বল পালাই কোথা
দেশে আর থাকা চলে না।
দুবছর আগের Arupsankarদার লেখা-
ভদ্রলোকদের জন্য দুঃসংবাদ। আজ কেন্দুলি মেলায় মমতা ঘোষণা করেছেন, এখন থেকে সমস্ত সরকারি বিজ্ঞাপনে কেবলমাত্র গেঁয়ো বাউল, কীর্তনিয়া, ফকির, পটুয়া, পট শিল্পী মার্কা লোকশিল্পীরাই শুধু চান্স পাবে।
আমার বুদ্ধিজীবী বন্ধু বললেন, দেখা যাক। ওই বিজ্ঞাপন কেউ দেখবেনা। শিগগীর ভদ্রলোক শিল্পীরা এর প্রতিবাদে অনশনে বসবে।
আমাদের উত্তর-
মৈত্রমশাই অসাধারণ একটা প্রকাশনা দিয়েছেন। এখনো এটি কেউ নিজেদের দেওয়ালে নেয় নি। আমরাই স্বেচ্ছাসেবা দিলাম। সঙ্গে আমাদের কিছু বক্তব্য পেশ করলাম -
আমরা যারা এই অভিকর শিল্পীদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত - আমাদের কিছু কথা বলা দরকার - আমাদের রাজনীতি শহরের টাকা গ্রামে যাওয়া আর গ্রামের টাকা গ্রামে রাখা - তাতে তো মধ্যবিত্তের সর্বনাশ। মৈত্রমশাইকে ধন্যবাদ যে তিনি বিষয়টাকে ধর্তব্যের মধ্যে এনেছেন। সরকারি কর্মচারীদের মাইনে না বাড়ানো খবর, কাগজের প্রথম পাতায় ঠাঁই হয়, কোটি কোটি তাঁতি, গায়ক, অভিনেতা, উতপাদকের উচ্ছেদ হয়ে শহরে বাসা বাঁধা খবরই হয় না - মন্ত্রীমশাই বলেন তাঁর কিছু করার নেই।
চাষার ছেলে চাষা হবে কিনা, মধ্যবিত্তের পড়াশোনা জানা সন্তানের চাকরির জন্য চাষীর জমি জোর করে কেড়ে নেওয়া যায় কিনা - সে সব প্রশ্নের উত্তর পশ্চিমবঙ্গবাসী বামপন্থীদের সাড়ে চারবছর আগেই দিয়ে দিয়েছে। তা নিয়ে নতুন করে বাক্য ব্যয় বৃথা। শুধু বলি মৈত্র মশাই যে মানুষদের জন্য কথা বলছেন, তাদের না খাইয়ে, মধ্যবিত্তের পোষণের জন্য লোকসংস্কৃতির জাদুঘরে রাখার ব্যবস্থা করেছিল বামফ্রন্ট।
আজ মমতা সরকার এসে ৪০,০০০(যথেষ্ট নয় আরও বেশ বাড়া দরকার - কিন্তু শুরুটা অসম্ভব ভাল) গায়ক, বাদক, অভিনেতাকে মাসে ১০০০টাকা দিচ্ছেন, এবং প্রত্যেক নাট গানের বাদকদের দল যাতে নিয়মিত সরকারি অনুষ্ঠান পায় তাঁর জন্য কড়া নির্দেশ জারি করেছেন। মানে প্রত্যেক মাসে শহর থেকে সরাসরি গ্রামে ৪ কোটি টাকা যাচ্ছে - সারা বছর কাজ পাচ্ছেন - এই টাকা এতদিন মধ্যবিত্তের খোরাকির/জলপানির জন্য বরাদ্দ থাকত। এখন এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে। তাতে ভদ্দরলোকেদের গায়ে জ্বালা ধরেছে। মমতা সরকার বিশ্ববাংলা নামে দোকান করেছেন - যে উতপাদন/শিল্পগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল, সেগুলো কিনে দোকানে বিক্রি করছেন। মধ্যবিত্তের গায়ে বিছুটি জ্বালা ধরছে। তার ওপর বিজ্ঞাপনে এই মানুষদের ছবি বেরুবে?
হায় রাম।
বল পালাই কোথা, দেশে আর থাকা চলে না।
No comments:
Post a Comment