মূলধারা বাংলাদেশএর লেখা--
চেকপ্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুবোমীর জাওরালেক বোমা ফাঁটিয়েছেন।যে সত্য পশ্চিমে সাধারণত কেউ উচ্চারণ করতে চায়না। তিনি ইউরোপের ভবিষ্যত শীর্ষক এক সম্মেলনে নিন্মোক্ত বক্তব্য দেন। সারসংক্ষেপটা উল্লেখ করা হল;
১। ইউরোপিয়ান দেশগুলো কর্তৃক উপনিবেশ কালে মুসলিম বিশ্বে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল, সেই বিষয়ে গণসচেতনতা (An awakening) তৈরি হচ্ছে। এ থেকে সমসাময়িক উগ্রপন্থার জন্ম হচ্ছে।
২। বৃটেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, আমেরিকা, রাশিয়ান সাম্রাজ্য এবং এর পরবর্তী সোভিয়েত সরকার লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
৩। গ্লোবালাইজেশানের কারণে সৃষ্ট অসমতার কারণে ভিতর থেকে এক বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। নতুন শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে উপনিবেশিক অতীত সম্পর্কে ধীরে ধীরে ক্ষোভ বাড়ছে।
৪। আমরা এক ধরণের পূনর্জাগরণের মোকাবেলা করছি। আমাদের উচিৎ পশ্চিমা বিশ্বের বাহিরে এবং সেসব দেশের জাগ্রত রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর দিকে নজর দেয়া।
৫। দীর্ঘদিন যাবত ধামাচাপা দিয়ে রাখা রাজনৈতিক স্মৃতি হঠাৎ করে জেগে উঠছে। মধ্যপ্রাচ্যে উগ্র ইসলামিষ্টরা এতে শক্তি যোগাচ্ছে। (“Long-suppressed political memories are fuelling a large sudden and explosive awakening energised by Islamist extremists in the Middle East.” )
৬। আমাদের মধ্যে আমাদের ইতিহাসের অনেক কিছু ভুলে যাবার একটা মারাত্মক প্রবণতা আছে।
৭। ভারতে ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ দমনের ধারাবাহিকতায় বৃটিশদেরকে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ খুনের জন্য সন্দেহ করা হয়। বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
৮। কঙ্গোতে, ১০ বা ১৫ মিলিয়ন মানুষ খুন হয়ে ১৯ শতকের শেষ থেকে ২০ শতকের শুরু পর্যন্ত।
৯। ভিয়েতনামে সাম্প্রতিক হিসেব মতে ১ থেকে ৩ মিলিয়ন মানুষ খুন হয় ১৯৫২ থেকে ১৯৭৫ সনের মধ্যে
১০। মুসলিম বিশ্বে, রাশিয়ান ককেসাসে ১৮৬৪-৬৭ সনে ৯০% স্থানীয় লোকজনকে জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হয় এবং ৩০০,০০০ থেকে ১৫ লক্ষ মানুষকে হয় খাদ্য সংকটে মরতে হয় না হয় খুন করা হয়।
১১। ইন্দোনেশিয়ায় ১৯ শতকে নেদারল্যান্ড উপনিবেশিক শক্তি ৩০০,০০০ মানুষকে খুন করে।
১২। ১৯৫০ এর দশকে ফ্রান্স আলজেরিয়াতে ১৫ লক্ষ মানুষকে হত্যা করে, যা ছিল মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।
১৩। লিবিয়াতে ইটালিয়ান বন্দী কারখানার কারণে ১৯২৭ থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ মারা যায়।
১৪। সোভিয়েত দখলদারিত্বের সময়ে আফগানিস্তানে ১০ লক্ষ মানুষ মারা যায়।
১৫। ইরাকী গৃহযুদ্ধের সময় গত ১৩ বছরে আমেরিকা ও তাঁর মিত্রশক্তির হাতে ১৬০,০০০ সাধারণ মানুষ খুন হয়।
লুবোমীর জাওরালেক আরো বলেন; “just as shocking as the scale of these atrocities is how quickly the west forgets about them”, adding it was necessary to recall these figures “when the west wants to speak about radicalisation and how is it possible we are facing so much hatred and violence”.
এই ধরণের হত্যাকান্ডের মতই ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব খুব দ্রুত এসব ভুলে যায়। এসব পরিসংখ্যান সামনে আনা দরকার যখন পশ্চিমা বিশ্ব উগ্রবাদ নিয়ে কথা বলতে চায়। এটা কিভাবে সম্ভব যে আমরা এত ঘৃণা ও সন্ত্রাসের মুখোমুখি।
[সোর্সঃ The Guardian, Growing awareness of colonial past fuels radicalisation, says Czech minister, 15 June 2017, UK, https://www.theguardian.com/…/growing-awareness-of-colonial…]
No comments:
Post a Comment