ডি পি আগরওয়াল, লোকবিজ্ঞান কেন্দ্র, আলমোড়া
(ছবিতে - গ্রিশ্যাম কলেজ, সেখানে রয়্যাল সোসাইটির ভ্রুণ তৈরি হয়)
(ছবিতে - গ্রিশ্যাম কলেজ, সেখানে রয়্যাল সোসাইটির ভ্রুণ তৈরি হয়)
আরেকটি বড় সমস্যা ছিল পৃথিবীর আয়তন মাপা যা দিয়ে ইন্দো-আরবি পদ্ধতি দ্রাঘিমা নির্ণয় করত। পৃথিবীর মাপের সঠিক হিসেব না থাকায় এই পদ্ধতিটি নির্ভর করে ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতকে ইওরোপিয়রা বিশ্বের দ্রাঘিমা নির্ণয় করতে পারত না। বহু কাল আগে ইন্দো-আরব জ্ঞানচর্চা বিশ্বের মাপ এঁচে ফেলেছিল। এটা অল-বিরুনি করেছিল খুব শস্তার পদ্ধতি দিয়ে করেছিলেন আর খালিফা মামুন করেছিলেন বিপুল খরুচে মরুভূমিতে অভিযান পাঠিয়ে, বাস্তবিকভাবে পৃথিবীর বৃত্তচাপের এক ডিগ্রি বলতে কত দূরত্ব বোঝায় জানতে। ইওরোপিয়রা বহুকাল ধরেই ইন্দো-আরবি সঠীক মাপ ও প্রযুক্তি সম্বন্ধে অবগত ছিল ঠিকই, তবুও এটা পরিষ্কার করে বলা দরকার কলম্বাস, তাঁর অভিযানে বিশ্বের যে মাপ দেখিয়ে টাকা পেয়েছিলেন, সেটি ছিল ইন্দো-ইওরোপিয় মাপের মাত্র ৪০%। কলম্বাসের অভিযানের ‘সাফল্যে’ এই ভুল মাপটি আর কেউ নতুন করে এঁচে দেখার সাহস দেখায় না। পেড্রো নুনেজ চেষ্টা করলেও, পর্তুগাল রাষ্ট্র গ্লোবকে ধরে সমুদ্রযাত্রার ধারনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। শেষ পর্যন্ত নিউটন বিশ্বের মাপের সংস্কারের কথা বলে যে মাপ নির্ধারণ করেন, সেটিও মুল মাপের ২৫% কম ছিল।
মধ্য-ষোড়শ শতে সমুদ্রযাত্রা রাষ্ট্রগুলির এই মাথাব্যথার এতই কারণ হয়ে দাঁড়ায় যে, এই সমস্যা সমাধানে কোন একটা বাস্তব উপায়ের দিকে তারা ক্রমশ ঝুঁকতে থাকে। সমস্যা সমাধানের উপহারের পরিমান ফিলিপ বিপুল পরিমান বাড়িয়ে দেন ১৫৫৮ সালে। উপহারের পরিমানটা এতই বেশি যে সেই প্রলোভনে বৈজ্ঞানিকেরা তাতে আত্মনিয়োগ করেতে থাকেন। যেমন ১৬১৬ সাল থেকে শুরু করে ষোল বছর ধরে গ্যালিলিও চেষ্টা করেছেন। বিফল হয়ে তিনি ১৬৩৬ সালে ডাচ সরকারের ঘোষিত পুরষ্কারের দিকে নজর ফেরান। ফ্রান্সে, মাজারিন এবং রিশল্যুর উত্তরাধিকারী কোলবার্ট সমুদ্রযাত্রার সমস্যার সমাধানের জন্যে বিপুল অর্থ উপহার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে হুইজেনস, লিবনিতজ, রোমার, নিউটন, পিকার্ড ইত্যাদির কাছে সমস্যা সমাধানের ব্যক্তিগত অনুরোধ পাঠান। তাদের থেকে যে বার্তা পান সেই উত্তর দিয়ে তিনি ১৫ জনকে নিয়ে ফরাসী রয়্যাল আকাদেমি গঠন করেন।
একইভাবে ব্রিটিশ রয়্যাল একাডেমি সৃষ্টি হয় যেই সব মানুষ নিয়ে যারা লঙ্গিচিউড সমস্যা সমাধানের জন্য মাঝে মাঝে একত্রিত হতেন। ১৬৬১ সালের একটি ছড়ায় আমরা গ্রিশ্যাম কলেজের এক দলের কাজকর্ম নিয়ে কিছুটা জানতে পারি –
The College will the whole world measure,
Which most impossible conclude,
And Navigators make a pleasure
By finding out the longitude.
Every Tarpalling shall then with ease
Sayle any ships to th'Antipodes.
The College will the whole world measure,
Which most impossible conclude,
And Navigators make a pleasure
By finding out the longitude.
Every Tarpalling shall then with ease
Sayle any ships to th'Antipodes.
Tarpalling মানে হল নাবিক। গ্রিশ্যাম কলেজের আলোচকদের মধ্যে ছিলেন জন উইলিস এবং রবার্ট হুক – এদের সঙ্গে আরও কিছু দল জুটে গিয়ে তৈরি হল রয়্যাল সোসাইটি অব লন্ডন। গ্রিশ্যাম কলেজের আলোচকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ক্রিস্টোফার ওরেন, সোসাইটির চার্টার তৈরি করেন। সেই চার্টারের একটা উদ্দেশ্য বলা হল লঙ্গিচিউড নির্নয়।
No comments:
Post a Comment