জীবন্তীর পাটের পুতুল
বহরমপুর থেকে কাঁদির দিকে। এই গ্রামের রাশিনা বেওয়া,
গোলবানু বিবি পাটের পুতুল, খেজুরপাতার নানান সামগ্রী তৈরি করেন। অপূর্ব সুন্দর
দেখতে এই জিনিসগুলির বাজারের চাহিদা রয়েছে।
সারগাছি
বহরমপুর-কৃষ্ণনগর রেল রাস্তায় পড়ে। বাঁশের কাজ হয়।
মাঝখানে বেশ বাজার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি স্থানীয় এক গান্ধীবাদী সংগঠন এই
শিল্পকে তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান নিয়ে এসে।
মালদা
মালদহে গেলে অবশ্যই আমের সঙ্গে সঙ্গে চেখে দেখবেন দুই ডাকসাইটে মিষ্টি-কানসাট আর পোস্ত জড়ানো রসকদম্ব। তবে রসকদম্ব নামে মালদার বাইরে যে মিষ্টিটি পাওয়া যায়
তা খুব একটা স্বাদকর নয়। সদ্য তৈরি কানসাটের স্বাদ-ই আলাদা। পুরনো হলে এর আসল স্বাদ হারিয়ে যায়। এখানে হাতিপা লুচি পাওয়া যায়। সেটি খেতে
ভুলবেন না।
মালদার হস্তশিল্প বললেই দুটি জিনিস মনে পড়ে, প্রথমটি
বাঁশের সূক্ষ্ম কাজ আর ইংরেজ বাজারের গম্ভীরা মুখোশ, যদিও গম্ভীরার পোড়ামাটির
মুখোশ এখন প্রায় তৈরি হয় না বললেই চলে। বাংলায় নববর্ষের সময়, বিশেষ করে চৈত্র সংক্রান্তির গাজনের সময় এই
মুখোশ কিছুটা ওঠে, কিন্তু সারা বছর তার আর দেখা পাওয়া ভার।
তবে মালদাকে চেনা যায় বাঁশের কাজের সূক্ষ্মতায়। গাজোলসহ বেশ কিছু এলাকায় মূলত সাঁওতাল স্থানীয় ভাষায় মাহালিরাই বাঁশের
সুক্ষ্ম কাজগুলি করে থাকেন। এছাড়াও অন্যান্য বর্ণ হিন্দুরাও
এই কাজ করে থাকেন, তবে বাঁশের কাজে তাঁরা অবশ্যই এই মাহালিদের কাজ ব্যবহার করেন।
বাংলায় পরম্পরা ভিত্তিক তিন ধরণের বাঁশের কাজ হয় তিন
এলাকায়। একটি দিনাজপুরে। এর বিশদ আগে আলোচনা হয়েছে। মূলত তক্ষণ শিল্প ভিত্তিক –
এলাকার বাঁশ ছাড়াও তাঁরা ব্যবহার করেন জলপাইগুড়ির বাঁশ। মূলত রাজবংশী সম্প্রদায় এই কাজ করে থাকেন। দ্বিতীয়টি কোচবিহার এবং কোচবিহার
সংলগ্ন জলপাইগুড়ি জেলায়। মূলতঃ বাঁশের নানান ঘর সাজানো নানান জিনিস। কিছুটা অসমের বাঁশের শিল্পকর্মের
প্রভাব রয়েছে এই এলাকার বাঁশের কাজে কেননা অসমগুরু শংকরদেব প্রায় পাঁচশ বছর আগে
অসম ছেড়ে কোচবিহারে বসবাস করার জন্য আসেন। এখনও কোচবিহারের লংকাবরে অসমিয়া
গামোছা তৈরি হয়।
আর আমাদের আলোচ্য বাঁশের কাজ হয় গাজোল এলাকার মজলিসবাগ
গ্রামে। আদিনা মসজিদের উল্টো দিকের রাস্তায় যুবক শ্রীনাথ টুডু
আর প্রৌঢ় বিধান টুডু গ্রামে বেশ দারুন কাজ করছে। তাদের বাড়ির পাশেই আদিনা
অভয়ারণ্য। থাকা যায়।
গাজোলে রবিদাসেরা এই বাঁশের কাজ করেন। সেখানে সুরেশ
রবিদাস বেশ ভাল বাঁশের গয়না সহ নানান সূক্ষ্ম কাজ করেন।
No comments:
Post a Comment