হরপ্রসাদ বলছেন জ্ঞান(যেখান থেকে জ্ঞানক>নানক শব্দটা এসেছে - সুহৃদ ভৌমিক বলছেন বাঙালির মত অনুনাসিক শব্দ অনেকেই উচ্চারন করতে পারত না - কিছুটা অস্ট্রেলিয় আদিবাসী যারা এদেশ থেকে গিয়েছে তারা পারে - তিনি বলছেন দেখা গিয়েছে বাঙালিদের মধ্যে নাকের ভেতরে একটা বড় খোঁদল আছে - তাই) শব্দটা থেকেই নাড় শব্দটা এসেছিল। নাড়পাদ আর তাঁর স্ত্রী নাড়ী ছিলেন তখনকার এক ধরণের জ্ঞান চর্চার অন্যতম ধারক বাহক। যে জন্য বলভদ্র একদিনে বৈষ্ণব করেন প্রচুর নেড়ানেড়ীকে।
নেড়ানেড়ী-রা বহুকাল ধরে থেকে যান অকেন্দ্রিভূত জ্ঞানচর্চার ধারক বাহক - যেমন করে ডাক আর ডাকিনী - গ্রাম বাংলায় আজও ডাকের বহু দৈনন্দিনের নানান বিষয় নিয়ে ছড়া রয়েছে - ডাকিনী আদিবাসি সমাজের সঙ্গে জড়িত। পলাশীর পর ভদ্রলোকেদের ক্ষমতায়ন হওয়ায় ডাকিনীদেরকে সমাজচ্যুত করেন এবং ছোটলোকেদের প্রভাবিত করে তাঁদের হত্যা করতে প্ররোচিত করেন(ডাকের বচন অতটা প্রখ্যাত হয় নি বলে তার ভাষার প্রাচীনতা অনেকাংশেই রক্ষা পেয়েছে। বাংলাবাদী দীনেশচন্দ্র সেন বঙ্গভাষা ও সাহিত্যে অবশ্য ডাক'কে বঙ্গের সক্রেতীস্ বলেছেন। চাকমারা একে দাগর কথা বলেন)।
অতীশ দীপঙ্কর যখন তিব্বতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তখন একটা বৌদ্ধ সঙ্গীতি হয়। সেই সঙ্গীতিতে নাঢপাদ অতীশকে তিব্বতে যেতে বারণ করেন - বলেন তিনি গেলে ভারত অন্ধকার হয়ে যাবে - জ্ঞান নষ্ট হয়ে যাবে, কিন্তু তিনি তার গুরুর কথা না শুনেই তিব্বতে যান।
বৌদ্ধ মঠ সরাসরি রাজপোষিত। কেন্দ্রিয় জ্ঞানচর্চার নিজস্ব একটা ভালনারেবিলিটি আছে - যা অকেন্দ্রিয় স্থানিক জ্ঞানচর্চায় থাকে না। হরপ্রদাস স্টেটিস্ট ছিলেন। মনে করতেন কেন্দ্রিভূত রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট জ্ঞানচর্চা নষ্ট হলে দেশের জ্ঞানচর্চা ধ্বংস হবে - তা হয় নি - এবং এই ধারণা নিয়েই ওরিয়েন্টালিস্টদের উত্থান - ব্রিটিশ শাসনের প্রতি সমর্থন - কেননা ব্রিটিশেরা নাকি নষ্ট হয়ে যাওয়া জ্ঞানচর্চা ফিরিয়ে আনছে।
অথচ ১৮৩৪এ চার্লস উইশ অন্ধ্রর একটি গ্রামে কলন বিদ্যা পড়ানোর উদাহরণ দেন। কিন্তু আমরা হরপ্রসাদকে ছাড় দিই কেন না তিনি চরম হিন্দুত্ববাদের যুগে বৌদ্ধ বাই ফিরিয়ে এনেছিলেন। এটা হিন্দু মেলা বা স্বদেশির সময়ের ঔপনিবেশিক হিন্দুত্বকে মোকাবিলা করতে সহায়তা করেছিল।
No comments:
Post a Comment