দুবছর আগে বছর Arupsankarদা লিখেছিলেন-
নিম্নবর্ণ শব্দটার মধ্যে নিম্ন কথাটা সম্মানসূচক নয়। নিম্ন যোজন করেছে ব্রাহ্মণ্যবাদ। চুরির সঙ্গে চামারি যুক্ত করেছে ওরাই। ছোটলোক শব্দটাও ভদ্রলোকদের সৃষ্টি। 'ভালো জামাকাপড় পরলেই ভদ্রলোক হওয়া যায়না' চলতি কথা। অনেকেই আমাদের 'ছোটলোক' শব্দটা 'ছোট' অর্থে ডেরোগেটরি ভাবছে।
আমাদের উত্তর ছিল-
অবশ্যই। কিন্তু নিম্ন কেন খারাপ কথা হবে? নিম্নবঙ্গ কি খুব খারাপ কথা? কিন্তু নিম্নবর্ণ সত্যিই খুব অসত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত। শিক্ষিত বিশেষ করে ইংরেজি পদ্ধতিতে পড়াশোনা করা শ্রেণী যখন নিজের আখের গুছোতে শ্রমজীবি মানুষকে নানান 'বর্গে' বর্গীভূত করে তখনই গোল বাধে।
উপসর্গে, অনুসর্গে লোক, শব্দ কিন্তু ভারতীয় জ্ঞানচর্চায় বহুকাল ধরে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। কখোনো খারাপ অর্থে নয়। কিন্তু পশ্চিমের দেখাদেখি যখন শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা ইওরোপিয় পাগান, ফোক অর্থে ভারতীয় লোক উপসর্গ ব্যবহার করতে শুরু করল, তখনই চিত্তির ঘটল - শহরে আখড়াই, হাফাখড়াই, কবি গান, গ্রামীন নাটক সব চলে গেল শহুরে সংস্কৃতির বাইরে - ছাপ পড়েগেল লোকসংস্কৃতিরূপে - উচ্চারিত হল লোকোসংস্কৃতি - সেটা শহুরে মানুষের চর্চার বিষয়।
'লোকোসংস্কৃতি' কালক্রমে হয়ে উঠল কিছু ব্যর্থ সাহিত্যিক অধ্যাপকের জীবন জীবিকা। শহরে সংস্কৃতিবানেরা নিজেদের পথ বেঁধে নিল ইওরোপ আর আজকের আমেরিকা্র তৈরি করা তাত্ত্বিকতা সঙ্গে। তাদের অনুবর্তী হতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। কলকাতা তিনশ বছরের বহু পুরোনো শহর হওয়া সত্ত্বেও ঔপনিবেশিক কলকাতার তিনশ বছর পালনের ধুম উছ্লে উঠল, লেবেদেফ হয়ে উঠলেন বাংলার নাটকের প্রথম পুরুষ - পিছনে চলে গেল বিপুল গ্রাম নাটকের বৈচিত্র।
লগে লগে এসে গেল ইংরেজি ভাষায় নিম্নবর্ণচর্চা - যে চর্চার সঙ্গে সাধারণ গ্রামীনের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। এই সমস্ত কর্মের হোতা হলেন ঔপনিবেশিক বামপন্থীরা।
নিম্নবর্গের নিম্নবর্ণের সঙ্গে নিম্নবর্গ বা নিম্নবর্ণের বিন্দুমাত্র সংযোগ নেই। এটা মনে রাখা দরকার।
No comments:
Post a Comment