পলাশীর আগে থেকেই বাঙালি অভিজাত, তারমধ্যে কিছু মুসলমান, অধিকাংশ অমুসলমান ব্রিটিশদের সহায়ক হয়েছিলেন। শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানের যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বাংলাকে বিশ্বাসঘাতকতা করে কর্পোরেট পশ্চিমি শাসনের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। বঙ্কিমের আগে এই ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন রামমোহন-দ্বারকানাথ-বিদ্যাসাগর ত্রয়ী। তাঁদের তৈরি করা তত্ত্বকে ফলেফুলে ভরিয়ে তোলেন বঙ্কিম।
আমরা এই পুরো ব্যাপারটাকে অন্য দৃষ্টভঙ্গীতে দেখি। মূলত ধর্মযুদ্ধের(ক্রুসেড) সময় থেকেই বাণিজ্যে অধমর্ণ পশ্চিম, পূর্বের ভারত-পারস্য-চিনের যৌথ বাণিজ্য চাকাটাকে তাঁদের দিকে ঘোরাবার চেষ্টা করছিল। কোন কোন শক্তি এদিকে এসেছিল তা আমরা ইতিহাসের সূত্রে জেনে গিয়েছি - পর্তুগিজ, ডাচ, ফরাসি, ব্রিটিশ চেষ্টা করেছে এই উপমহাদেশকে, বিশেষ করে বাংলাকে পদদলিত করার, যে উৎপাদন ব্যবস্থা শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল, তার হেঁটমুণ্ড উর্ধ্বপদ করানো। ভারত-আরব যে বিকেন্দ্রিত বাণিজ্য এবং জ্ঞানচর্চা গড়ে উঠেছিল, তকে ধ্বংসকরে কর্পোরেট কেন্দ্রিভূত বাণিজ্য জ্ঞানচর্চা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল।
পলাশী তার সূচনাবিন্দু। ভদ্রদের ক্ষমতায়ন এবং শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান উৎপাদন ব্যবস্থার ধ্বংস সাধন।
আমরা এখনও মনে করি শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান কারিগরেরাই এই উদ্বৃত্ত বাংলা তৈরি করেছিলেন, সেখানে অভিজাতদের কোন নলচল ছিল না। যেহেতু পলাশীর আগে পর্যন্ত সম্রাট বা সুলতান বুঝতেন কারিগর আর চাষীর থেকে আসা রাজস্ব তাঁদের বেঁচে থাকা সুনিশ্চিত করে, তারা কারিগর আর চাষিদের যতটা পারাযায় পালন করতেন। কারিগর চাষীদের ওপরে যে কোন অত্যাচার কড়া হাতে দমন করা হত পলাশী পর্যন্ত। ১৮৩৬সালের উইলিয়াম এডামের বাংলার শিক্ষা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান ছাত্ররাই পাঠসালা, মাদ্রাসাগুলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ, উচ্চবর্ণ মাত্র ১৫%। ফলে গোটা জ্ঞানচর্চা আর উৎপাদন ব্যবস্থা ছোটলোকেদের হাতে ছিল যার রক্ষা কর্তা ছিলেন নবাব বা সুলতান।
আমরা যারা গাঁইয়া উতপাদকেদের সঙ্গঠন করি যেখানে মূলত শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা মনে করি অভিজাতরা এই উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস করতে সুলতানি তুলে ব্রিটিশদের সহায়তা করে কর্পোরেট ব্যবস্থার গোড়াপত্তন করেছিলেন।
যখন বাংলা নিজের জ্ঞান, প্রযুক্তি, নিজের বাজার, প্রজ্ঞা নিয়ে উৎপাদন এবং নিজের শিক্ষা ব্যবস্থা আপন করেছিল ততদিন বাংলা বিশ্বজয়ী ছিল - উপমহাদেশের জিডিপি ছিল ২৫ তারমধ্যে বাংলারই ৫। এবং গোটা উৎপাদন ব্যবস্থা, প্রযুক্তি আর বিতরণ ব্যবস্থাই ছিল শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানের হাতে। তাই পলাশী ঘটে।
অথচ আজ উভয় ধর্ম নির্বিশেষে যখন আমরা পশ্চিমি জ্ঞানচর্চা আর প্রযুক্তির দ্বারস্থ হয়েছি। পলাশীর পরে অভিজাতদের চেকনাই বেড়েছে কিন্তু সার্ভিকভাবে বাংলা এবং বাঙালির অধগমন শুরু হয়েছে এটা বলা যায়। যে বাংলা ভাষার ৪০০টি শব্দ চিনারা চিনা ভাষাভ অনুদিত করে, যে বাংলায় সাঁরা বিশ্বের মানুষ ব্যবসা করতে আসত সেখানে আজ বাঙালি বিদেশে চাকরি করতে যায়। পরের ধার করা ধনে নতুন করে বাংলা গড়ে তোলা অসম্ভব।
যতদিননা আমরা ১১৬৪/১৭৫৭য় বাংলা যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় পৌঁছতে পারছি, ততদিন বাংলার মুক্তি নাই।
আমরা এই পুরো ব্যাপারটাকে অন্য দৃষ্টভঙ্গীতে দেখি। মূলত ধর্মযুদ্ধের(ক্রুসেড) সময় থেকেই বাণিজ্যে অধমর্ণ পশ্চিম, পূর্বের ভারত-পারস্য-চিনের যৌথ বাণিজ্য চাকাটাকে তাঁদের দিকে ঘোরাবার চেষ্টা করছিল। কোন কোন শক্তি এদিকে এসেছিল তা আমরা ইতিহাসের সূত্রে জেনে গিয়েছি - পর্তুগিজ, ডাচ, ফরাসি, ব্রিটিশ চেষ্টা করেছে এই উপমহাদেশকে, বিশেষ করে বাংলাকে পদদলিত করার, যে উৎপাদন ব্যবস্থা শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল, তার হেঁটমুণ্ড উর্ধ্বপদ করানো। ভারত-আরব যে বিকেন্দ্রিত বাণিজ্য এবং জ্ঞানচর্চা গড়ে উঠেছিল, তকে ধ্বংসকরে কর্পোরেট কেন্দ্রিভূত বাণিজ্য জ্ঞানচর্চা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল।
পলাশী তার সূচনাবিন্দু। ভদ্রদের ক্ষমতায়ন এবং শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান উৎপাদন ব্যবস্থার ধ্বংস সাধন।
আমরা এখনও মনে করি শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান কারিগরেরাই এই উদ্বৃত্ত বাংলা তৈরি করেছিলেন, সেখানে অভিজাতদের কোন নলচল ছিল না। যেহেতু পলাশীর আগে পর্যন্ত সম্রাট বা সুলতান বুঝতেন কারিগর আর চাষীর থেকে আসা রাজস্ব তাঁদের বেঁচে থাকা সুনিশ্চিত করে, তারা কারিগর আর চাষিদের যতটা পারাযায় পালন করতেন। কারিগর চাষীদের ওপরে যে কোন অত্যাচার কড়া হাতে দমন করা হত পলাশী পর্যন্ত। ১৮৩৬সালের উইলিয়াম এডামের বাংলার শিক্ষা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান ছাত্ররাই পাঠসালা, মাদ্রাসাগুলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ, উচ্চবর্ণ মাত্র ১৫%। ফলে গোটা জ্ঞানচর্চা আর উৎপাদন ব্যবস্থা ছোটলোকেদের হাতে ছিল যার রক্ষা কর্তা ছিলেন নবাব বা সুলতান।
আমরা যারা গাঁইয়া উতপাদকেদের সঙ্গঠন করি যেখানে মূলত শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা মনে করি অভিজাতরা এই উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস করতে সুলতানি তুলে ব্রিটিশদের সহায়তা করে কর্পোরেট ব্যবস্থার গোড়াপত্তন করেছিলেন।
যখন বাংলা নিজের জ্ঞান, প্রযুক্তি, নিজের বাজার, প্রজ্ঞা নিয়ে উৎপাদন এবং নিজের শিক্ষা ব্যবস্থা আপন করেছিল ততদিন বাংলা বিশ্বজয়ী ছিল - উপমহাদেশের জিডিপি ছিল ২৫ তারমধ্যে বাংলারই ৫। এবং গোটা উৎপাদন ব্যবস্থা, প্রযুক্তি আর বিতরণ ব্যবস্থাই ছিল শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানের হাতে। তাই পলাশী ঘটে।
অথচ আজ উভয় ধর্ম নির্বিশেষে যখন আমরা পশ্চিমি জ্ঞানচর্চা আর প্রযুক্তির দ্বারস্থ হয়েছি। পলাশীর পরে অভিজাতদের চেকনাই বেড়েছে কিন্তু সার্ভিকভাবে বাংলা এবং বাঙালির অধগমন শুরু হয়েছে এটা বলা যায়। যে বাংলা ভাষার ৪০০টি শব্দ চিনারা চিনা ভাষাভ অনুদিত করে, যে বাংলায় সাঁরা বিশ্বের মানুষ ব্যবসা করতে আসত সেখানে আজ বাঙালি বিদেশে চাকরি করতে যায়। পরের ধার করা ধনে নতুন করে বাংলা গড়ে তোলা অসম্ভব।
যতদিননা আমরা ১১৬৪/১৭৫৭য় বাংলা যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় পৌঁছতে পারছি, ততদিন বাংলার মুক্তি নাই।
No comments:
Post a Comment