞ্চিত করিবার অবসর ছিল। আনুমানিক চতুর্দ্দশ বত্সরে তাঁহার পালক পিতার স্বার্গপ্রাপ্তি হয়। ১৮০৮ খ্রীষ্টাব্দ হইতে দেখি যে প্রতি দশ বত্সরে তাঁহার পাঁচলক্ষ করিয়া
টাকা জমিত। দ্বিতীয়ত, পূর্ব্বোল্লিখিতরূপে
সুবিধামত ক্রয় করিয়া ও অর্থ সঞ্চয়ের অন্যতম ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। আরও দুই একটি ধনাগমের বিশিষ্ট পন্থা সেকালে ছিল। তন্মধ্যে একটি এই যে, সেকালে কালেক্টরের দেওয়ানের কর্ম্মে অনেক আইনসঙ্গত উপরিলাভ
ছিল। উহাতে গবর্ণমেন্টের নিষেধ দূরে থাকুক
সম্পূর্ণ সম্মতি ছিল। তত্করে দশ
বত্সর দেওয়ানী কর্ম্ম করিয়া লক্ষ লক্ষ মুদ্রা সঞ্চয় করা কিছুই অসম্ভব ব্যাপার ছিল
না। অন্যান্য লোকে তাহার অর্দ্ধেক অথবা
চতুর্থাংশকাল কর্ম্ম করিয়া দশগুণ সম্পত্তি করা যাইত। ভক্তিভাজন রাজনারায়ণ বসু মহোদয় শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় মহাশয়কে
এক পত্রে লিখিয়াছেন – সেকালে
দেওয়ানদিগের যে যে বিষয়ে উপরি পাওনা ছিল, সেই সেই বিষয়ে নাজীরের মীরণের ন্যায়
পাওনার হার নির্ধারিত ছিল, এবং সেই হার গবর্ণমেন্ট জানিত ছিল, কিন্তুগবর্ণমেন্ট
এইরূপ উপার্জ্জনে আপত্তি করিত না।(নজরটান লেখকদের)
আইনসঙ্গত উপরির সোনার পাথরবাটি
ছেড়ে দ্বারকানাথ জমিদারি আর ব্যবসায় মন দিলেন। জমিদার দ্বারকানাথের আদর্শ ছিল মুনাফাকেন্দ্রিক ব্যবসা। তিনি সহৃদয় জমিদারের তকমা ঝেড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। তাঁর জমিদারি ব্যাবসার উদ্দেশ্য আরও অর্থ রোজগার, আরও বেশি মুনাফা। রায়তদের সঙ্গেও সংঘাতে যেতে পিছপা হতেন না। ১৮২৪ সালে বিরাহিমপুর জমিদারির ১১৬জন রায়ত ব্রিটিশ আদালতে অভিযোগ জানান, জমিদারের
খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের জন্য বর্ষায় তাদের বাড়ি-ঘরদোর জলে ডুবে গিয়েছে। জমিদার হলফনামায় জানালেন, বাঁধ দিলে ধানীজমি আর ৬০ থেকে ৭০টি বাড়ি ডুবে
যাবে। তাই ভেবেচিন্তে বাঁধ দেননি। কিন্তু মামলা গড়াল বাঁধ কমিটি পর্যন্ত। সরকার আর বাঁধ কমিটি তদন্ত করে রায়তদের পক্ষে রায় দেয়। এখানে মামলার শেষ নয়। আবারও অভিযোগ উঠল। ১৮৩৩এ ২৪ পরগণার পরগণা খাসপুরের কয়েকজন রায়ত মাথামোটা জমিদারের (স্টোন
হেডেড) বিরুদ্ধে সরাসরি গভর্নর বেন্টিঙ্কের দরবারে নালিশ করে। অভিযোগ জমিদার বে-আইনিভাবে তাদের খাজনা বাড়িয়ে দেন এবং আদালতে হেরে গিয়ে
গায়ের জোর ফলাচ্ছেন। গভর্নর জোনারেল বেন্টিঙ্কের দপ্তর
এবিষয়ে তাঁকে শুধরে নিতে বলে। বাড়তি খাজনা
শুধরে দিলেও কয়েকজন অভিযোগকারীকে কয়েদ করেন। রায়তেরা আবারও
আদালতে গেলে দ্বারকানাথ কোম্পানি সরকারে নল চালানো শুরু করেন। রায়তেরা সরকারের কাছে অভিয়োগ করে বলেন, জমিদার বড়লোক, তাই ইংরেজ
প্রশাসনের কালেক্টর, কমিশনার অথবা ম্যাজিস্ট্রেট তাদের আবেদন শুনছে না। সরকার রায়তদের আবার আদালতে যাওয়ার কথা ব’লে, দ্বারকানাথের কাজকর্মের আইনি
বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। অনেকটা সাপও মরল লাঠিও ভাঙলনা গোছের
তিরস্কার। সরকার এবং দ্বারকানাথ উভয়েই জানতেন
ব্রিটিশ আদালতে রায়তদের অভিযোগের কত দীর্ঘসূত্রিতা ঘটতে পারে। উত্তরাধিকারী ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বারকানাথ ঠাকুরের জীবনীতে
জমিদারি সম্বন্ধে কি বলছেন মেপেজুপে নেওয়া যাক-
..পৈতৃক বিষয় দুইটি মাত্র- এক কুষ্ঠিয়ার অন্তর্গত
বিরাহিমপুর পরগণা এবং দ্বিতীয়টি কটকের অন্তর্গত পাণ্ডুয়া ও বালিয়া দুইটি মহাল। যে সময় তিনি এই দুইটি পৈতৃক বিষয়গুলি স্বহস্তে দখল করেন সে সময় তাহাদের আয়
অতি সামান্য ছিল- সর্বশুদ্ধ প্রায় ত্রিশ সহস্র টাকা হইবে। ইহার উপর আবার
বিরাহিমপুরের প্রজাগণ বরাবর দুর্বৃত্ত বলিয়া প্রসিদ্ধ ছিল- সহজে খাজনা আদায় করিতে
চায় না। ইহার অধিবাসী অধিকাংশ নিম্নশ্রেণীর
মুসলমান। কথায় কথায় জোট বাঁধে এবং জমিদারকে
খাজনা হইতে বঞ্চিত করিবার চেষ্টা করে।
একবার বিরাহিমপুরের প্রজারা একজোট
হইয়া জমিদারের খাজনা আদায় করিতে অস্বীকার করিয়া তদানিন্তন ম্যাজিস্ট্রেটের
সরেজমিনে তদন্ত করিবার প্রার্থনার সহিত এক দরখাস্ত করিল। ম্যজিস্ট্রেট সাহেব সশরীরে আসিয়া একেবারে গ্রামের মধ্যস্তলে তাঁবু খাটাইয়া
প্রজাদিগকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। তাহারা তো একে
পায় তো আরে চায়। তাহারা তো একোবারে কাঁদিয়া পড়িয়া
জমিদারের নায়েব গোমস্তাদিগের অত্যাচারের কাহিনী সকল বর্ণনা করিয়া তাহার প্রতিকার
প্রার্থনা করিল। সাহেব মহোদয় উভয় পক্ষ না শুনিয়াই
প্রজাদের দুঃখে বিগলিত হৃদয় হইয়া পড়িলেন। এইখানে বলিয়া রাখা কর্তব্য যে জমিদার ও প্রজার মধ্যে কোনও বিবাদ উপস্থিত
হইলেই তদানীন্তন বিচারকগণের কথায় কথায় প্রজার পক্ষ, ন্যায় হউক বা অন্যায় হউক,
সমর্থন করিতেন- ইহা একটা ইংরাজ কর্মচারীদিগের মধ্যে প্রথা হইয়া দাঁড়াইয়াছিল। এখনও যে এই ফ্যাশান একেবারে উঠিয়া গিয়াছে তাহা বলিতে পারি না। ম্যাজিস্ট্রেট বাহাদুর প্রজাগণকে অভয়দান করিয়া তাহাদিগের অন্যায় কার্যে
উত্সাহ দিতে লাগিলেন।
ভারতবর্ষ সিপাহি বিদ্রোহের পর
প্রত্যক্ষ্যভাবে মহারাণীর অধীণে আসিবার পূর্বে অনেক ম্যাজিস্ট্রেটেরই খুঁজিলে
নানান দোষ পাওয়া যাইত। দ্বারকানাথ
ম্যাজিস্ট্রেটের পূর্ব্ব জীবন অনুসন্ধানপূর্ব্বক বাহির করিয়া দেখিলেন যে উনি
অনেকগুলি অন্যায় কর্ম্ম করিয়াছেন। এখন প্রস্তুত
হইয়া দ্বারকানাথ বিরাহিমপুরে গিয়া ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সাক্ষাত করিয়া উত্তমরূপে
বুঝাইয়া দিলেন যে কেবল খাজনা আদায় না করিবার জন্য এই একজোট হইয়াছে- ইহাতে যে কেবল
তাঁহার নিজের ক্ষতি হইতেছে তাহা নহে, ঐ অঞ্চলের শান্তিভঙ্গেরও সম্ভাবনা আছে এবং
ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট এই একজোট ভাঙিয়া দিবার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করিলেন।
ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যুত্তরে
দ্বারকানাথকে আমলাদিগেরহস্ত হইতে প্রজারক্ষণের কর্তব্য সম্বন্ধে দীর্ঘ বক্তৃতা
করিলেন। দ্বারকানাথ পুণরায় বুঝাইলেন যে
প্রজাদিগের নালিসের কোন ভিত্তি নাই এবং তাঁহাকে খাজনা আদায়ের অধিকার প্রত্যর্পণ
করিলে ন্যায়ের মর্য্যাদা রক্ষিত হইবে। ইহাতেও যখন সাহেব বাহাদুরের দুর্মতি অটুট থাকিল, তখন দ্বারকানাথ তাঁহাকে
ধীরে ধীরে তাঁহার পূর্ব্ব জীবনের কথাগুলি স্মরণ করাইয়া দিয়া পুলিশের জিস্ট্রিক্ট সুপরারিন্টেন্ডেন্টের
হস্তে সমর্পণ করিবার ভীতি প্রদর্শণ করাতেই সাহেব একেবারে নরম হইয়া গেলেন, জমিদারের
সহায়তা করিলেন, শান্তি পুণঃস্থাপিত হইল- বিরাহিমপুর পদাবনত হইল।(নজরটান লেখকদের)
এই বিরাহিমপুর অনেকদিন যাবত তাঁহাকে
কষ্ট দিয়াছে ও বিরক্তির কারণ হইয়াছে দেখিতে পাই। ১৮৩৬ খ্রীষ্টাব্দে দেখি রাইস সাহেব নামক এক ইংরাদ সওদাগরকে সাধারণভাবে এই
বিরাহিমপুরের ম্যানেজার স্বরূপ রাখিতে বাধ্য হইয়াছেন, বেধহয়, এই আশায় যে, সাহেব
দেখিয়া প্রজাগণ ভয়ে সায়েস্তা থাকিবে এই বত্সর এপ্রিল মাসে দেখি প্রজারা
পুণরায় এক জোট হইয়া যশোহরের ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ইস্তফা দিয়া আসিতে
লাগিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট সেইগুলি আবার তাহাদের
নালিসের কারণ অনুসনাধানের জন্য দ্বারকানাথ ঠাকুরকে পাঠাইয়া দিলেন। তিনি প্রজাদিগের বদমায়েসী সম্পূর্ণ বুঝিতে পারিয়াও রাইস্ সাহেবকে তন্ন
তন্ন করিয়া এই বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য পত্র লিখিলেন।
কেবল প্রজাদিগের দমনের জন্য তাহা নহে,
বোধ হয় পার্শ্বস্থ নীলকরদিগের সাহেবদিগের কবল হইতে জমিদারি ও নিজ প্রজাগণকে রক্ষা
করবার জন্যও সাহেব কর্মচারী রাখা আবশ্যক হইয়া উঠিয়াছিল। তাঁহার স্বেপার্জিত সাহাজাদপুর পরগণার প্রজাগণ যতদূর শুনা যায়, আবহমানকাল
অতীব নিরীহ, কিন্তু এই ১৮৩৬ সালে সেখানেও দেখি মিলার নামক এক সাহেবকে ম্যানেজীর
নিযুক্ত করিতেছেন। তাঁহাকে যে উপদেশপূর্ণ একটি পত্র
লিখিয়াছিলেন, তাহাতে নীলকুঠী নির্ম্মাণ করাইবারও উপদেশ আছে।
এই মিলার সাহেবের বেতন নির্দ্দিষ্ট
হইয়াছল মাসিক দেড়শত টাকা এবং নালকুঠীতে যত টাকার কাজ হইবে, তাহার দশকরা কমিশন।
বাজারছাড়া দেড়শ টাকা মাস মাইনেয় ম্যানেজার পুষছেন। মাইনেটা কত বেশি, এই হিসেবটা নেওয়া যাক। এর প্রায় ১৩০ বছর পর, ১৯৬৭তে এক লেখকের মাতাঠাকুরাণী বিদ্যালয়ে চাকুরিতে
মাইনে পাচ্ছেন ১৬৭ টাকা(১১০টাকা মূল মাইনে, মহার্ঘভাতা ৫৭ টাকা)। দ্বারকানাথ নিজের এস্টেটগুলোতে কর্মচারী, ব্রিটিশ ম্যানেজারদের বিপুল
মাইনে দিয়েও বেলগাছিয়ায় তুমুল বেলেল্লাপনা(১৮২০তে বেলগাছিয়া ভিলার দাম ৫ লক্ষ
টাকা, এছাড়াও ভিলা সাজানোর খরচ, নাচবালাদের নির্মেক নৃত্য, ব্রিটিশ উচ্চকোটির
জনগণ আর আমলাদের নিয়মিত অভ্যর্থনার খরচ) আর ব্যবসার জন্য অমিত অর্থ জমাতে
পেরেছিলেন। কত অর্থ ব্যয় করলে সাম্রাজ্যেরবন্ধু
সম্মানটি কিনে লন্ডনে প্রিন্সগিরির জন্য বিপুল অর্থ ধার করে উত্তরপুরুষের জন্য
বোঝা চাপিয়ে যাওয়া যায়! ধার শোধ করতে দেবেন্দ্রনাথকে প্রায় ঘটিবাটি বেচে সন্ন্যাস
নিতে হয়। এই অমিতব্যয়ী বিলাসের জন্য রায়তদের
ওপর কত অত্যাচার নামিয়ে এনে, কর আদায় করতে হয়েছিল জমিদার দ্বারকানাথকে তা আজ
অনুমান করাযায় মাত্র। জমিদার দ্বারকানাথের জমিদারির
মনোভাবের প্রতিফলন পাওয়া যাবে পরের ঘটনা থেকে। দুর্দশায় পড়া শিবচন্দ্র ভট্টাচার্যের উত্তরাধিকারীদের থেকে সাহাজাদপুরের
জমিদারি কেনেন, নিলামে। পুরোনো জমিদারের কয়েকজন উত্তরাধিকারী
মায়ের সঙ্গে জমিদারিতে ভাড়া থাকাতে চাইলে লেঠেল দিয়ে বার করে দেন। দ্বারকানাথ নীলকরদের জমি লিজে দিতেন বেশ দরকষাকষি করে।
রামমোহন আর তাঁর পৌত্তলিক শিষ্য দ্বারকানাথ ছিলেন
নিপীড়নমূলক নিমক মহলের দেওয়ান। জীবনীকারেরা
বলছেন তাঁদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল চাকুরিদাতা ব্রিটিশ এজেন্সির যতটা সম্ভব রোজগার
বাড়ানো। দ্বারকানাথ ২৮ বছর বয়সে ২৪ পরগণার
নিমক মহলের সেরেস্তাদারির চাকরি পেলেন। তার শংসাপত্রে
ট্রেভর প্লাউডেন লিখলেন, আ নেটিভ অব হাই
ক্যারেক্টার এন্ড রেসপেক্টেবিলিটি, হি হ্যাজ নট বিন বিফোর এমপ্লয়েড ইন দ্য সার্ভিস
অব গভর্নমেন্ট, বাট ইজ আ পারসন অব গুড এজুকেশন এন্ড কোয়ালিফিকেশন ফর সিচুয়েশন টু
হুইচ হি নমিনেটেড। তাঁর আগে এই পদে ছিলেন রামমোহনের আত্মীয় রামতনু রায়। সে সময়ের বড় সরকারি পদে বিদায়ী কর্মচারী নতুন কর্মচারীকে মনোনীত করে যেতেন। দ্বারকানাথ ছিলেন রামমোহনের সাক্ষাত শিষ্য। রামমোহন এই নিমক মহলে নিজের দবদবা অনেকদিন বজায় রেখেছিলেন, মনোনীত
প্রার্থী বসিয়ে। প্লাউডেন খুব খারাপ শংসাপত্র দেননি। দ্বারকানাথ কড়া জমিদাররূপে তাঁর সময়ে (কু)খ্যাত হয়ে উঠবেন। অন্ততঃ হরকরার রিপোর্ট আর জমিদারদের প্রতিনিধি কিশেরীচাঁদ মিত্ররস্মৃতি এই
তথ্য প্রমাণ করবে।
চাকরিতে বড় সাহেবদের কাছে যোগ্যতা প্রমাণ আর কোম্পানির
আমলা আর ব্যবসায়ী মহলে সফল যোগাযোগ বাড়ানো, এই দুটি তাঁর উন্নতির মূলমন্ত্র। ১২ বছর সেরেস্তাদারিতে মালঙ্গীদের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আর
অত্যাচার করে দ্বারকানাথ ব্রিটিশ এজেন্সির রোজগার বাড়াবেন প্রায় ৩০ শতাংশ। প্লাউডেন বলছেন, ১৫০ টাকা মাইনে ধর্তব্যের মধ্যেই আনতেন
না। প্রতি ১০০০মণ নুন
সংগ্রহের জন্য তিনি পেতেন আট টাকা কমিশন। ফলে তিনি আরও ৩৬০টাকা রোজগার করতে পারতেন। মালঙ্গীদের সঙ্গে লড়াই করে আরও বেশি নিজের রোজগার আর
কোম্পানির রোজগার বাড়িয়ে তিনি যা চাইছিলেন তাই ঘটল, প্লাউডেন আবারও তাঁর হয়ে কলম
ধরলেন ১৮২৮এর ২৪ সেপ্টেম্বর। কয়েকমাস পরেই ১ ডিসেম্বর, উন্নীত হলেন বোর্ড অব কাস্টমস,
সল্ট, ওপিয়াম দপ্তরের দেওয়ানরূপে। বোর্ড সদস্য হেনরি মেরিডিথ পার্কার তার পক্ষে লিখলেন, জয়েন্ড দিস অফিস এট মাই আর্জেন্ট রিকোয়েস্ট। আই হ্যড জাস্ট ডিসকভার্ড দ্য এক্সটেনসিভ এন্ড
ফ্রাউডুলেন্ট কম্বিনেশন হুইচ থ্রেটেন্ড সাচ সিরিয়াস ইনজুরি টু হ্য সল্ট রেভিনিউ – সারাউনডেড অন অল
রাউন্ড বাই ইন্ট্রগুজ মেশিনেশনস, উইথ স্কেয়ার্সলি এন ইন্ডিভিজুয়াল ইন দ্য অফিস নট
ইমপ্লিকেটেড ইন দ্য কন্সপিরেসি, আই রিসিভড দ্যাট এসিসটেন্স ফ্রম দ্য গ্রেট
ট্যালেন্টস, দ্য ইন্ডাসট্রি, এন্ড আই ডু লট হেজিচেচ টু সে, দ্য ইন্ট্রিগ্রিটি অব
দ্বারকানাথ টেগোর, উইদাউট হুইচ আই, শুড ইন অল প্রোবাবিলিটি হ্যভ স্ট্রাগলড ইন ভেন
এগেন্সট দ্য ডিফিকালটিজ ইনটু হুইচ দ্য ডিপার্টমেন্ট ওয়াজ প্লান্ডার্ড।
No comments:
Post a Comment