Friday, June 2, 2017

বন্ধু Dinēśa-Ratna Prabhākaraএর ভাষা বিষয়ে কিছু প্রশ্ন - আমাদের উত্তর

দীনেশ রত্ন প্রশ্ন করেছিলেন
আদিবাসী ও জনজাতির ভাষা ও কৃষ্টির সংরক্ষণে কীভাবে কাজ হতে পারে? মিশনারি আর এনজিও গুলো তো সব কর্পোরেট এজেন্ট, উন্নয়ন এর নামে বহুজাতিক কম্পানিগুলোর পণ্যের দালালি করছে পরোক্ষভাবে, পরোক্ষই বা বলি কীভাবে, কিছু ক্ষেত্রে তো দিব্যি প্রকাশ্যে কর্পোরেট পণ্যের বিজ্ঞাপন চালিয়ে যাচ্ছে। 

দ্বিতীয়ত প্রমিত ভাষার নাম করে আঞ্চলিকতাকে একরকম উপড়ে ফেলার প্রচেষ্টা চলছে। ভাষা এবং উপভাষার (?) সংজ্ঞার্থ নির্ধারণ করে দেবে কে? কেন্দ্র না রাজ্যসরকার? 

আদৌ উপভাষা বলে কিছু কী আছে? নাকি Dialect (বোলি) কে উপভাষা/আঞ্চলিক ভাষা বলে তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে। 

প্রকৃতপক্ষে বোলই জনজীবন এ জীবন্ত ও মূর্ত ভাষা, এটাই চলতি। অথচ, এক বা একাধিক ভাষাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীভূত পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। এর বিকেন্দ্রীকরণ আবশ্যক কী না? তা না হলে আঞ্চলিক ভাষাগুলো তো মারাই পড়বে!

অবধীর কথাই ধরি, সাহিত্যের মাধ্যম হিসেবে খাড়ি বোলির থেকে বহু অগ্রজ হয়েও আজ কেবলমাত্র কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থার প্যাঁচে পড়ে মৃতপ্রায়। একই কথা প্রযোজ্য মাগহী, মৈথিলী ইত্যাদির ক্ষেত্রে। ওড়িশাতে সম্বলপুরীও নিগ্রহের শিকার, এরকম অনেক আছে গোটাভারতে। বাংলাদেশেও একই অবস্থা।

পশ্চিমবাংলার কথাই ধরি, উত্তরবঙ্গে কী তেমন উন্নয়ন হচ্ছে? নাকি ভৌগলিক-সাংস্কৃতিক বৈচিত্রকে অগ্রাহ্য করে কলকাতাওয়ালারাই নিজেদেরকে বাংলার কেন্দ্র ভাবছেন। 

ইত্যবিধ প্রশ্ন আছে, আপাতত এ ক'টির উত্তর আশা করছি।

বি.দ্র.- ভাষাগোষ্ঠী ও জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণ এর অধিকার প্রশ্নে তথা আঞ্চলিক ভাষা ও কৃষ্টির সংরক্ষণ প্রশ্নে বিকেন্দ্রীকরণ এর গুরুত্বের ব্যাপারে আপনাদের অভিমত জানতে চাই।


আমাদের উত্তর
সব ক'টার উত্তর দেওয়া আমাদের সাধ্যের অতীত। 
ঠিক বলেছেন। আমরা মনে করি উপভাষা বলে কিস্যু হয় না। এটা একটা সাম্রাজ্যবাদী লব্জ, বিশেষ সমাজের অধিকার লুঠের হাতিয়ার।
এক সময় অহমিয়া বা ওডিয়াকে বাংলার উপভাষা দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
যেমন রাজবংশী ভাষাকে বাংলার উপভাষা বলে চালাবার সাহিত্যিক চক্রান্ত আজও আছে। 
বাংলাদেশেই একসময় পাহাড়িয়া সমাজগুলোর ভাষা নিয়ে বহু টালবাহানা ছিল - দিল্লিতে একটি প্রতিবাদী আন্দোলনে ১৪২০সালে একটি সাঁওতালি মেয়ের সঙ্গে আলাপ হয় - সে এতই সন্ত্রস্ত ছিল যে আমার সঙ্গে খোলাখুলি কথাই বলছিল না। 
পশ্চিমবাংলার ক্ষেত্রে বঙ্গভাষীরা গোটা বাঙলাকে নিশ্চই নিজেদের উপনিবেশ ভাবেন না। বাংলাদেশের এ বাবদে অভজ্ঞতা খুবই তিক্ত। তাকে মাথায় না রাখলে খুব ভুল হয়ে যাবে। ওদিসা অহমিটা যেভাবে অন্যভাষাগুলোর অধিকার লুঠ করে নিতে চাইছে তা ভয়ঙ্কর এবং সেটি তাঁদের লড়াই করা অতীতকে অস্বীকার করে। 
তবে বাঙলা সরকার তার মত করে তার ভাবনাচিন্তার মত করে এগোচ্ছে - যেমন কুড়মালি বোর্দ তৈরি হয়েছে - কিন্তু যারা ব্যবহারিক কুড়মালি হরফ তৈরি করল, প্রাথমি স্তরের বই তৈরি করল তারাই বাদ পড়ে গিয়েছে - হয়ত এক নজরে ভালই হয়েছে - সরকারের নানান সমস্যা আছে সেগুলি তাঁদের ওপর অর্ষাত - অন্তত তারা সরকারের অংশ না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
ভাষার বাঁচন মরণের বিষয় নিয়ে আমাদের বলার যোগ্যতা নেই। DipankarGarga এ বিষয়ে বলতে পারবে।

No comments: