অধ্যায় ৪
উনবিংশ শতকে, বস্তুকে হস্তশিল্প, পুরাকীর্তি আর শিল্পে
রূপান্তর
সপ্তদশ শতকের প্রথমপাদে ভারতের সঙ্গে প্রথম ব্যবসা সম্পর্ক
স্থাপন হওয়ার পর থেকেই ভারতকে পণ্যের উৎস দেশ হিসেবে দেখতে থাকে ইওরোপ, যে পণ্য
ইওরোপে আমদানি করে বিক্রির উদ্বৃত্তে সে তার অংশিদারের বিনিয়োগের লভ্যাংশ আর
কর্মচারীর মাইনে মেটাবে। ব্রিটেন আর পশ্চিম ইওরোপের অভিজাতদের কাছে ভারত শুধুই একটি
বস্ত্র উতপাদনের দেশ। ভারতীয় বস্ত্রের প্রাবল্যে ইওরোপে যে পরিবর্তন এল তাতে
চন্দ্রা মুখার্জী From Graven Images বইতে বলছেন, ভারতীয় কাপড়ের গুণমানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে
না পেরে উদ্যোগীরা ভারতীয় তাঁতির সমকক্ষ হয়ে ওঠার তাগিদে অষ্টাদশ শতকে ব্রিটিশ
শ্রমকে কাজে লাগানো আর প্রযুক্তিগত যে উদ্ভাবনী ক্ষমতার প্রদর্শন করল, সেই
উদ্যমকেই তিনি মডার্ন মেটিরিয়ালিজম এবং শিল্প পুঁজির জন্মের জন্যে দায়ি করছেন। এংলো-আমেরিকান
সংস্কৃতিতে ভারতীয় কাপড় কি পরিমান ছাপ ফেলেছে, তার একটা সুমারি করা যেতে পারে
ভাষায় কতগুলো ভারতীয় শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটেছে সেই অঙ্ক থেকে। ভারতীয় উপযোগী
পণ্যগুলি ছাড়াও ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতকে দুর্লভ(কিউরিও) শিল্পবস্তু বা প্রেসিওসাইটিস
আজকে যা কালেক্টেবলস নামে পরিচিত - সেই বস্তুগুলি চিহ্নিত হতে থাকে। এগুলির মধ্যে
ছিল পুরোনো তিব্বতি-ভারতীয়দের আঁকা ছবি, হাতির দাঁতের তৈজস এবং সিন্দুক, গয়না এবং
দামি পাথর, ঘরসাজানো উপকরণ হিসেবে তরোয়াল এবং যুদ্ধাস্ত্র ইত্যাদি।
ভারত ‘জানা’র ইওরোপিয় ব্যাখ্যাপূর্ণ রণনীতি ১৬০০-১৭৫০
সপ্তদশ আর অষ্টদশ শতক জুড়ে ইওরোপ ভারতকে ব্যাখ্যা করার
রণনীতি তৈরি করল ভারতের ইতিহাস লেখার সূচনা করে। ভারতকে ইওরোপিয়রা শুধু উদ্ভট, অবাস্তব
হিসেবে গণ্য করল তাই নয়, এটা যেন ইওরোপিয় অতীতের একাংশ হিসেবে গণ্য হল। যে বইতে
ইহুদি এবং অন্যান্য পুরোনো জাতির কথা আছে, সেই বাইবেলে উল্লিখিত সব কটি চরিত্র
ভারতে খুঁজে পাওয়া গেল। নোয়ার দৃষ্টিভঙ্গীতে আদম আর ঈভ যখন ঈডেনে বাস করছিল তখনই
নাকি জেন্টুদের ধর্ম তৈরি হয়েছে; অথবা যারা মোজেসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, অথবা
মোলটেন কাফের উপাসনার সময়েও ভারতের ধর্মের সূচনাবিন্দু। ব্রাহ্মণেরা হয় লেভন্ট না
হয় নাজারেথের মানুষ, জৈনরা রিহ্যাবার। ইওরোপিয়দের ধারনা হল ইওরোপের হারিয়ে যাওয়া
দশটা জাতির একটা ভারতীয়। কারোর ধারণা হল ভারতীয়রা প্রাচীন মিশরীয়দের প্রথা অনুসরণ
করে, এবং এরা নোয়ার পুত্র হ্যামের উত্তরপুরুষ।
বাইবেল আর মধ্যযুগীয়
প্যারাসাইটিক সাহিত্য ইওরপিয় ভ্রমণকারীদের জন্যে আরেক ধরণের কৃষ্টিগত এবং ধার্মিক
উপস্থাপনা তৈরি করল, ভারত পরম্পরাগতভাবে ইওরোপিয় খ্রিষ্ট বিরোধী শয়তান আর তার অনুচরচের
শত্রু দেশ। প্রথম দিকে যে সব ব্রিটিশ ভারতে ঘুরতে এসেছিল, তাদের লেখায় পাচ্ছি, বাট
এবাভ অল, দেয়ার হরিড আইডলট্রি টু ফ্যাগডস(অর ইমেজেস অব ডিফর্মড ডেভিলস) ইজ মোস্ট
অবজারভেবল; প্লেসড ইন চ্যাপেলস মোস্ট কমনলি বিল্ট আন্ডার দ্য বানিয়ান ট্রিজ। আ
ট্রি অব সাচ রেপুট আমঙ্গস্ট দেম দ্যাট দে হোল্ড ইট ইম্পিটি টু এবিউজ ইট, আয়দার ইন
ব্রেকিং আ ব্রাঞ্চ অর আদারওয়াইজ, বাট কন্ট্রারিলি এডোর্ন ইট উইথ স্ট্রিমার্স অব
সিল্ক এন্ড রিবনস অব অল কালার্স। দ্য প্যাগোডাজ আর অব সান্ড্রি সর্টস এন্ড
রিজেমব্যালেন্স, ইন সাচ শেপ এজ সাটান
ভিজিবিলি এপিয়ার্স আন্টু দেমঃ আগলি ফেসড, লং ব্ল্যাক হেয়ার, গুগুলড আইজ,
ওয়াইড মাউথ, আ ফর্কড বিয়ার্ড, হরনস এন্ড স্ট্রাডলিঙ্গ, মিশ্যাপন এন্ড হরিবল, আফটার
দ্য ওল্ড ফিলদি ফর্ম অব প্যান প্রিয়াপাস।
No comments:
Post a Comment