স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি গল্পগাথা হোয়াটসেপে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুভ্রজ্যোতির( Subhrajyoti Basu) সময়ে দেখলাম। সেখানে পিছাবনীর কথা উল্লেখ হয়েছে - বিষয়টি অর্ধসত্য। পিছাবনী এলাকার স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারের সন্তান হয়ে কিছু কথা বলার হক আছে বলে মনে করি।
১) পিছাবনী দীঘা-কাঁথি রাস্তায় একটি পুরাতন গঞ্জ - লবন আইন সত্যাগ্রহের অন্যতম ধাত্রীভূমি। পিছাবনী বাজারে একটা শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ আছে(ছবিতে উলিখিত)। পিছাবনী-কাঁথির কায়স্থসন্তান বীরেন শাসমলের কর্মস্থল (তাঁর জীবনী স্রোতের তৃণতে এই স্থানের নাম আছে)। এটির পূর্বের নাম ছিল চন্দনপুর - লবন সত্যাগ্রহে পুলিশের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীরা ঠিক করেন তাঁরা লড়াইএর ময়দান ছেড়ে পিছিয়ে যাবেন না - খালি হাতে দাঁড়িয়ে আইন অমান্য করবেন। ঔপনিবেশিক পুলিশের দমন পীড়নের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা না পিছিয়ে আইন অমান্য করেন পিছাবিনী খালের মাটিতে লবন তৈরি করে। সে লড়াইএর স্মরণে স্থানটির নাম মুখের কথায় পিছাবনি হয়ে যায় - শুধু আন্দোলনের তীব্রতায় একটা স্থানের নাম পরিবর্তিত হয়ে যায় - এই আমাদের দেশ, এই আমাদের উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনের ঐতিহ্য।
---
পিছাবনী আমার মামাবাড়ির গ্রামের থেকে আধ ক্রোশ দূরে - এই খালের মাটি নিয়ে এসে আমার দিদিমার নেতৃত্ব গ্রামের মহিলারা লবন বানিয়ে লবন আইন অমান্য করেছিলেন।
পিছাবনীর সংগে মাতঙ্গিনী হাজরার কোন যোগ নেই, বরং আমার দিদিমা মাতঙ্গিনী পঞ্চাধ্যয়ীর যোগ আছে। মা তাঁর মায়ের আন্দলনের অংশ নেওয়ার বর্ণনা জয়াদিদির পত্রিকা ভূমধ্যসাগরে লিখেছেন।
তমলুকের বিদ্যালয় পাঠ্য প্রখ্যাত মাতঙ্গিনীর সঙ্গে পিছাবনীর কোন যোগ নেই।
---
এ প্রসঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে কয়েকটা কথা বলা দরকার, পলাশীর পরে শূদ্ররা যে লড়াই শুরু করেছিল, কংগ্রেস তৈরি করে সেই লড়াই ভদ্রদের কবলে নেওয়ার চেষ্টা করল সাম্রাজ্য, যাতে রাজ্য গেলেও তাদের প্রাধান্য থাকে কেননা কংগ্রেসের নেতৃত্ব বরাবরই মেকলের নাতি নাতনিদের হাতেই ছিল।
---
পিছাবনী আমার মামাবাড়ির গ্রামের থেকে আধ ক্রোশ দূরে - এই খালের মাটি নিয়ে এসে আমার দিদিমার নেতৃত্ব গ্রামের মহিলারা লবন বানিয়ে লবন আইন অমান্য করেছিলেন।
পিছাবনীর সংগে মাতঙ্গিনী হাজরার কোন যোগ নেই, বরং আমার দিদিমা মাতঙ্গিনী পঞ্চাধ্যয়ীর যোগ আছে। মা তাঁর মায়ের আন্দলনের অংশ নেওয়ার বর্ণনা জয়াদিদির পত্রিকা ভূমধ্যসাগরে লিখেছেন।
তমলুকের বিদ্যালয় পাঠ্য প্রখ্যাত মাতঙ্গিনীর সঙ্গে পিছাবনীর কোন যোগ নেই।
---
এ প্রসঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে কয়েকটা কথা বলা দরকার, পলাশীর পরে শূদ্ররা যে লড়াই শুরু করেছিল, কংগ্রেস তৈরি করে সেই লড়াই ভদ্রদের কবলে নেওয়ার চেষ্টা করল সাম্রাজ্য, যাতে রাজ্য গেলেও তাদের প্রাধান্য থাকে কেননা কংগ্রেসের নেতৃত্ব বরাবরই মেকলের নাতি নাতনিদের হাতেই ছিল।
ব্রিটিশ মদতে শূদ্র-বৈশ্য এবং পরম্পরার সমাজ আর মূলত ছোটলোকেদের সাম্রাজ্য বিরোধিতার রেশ নিল ভদ্ররা। তার ২০ বছর পরে সেই মেকলে শিক্ষিতদের এক অংশ লড়ায়ে নামল সমঝোতাবাজদের বিরুদ্ধে। সেখানেও ভাগ হল - ভদ্র আর ছোটলোক - কলক্কাতিয়া ব্রাহ্মণ-কায়স্থরা জোট বেঁধে মেদিনীপুরী বীরেন শাসমলকে এক ঘরে করে দিল(তাঁর আত্মকথা স্রোতের তৃণ পড়ুন)।
কংগ্রেসের আর কলকাতার বিপ্লবীদের দখলদারি চরিত্র বুঝে বীরেন শাসমল চলে গেলেন মেদিনীপুর নিজের এলাকায় আন্দোলন করতে। সতীশ সামন্ত, সুশীল ধারা অজয় মুখার্জী মাতঙ্গিনী হাজরা এমন হাজারো নাম না জানা কর্মী দল বেঁধে লড়লেন তমলুকে, স্বাধীন করলেন।
গোটা উপকূল মেদিনীপুর জুড়ে লবণ আইন সত্যাগ্রহের কোন ইতিহাস থাকলে দেখবেন - আমার পূর্বজ সংখ্যালঘু কিছু ব্রাহ্মণ পরিবার ছাড়া(শহীদ নয়) শুধু শূদ্র আর বৈশ্য শহীদ হয়েছেন। তাদের লড়ায়ে চন্দনপুর হল পিছাবনী।
No comments:
Post a Comment