শোলার কাজ
কালিয়াগঞ্জের সুনীল মালাকার আর হরিরামপুর ব্লকের
মুস্কিপুরের মধুমঙ্গল মালাকার জেলার শোলার কাজের পতাকা উর্ধে তুলে ধরে রেখেছেন।
মধুমঙ্গল তার শোলার মুখোশ, বাঁশের ঘোড়া, আর শোলার মেল্লি, ফুলসহ নানান উপকরণ নিয়ে
অন্তত এগার বার বিদেশ গিয়েছেন। বিশ্বের ১১টি প্রখ্যাত জাদুঘরে তার কাজ রয়েছে। তার
শোলার মুখোশ বাংলায় খুব একটা প্রচলিত না হলেও বিদেশে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করছে। পুরুষানুক্রমে
মুখোশ তৈরি করে আসছেন চাকলা সংলগ্ন মুস্কিপুরের মালাকার পরিবার। বড় ছেলে মধুমঙ্গল
মোখা আর শোলার কাজ নিয়ে গিয়েছেন লন্ডন, সানফ্রান্সিসকো, ফিলাডেলফিয়া আর্ট মিউজিয়ামে।
শোলার ঘোড়া রয়েছে মাদ্রিদে। বার্সিলোনায় কালীমূর্তি। পূর্ণেন্দু পত্রী মুখোশ তৈরি
শেখেন মধুমঙ্গলের হাতে।
তিনি তৈরি করেন মুসলমান পরব আর সাঁওতালদের বিয়ের নাচের
ঘোড়া। সে এক অপুর্ব সৃজন। মনসা পুজোয় ব্যবহার হওয়া মেল্লি – তা দিয়ে একবার কলকাতার
পুজোয় মণ্ডপ তৈরি হয়েছিল। সুনীল মালাকার তৈরি করেন টোপর আর ডাকের সাজ। সত্তরোর্ধ
এই মানুষটি আজও অপরূপ দক্ষতায় তৈরি করেন দুর্গা প্রতিমার ডাকের সাজ।
জনরা
আজ আর পাওয়া যায় না দিনাজপুরের আদিবাসী গয়না
জনরা। শুধু কয়েকজন মানুষ আজ টিকে রয়েছেন। কিন্তু গ্রামে আর রূপোর গয়না পরার মানুষ
বোধহয় নেই। রায়গঞ্জে গেলে অবশ্যই খোঁজ করবেন।
তেলিগ্রামের মাদুর
গাজোল-বালুরঘাট রাস্তায় হরিরামপুরে নেমে পূর্ব
দিকে যেতে হয়। মাদুরটি বেশ উপাদেয়।
মালগাঁর কার্পেট
কুনরের পাশেই মালগাঁ। সেখানে উদ্যমী আবুতাহের
কয়েক বছর আগে শুরু করেছিলেন পাটের সঙ্গে পশম বা উল মিশিয়ে কার্পেট। এত সূক্ষ্ম বোনা
যে সেটিকে ব্যবহার করা যাবে সুজনি হিসেবে। কলকাতার হস্তশিল্প মেলায় আবুতাহেরের
মালগাঁর কার্পেট গরম চায়েরমত বিক্রি হয়। মনে আছে ২০১২য় দিনাজপুরের ফতেপুরের কাছে
চান্দোল হাটে সঙ্ঘ মেলা বসিয়েছেল সাত দিন। প্রথম সদস্য হয়ে এসেছিলেন আবু তাহের।
প্রথমেই যায়গা দেখে খুব আসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। শেষ দিন যখন তাঁর দোকান গোটানোর
পালা চলছে, তখন তাঁর মোট বিক্রি ১ লাখ চার হাজার টাকা – বললেন কলকাতার হস্তশিল্প
মেলাতেও সাত দিনে এত বিক্রি হয় না।
আজ আবু
তাহেরের উদ্যমে জুড়ে গিয়েছে গোটা গ্রাম। গ্রামের অর্থনীতি আবর্তিত হচ্ছে আবু তাহের
প্রতিষ্ঠিত কার্পেট শিল্পের উতপাদনে। এই কার্পেট এত্ত সুন্দর যে সে তার শিল্প শৈলী
নিয়ে পাল্লা দিতে পারে কাশ্মীরের আর বেনারসের গালিচার।
দিনাজপুরে গেলে নিশ্চয় ঘুরে আসবেন মালগাঁ।
No comments:
Post a Comment