(এনকাউন্টারিং
ডেভেলাপমেন্টঃ দ্য মেকিং এন্ড আন্মেকিং অব দ্য থার্ড ওয়ার্লডঃ আর্তুরো এসকোবারএর
বই থেকে)
সাম্প্রতিককালে
ষাটের দশকের পর থেকে নতুন বিশ্লেষণের চর্চায় ভাটা এসেছে ঠিকই, কিন্তু তৃতীয়
বিশ্বের তাত্ত্বিকতা প্রয়োগে নিরন্তর থেকেছে ক্ষমতা। বিশেষ করে আশির দশকে ‘বাস্তবের
উপনিবেশে’ রূপান্তরের অনপনেয় ছাপ পড়ে বাস্তব কি এবং সেটি কিভাবে কল্পিত হয়, সেটি
অন্যভাবে চর্চিত হতে লাগল, বিশেষ করে ফুকো বর্তমান অবস্থাতেই নতুন পথ দেখালেন। ফুকোর
অন্তর্দৃষ্টি অবলম্বন করে ভ য় মুদিম্বে, এডোয়ার্ড সঈদ, চন্দ্র মোহান্তি এবং হোমি
ভাবা(যার লেখাপত্র, কর্মকাণ্ড নিয়ে আমাদের যথেষ্ট প্রশ্ন আছে) তৃতীয় বিশ্ব বিষয়ে
নতুন করে চিন্তাভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করলেন। আশির দশকে নৃতত্ত্বের ভিতর থেকে
আত্মসমালোচনা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
অতীতে যেমনভাবে
মার্ক্সীর বিশ্লেষণ সময়ের সমালোচক হিসেবে উঠে এসেছিল, উন্নয়নকে প্রকরণ (ডিসকোর্স)
বিশ্লেষণ হিসেবে গণ্য করে উন্নয়নের কর্মকাণ্ডের নানান বিষয়ের ব্যপ্তি বিষয়ে আলোচনা
হতে শুরু করল। ফুকোকে ধরে প্রকরণ বিশ্লেষণ সূত্রে বলতে পারলাম, ‘স্ট্যান্ড ডিটাচড
ফ্রম(দ্য ডেভেলাপমেন্ট ডিসকোর্স), ব্র্যাকেটিং ইটস ফ্যামিলিয়ারিটি, ইন অর্ডার টু
এনালাইজ দ্য থিওরেটিক্যাল এন্ড প্রাক্টিক্যাল কন্টেক্সট উইথ হুইচ ইট হ্যাজ বিন
এসোসিয়েটেড(ফুকো ১৯৮৩)’। উন্নয়নকে সর্বব্যপ্ত এবং একমাত্র কৃষ্টিশীল আলোচনা হিসেবে
গণ্য করাকে প্রশ্ন করা এবং নিজেদেরকে এই অবস্থা থেকে বিচ্যুত করে নতুনতর একটি
বিন্যাস(ফর্ম) তৈরির চেষ্টা চলল। আমার এই বই এই বিষয়টি আলোচনা করেছে বিশদে।
উন্নয়নকে ঐতিহাসিক
প্রকরণের চর্চা হিসেবে দেখেই আমরা প্রশ্ন তুলছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কেন
বহুদেশ নিজেদের অনুন্নত হিসেবে ভাবতে শুরু করল, কিভাবে তারা উন্নত হবে সেটাই তাদের
কাছে মৌলিক প্রশ্ন হয়ে উঠল, এবং শেষ পর্যন্ত ‘বিঅনুন্নয়ন’(আন-আন্ডারডেভলাপিং)
অর্থাৎ অনুন্নয়নকে উন্নয়নের পথে চালনা করতে, তারা তাদের সমাজকে প্রণালীবদ্ধ, বিশদ
এবং সুসংহত কিছু কর্মপ্রণালী তৈরি করল ইওরোপ আমেরিকার তত্ত্বে। আমেরিকার বিশেষজ্ঞ,
রাজনীতক এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার কিছু কিছু চরিত্রকে সমস্যা হিসেবে দেখা
শুরু করায় দারিদ্র আর অনুন্নয়ন বিতর্ক সম্বল করে ‘উন্নয়ন’ নামক নতুন জ্ঞানচর্চার
দ্বার উন্মুক্ত হল, এবং কিভাবে এই সমস্যাগুলির সমাধান করা যায়, সে বিষয়ে নতুন করে
রণনীতি আর রণসাজ তৈরির কাজ শুরু হয়। পশ্চিম ইওরোপ আর আমেরিকায় শুরু হয়ে তৃতীয় বিশ্বের
ধারনাটি বেশ কয়েক দশক ধরে নতুন শক্তি নিয়ে কাজ শুরু করল পশ্চিমি জ্ঞানচর্চায়।
সঈদ তাঁর প্রাচ্যবাদ
তত্ত্বের সমালোচনার সঙ্গে এই উন্নয়ন তত্ত্বের সমালোচনার একটা অসম্ভব মিল দেখতে
পাচ্ছি। সঈদ লিখছেন, প্রাচ্য, ...ক্যান বি ডিসকাসড এন্ড এনালাইজড আজ দ্য কর্পোরেট
ইন্সটিটিউশন উইথ দ্য ওরিয়েন্ট – ডিলিং উইথ ইট বাই মেকিং স্টেটমেন্টস এবাউট ইট,
অথরাইজিং ভিউজ অব ইট, ডেস্ক্রাইবিং ইট, বাই টিচিং ইট, সেটলিং ইট, রুলিং ওভার ইটঃ
ইন শর্ট, ওরিয়েন্টালিজম এজ আ ওয়েস্টার্ন স্টাইল ফর ডমিনেটিং, রিস্ট্রাকচারিং এন্ড
হ্যাভিং অথরিটি ওভার দ্য ওরিয়েন্ট ...মাই কনন্টেনশন ইজ দ্যাট উইদাউট একজামিনিং
ওরিয়েন্টালিজম এজ আ ডিসকোর্স, উই ক্যাননট পসিবলি আন্ডারস্ট্যান্ড এনোরোমাসলি
সিস্ট্যামেটিক ডিসিপ্লিন বাই হুচ ইওরোপিয়ান কালচার ওয়াজ এবল টু ম্যানেজ – এন্ড ইভন
প্রোডিউস – দ্য ওরিয়েন্ট পলিটিক্যালি, সোসিওলজিক্যালি, আইডিওলজিক্যালি,
সায়েন্টিফিক্যালি এন্ড ইমাজিনেটিভলি ডিউরিং দ্য পোস্ট-এনলাইটমেন্ট পিরিয়ড(১৯৭৩)।
তত্ত্ব হিসেবে
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রাচ্যবাদকে ভিত্তি করে তৃতীয়বিশ্ব বিষয়ে বহু নতুন ধরণের,
পথের গবেষণা এবং আত্মানুসন্ধানের পর্ব শুরু হল, যদিও সেই প্রতর্কে উন্নয়ন
আলাদাভাবে সবসময় মূল আলোচ্য হিসেবে উঠে আসে নি। তবুও এই কর্মকাণ্ডগুলো থেকে যে
প্রশ্নাবলী উঠে এল, সেগুলিকে ভিত্তি করে উন্নয়নের সাম্রাজ্যসুলভ তত্ত্বকে
বিশ্লেষণের ভিত্তি তৈরি করে দিল। আফ্রিকিয় দার্শনিক ভ য় মুদিম্বে দ্য ইনভেনশন অব
আফ্রিকায় তাঁর উদ্দেশ্য হিসেবে বললেন কিভাবে পশ্চিমি জ্ঞানচর্চায়, ‘...টু স্টাডি
দ্য থিম অব দ্য ফাউন্ডেশন্স অব ডিসকোর্স এবাউট আফ্রিকা ... (হাউ) আফ্রিকান
ওয়ার্লডস হ্যাভ বিন এস্টাবলিশড এজ রিয়ালিটিজ ফর নলেজ(১৯৮৮)’ উঠে এল। তিনি
আফ্রিকাবাদকে নিয়ে ইওরোপের যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানচর্চার স্বরূপ তৈরি হয়েছিল, তার
বাইরে বেরিয়ে এলেন। তিনি চেষ্টা করলেন বিশেষ করে ফুকো বা লেভিস্ত্রসের মত বিতর্কিত
ইওরোপিয় বুদ্ধিজীবিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিভাবে আফ্রিকিয় জ্ঞানচর্চকেরা আফ্রিকাবাদকে
অতিক্রম করে, সেই চর্চাকে নৃতত্ত্বে এবং দর্শনরূপে বিস্তারের দায় নিলেন।
যদিও মুদিম্বে
তাঁর আলোচনায় দেখিয়েছেন, বহু আফ্রিকাকেন্দ্রিক জ্ঞানচর্চায় ইওরোপমন্যতা
পূর্বাপরভাবে (কন্টেক্সট) এবং আরোপিতিতভাবে(রেফারেন্ট) উল্লিখিত হয়েছে, তবুও তিনি এ
বিষয়ে কিছু ইওরোপিয় সমালোচনাকে(ইনসাইট) বিস্তৃতকরে, তার আলোচনায় স্থান দিলেন এবং
এগিয়ে নিয়ে গেলেন। মুদাম্বে তার পরবর্তী আলোচনাগুলিতে বলছেন, যেভাবে আফ্রিকিয়তার (ঐতিহাসিক জ্ঞানচর্চা এবং ভৌগোলিকতা বিষয়ে) ইতিহাসের
বাইরে দাঁড়ালেই(এক্সটিরিওরিটি) আফ্রিকার ধারনাটি ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তিনি এইভাবেই এত
দিনকার আফ্রিকিয় নৃতত্ত্ব, ইতিহাস এবং তাত্ত্বিকতার বাইরে বেরিয়ে আসেন।
No comments:
Post a Comment