এনকাউন্টারিং ডেভেলাপমেন্টঃ দ্য মেকিং এন্ড আন্মেকিং অব দ্য থার্ড ওয়ার্লডঃ আর্তুরো এসকোবারএর বই থেকে
এই বইটির প্রাথমিক উদ্দেশ্য দ্বিতীয়বিশ্বযুদ্ধত্তোর সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত উন্নয়নকে যেভাবে একটা জ্ঞানচর্চার অংশ করা হয়েছে, সেটিকে এবং এই কাজে তার ব্যবহৃত হাতিয়ার সমূহ নিয়ে বিশদে আলোচনা করা। দ্বিতোয় বিশ্বযুদ্ধত্তোর সময়ে অনুন্নয়ন কিভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করল সেটি নিয়েও আলোচনা করা দরকার। এবং এই বিশেষ ক্ষেত্রে জ্ঞান উতসারণ আর ক্ষমতা সংহত হওয়ার যেসব হাতিয়ারগুলি ব্যবহৃত হয়েছিল - যেমন গ্রামোন্নয়ন, সাস্টেনেবল ডেভেলাপমেন্ট এবং মহিলা এবং উন্নয়ন ইত্যাদি সেগুলি নিয়েও আলোচনা জরুরি। শেষমেশ উন্নয়ন-পরবর্তী সময়কে কিভাবে আমরা ভাবার চেষ্টা করব এবং আজকের তৃতীয় বিশ্বের সামাজিক আন্দোলনকে বুঝে, সেই উন্নয়ন ধারণার বিপরীতে প্রতিষেধক হিসেবে কোন তত্ত্ব আমরা উপস্থাপন করব।
অনেকেই বলতে পারেন এটা উন্নয়নবাদের প্রতর্ক। সইদের প্রাচ্যবাদের তাত্তিকতার উলটোপথে দাঁড়িয়ে আমি উন্নয়নবাদের জ্ঞানচর্চাকে প্রায়োগিক রূপে দেখার চেষ্টা করব। আমি দেখাবার চেষ্টা করব তৃতীয় বিশ্বজনিত তাত্ত্বিক জ্ঞানচর্চার ফলে একটি প্রয়োগবাদী নির্দিষ্ট কর্মপদ্ধতি উৎসারিত হয়েছে। যে উদাহরণ আমি দেওয়ার চেষ্টা করব সেটি হল সাত এবং আটের দশকের লাতিন আমেরিকার গ্রামোন্নয়ন, স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি প্রকল্পগুলির নানান দিক। হোমি ভাবা প্রাচ্যবাদ বিয়ে যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সেটা মাথায় রেখেই সঈদের ওয়েয়েন্টালিজমএর কয়েকটা তাত্ত্বিক অবস্থান থেকে আমি এক পা দূরে দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করব, তৃতীয় বিশ্বের তাত্ত্বিকতা সেই অঞ্চলের গ্রহীতাকে পুরোপুরি পেড়ে ফেলে না। এই সতর্কতা আমার মাথায় থাকবে এবং দেখব কিভাবে তৃতীয় বিশ্বের মানুষেরা এই তত্ত্বের সমান্তরাল উদ্যম ভাবতে এবং তৈরি করতে চেষ্টা করছেন।
আফ্রিকিয়বাদ বিষয়ে মুদাম্বের গবেষণার মত করে আমিও তৃতীয় বিশ্ব মানেই অনুন্নত, এই জ্ঞানচর্চা আর তার প্রতর্কের ভিত্তিটার ঘোটা উন্মোচব করতে চাই। উন্নয়ন শব্দটা কিভাবে জন্ম নিল তার মানচিত্রটা খোঁজা এখন জরুরি কাজ। নৃতত্ত্ব বা দর্শনের ওপর ভর না করে আমি চেষ্টা করছি উন্নয়নের যুগটাকে আমি আদুনিকতার সঙ্গে জুড়ে বুঝতে চাইছি, বিশেষ করে আধুনিক অর্থনীতি চর্চার ভিত্তিতে। এই দৃষ্টিভঙ্গীতে উন্নয়নকে দেখা যায় আধুনিকতার নৃতত্ত্ব রূপে। অর্থাৎ ঐতিহাসিক এবং কৃষ্টির ভিত্তিতে পশ্চিমি আধুনিকতার ওপর গবেষণা হলেই উন্নয়ন শব্দের শেকড় খুঁজে পাওয়া যাবে। যদি এটা সত্যি হয় তাহলে আধুনিক তন্ত্র (মডার্ন অর্ডার) এবং তার মানবিক বিজ্ঞানের কোন একটি নৃতাত্ত্বিক কাঠামো(এন্থ্রোপলজিক্যাল স্ট্রাকচার>ফুকো) থাকবে। এটিকে গবেষনার ক্ষেত্রে নিয়ে এসে বুঝতে হবে কিভাবে, আধুনিকতার বিশেষ অভিযোজন বলে এই কাঠামো উন্নয়ন প্রানলীর(রেজিম) বিকাশ ঘটাতে পারল। এই আধুনিকতার নৃতত্ত্বর দিকচিহ্ন ইতোমধ্যে আমাদের বুঝিয়েছে পশ্চিমের কৃষ্টিজ পণ্যগুলি অদ্ভুত(এক্সটিক)ঃ ...আমাদের পশ্চিমকে নৃতত্ত্বায়িত করতে হবে, দেখাতে হবে এর বস্তিবিক বিধান(কন্সটিটিশন অব রিয়ালিটি) কতই আলাদা অদ্ভুত(এক্সটিক); সেই কার্যক্ষেত্রগুলিকে(ডোমেইন)অবশ্যম্ভাবী পালনীয়(টেকন ফর গ্রান্টেড এজ ইউনিভার্সাল) হিসেবে ধরতে হবে(এর মধ্যে রয়েছে জ্ঞানচর্চা এবং অর্থনীতি); একে ঐতিহাসিকভাবে যতটা সম্ভব বিশেষ হিসেবে দেখাও; দেখাও তাদের দাবি কতটা সামাজিক প্রথার(সোসাল প্রাক্টিশ) সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, ফলে এটি সামাজিক বিশ্বের জন্য অত্যন্ত কার্যকর হবে(রাবিনাউ, ১৯৮৬)। আধুনিকতার নৃতত্ত্ব নির্ভর করবে সরাসরি জাতিতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গীতে যা জ্ঞান এবং ক্ষমতার ঐতিহাসিক উপজাত হিসেবে সামাজিক বিন্যাসগুলিকে দেখে। এটি(আধুনিকতার নৃতত্ত্ব) গবেষণা আমাদের সূচিত করে কিভাবে নানান প্রতীক এবং প্রথা সত্যতার দাবি ভিত্তি করে সামাজিক জীবনকে প্রভাব ফেলে।
উন্নয়নকে কাটাছেঁড়া
উন্নয়নের সমালোচনামূলক লেখাপত্তর শুরু হয়েছিল ১৯৮০র শেষের দিকে, চলেছিল ১৯৯০ পর্যন্ত, একই সঙ্গে সমান্তরাল মত তৈরির ভাবনারও কাজকর্মও চলছিল। কিন্তু উন্নয়নকে নিয়ে কাটাছেঁড়ার কাজ খুব বেশি ঘটে নি। জেমস ফারগুসনের লেসোথোর উন্নয়ন বিষয়ে বই(The Anti-Politics Machine. “Development” and Bureaucratic Power in Lesotho) আমাদের সামনে উন্নয়নের কাটাছেঁড়ার একটি বাস্তবধর্মী প্রতিবেদন পেশ করে। বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক অনুদানে যেসব গ্রামীন উন্নয়নের কাজ চলছে সেগুলি গভীরে গিয়ে আলোচনা করেন। প্রকল্পের মৌল উদ্দেশ্যগুলি পূরণ না হলেও, প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি, গ্রামীন সামাজিক সম্পর্ককে নতুন করে বিন্যাসের চেষ্টা করা, পশ্চিমি আধুনিকীকরণের বিপুল প্রভাব এবং সমস্যাগুলির বিরাজনীতিকরণ ছিল লেসোথোর গ্রাম উন্নয়নের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। ফারগুসন তার গবেষণার সূত্রে দাবি করেন এই ধরণের প্রকল্পগুলির প্রোডাক্টিভিটি/কার্যকারিতা আরও বাড়াতে হবে।
উন্নয়নের সমালোচনামূলক লেখাপত্তর শুরু হয়েছিল ১৯৮০র শেষের দিকে, চলেছিল ১৯৯০ পর্যন্ত, একই সঙ্গে সমান্তরাল মত তৈরির ভাবনারও কাজকর্মও চলছিল। কিন্তু উন্নয়নকে নিয়ে কাটাছেঁড়ার কাজ খুব বেশি ঘটে নি। জেমস ফারগুসনের লেসোথোর উন্নয়ন বিষয়ে বই(The Anti-Politics Machine. “Development” and Bureaucratic Power in Lesotho) আমাদের সামনে উন্নয়নের কাটাছেঁড়ার একটি বাস্তবধর্মী প্রতিবেদন পেশ করে। বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক অনুদানে যেসব গ্রামীন উন্নয়নের কাজ চলছে সেগুলি গভীরে গিয়ে আলোচনা করেন। প্রকল্পের মৌল উদ্দেশ্যগুলি পূরণ না হলেও, প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি, গ্রামীন সামাজিক সম্পর্ককে নতুন করে বিন্যাসের চেষ্টা করা, পশ্চিমি আধুনিকীকরণের বিপুল প্রভাব এবং সমস্যাগুলির বিরাজনীতিকরণ ছিল লেসোথোর গ্রাম উন্নয়নের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। ফারগুসন তার গবেষণার সূত্রে দাবি করেন এই ধরণের প্রকল্পগুলির প্রোডাক্টিভিটি/কার্যকারিতা আরও বাড়াতে হবে।
No comments:
Post a Comment