টম পিরেজ আর বারবোসার লেখায় আমরা বাংলার সওদাগরি সমাজের কিছুটা বর্ণনা পাই। দেশিয় বণিকদের বলা হত merchants with great fortunes এবং বাণিজ্য জগতের খুব বড় অংশ তারা ছিল। তবে মনে হয় বৈদেশিক বাণিজ্যের একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করত ওপাশে থাকা বন্দরের বণিকেরা অথবা বাংলায় বসতি করা বৈদেশিক বণিকদের দল। মালাক্কার ব্যবসা তাই কেলিং ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করত। পাসাই এবং পিডি বন্দরের মরিচ ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হত চট্টগ্রামের পারসি বণিকদের দ্বারা। আমাদের ধারণা এই চট্টগ্রামের পারসি বণিকেরাই মধ্য ও পশ্চিম ভারতীয় মহাসাগরের বন্দরগুলি নিয়ন্ত্রণ করত, যদিও চাউল, ধাবোল আর গোয়ায় তুর্ক, আরব, আবিসেনিয় বণিকেরাও ব্যবসা করত(Sanjay Subrahtnanyam, 'Notes on the sixteenth century Bengal trade', The Indian Economic and Social History Review, vol. 24 (3), 1987, pp. 265-89)।
ছোটকরে বললে, ভারতের সমুদ্রগুলিতে ষোড়শ শতের প্রথম দিকে যখন ইওরোপিয় বাণিজ্য শুরু হল, ভারতীয় সমুদ্র মানচিত্র ভারত একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে। ভারতের পাশাপাশি তিনটে সমুদ্র পশ্চিম ভারত সাগর, বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরের মধ্যে প্রথম দুটিতে ভারতীয়দের প্রাধান্য প্রশ্নাতীত ছিল।
এশিয়ায় ভারতের মধ্যবর্তী অবস্থানের জন্য এই সুযোগ ভারত পেয়ে এসেছে। এই তত্ত্বটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য সে বিপুল সংখ্যক চরিত্রের পণ্য উৎপাদন করত, যা বাজারে ভাল দামেই বিক্রি হত – যার মধ্যে প্রধানতম ছিল মোটা সুতির কাপড় যা প্রতিযোগিতামূলক দামেই বিক্রি হত এশিয় বাজারে, ইওরোপেও। এই ছিল বাংলা তথা ভারতের ব্যবসার চরিত্র, যার সঙ্গে ইওরোপিয় বণিক এবং ইওরোপিয় সংঘের - প্রাথমিকভাবে পর্তুগিজেরা মানিয়ে নিতে অসুবিধে হয় নি।
No comments:
Post a Comment