জাহাঙ্গিরের প্রখ্যাতা বিদুষী রাজ্ঞী নুরজাহানও বইএর অনুরাগী ছিলেন এবং একটি ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার তৈরি করেছিলেন। তিনিও চড়া দামে বই কিনতেন। কামরানের দিওয়ান নামক বই তার গ্রন্থাগারের জন্যে তিন স্বর্ণ মোহর দিয়ে কেনেন। এটির একটি নকল পাটনার খুদাবক্স গ্রন্থাগারে রাখা আছে। দিওয়ানের প্রথম পাতায় লেখা আছে এই সম্পদের দাম তিন মোহর – নবাব নুরুন্নিসা বেগম।
জাহাঙ্গিরের দরবারের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন অভিজাত শেখ ফরিদ বখরি লাহোর আর আহমেদাবাদে বহুকাল প্রশাসক ছিলেন। তিনিও ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার তৈরি করে, হাসান দেহলভির দিওয়ান নামক বই একই দাম দিয়ে কেনেন। এটিও পাটনার খুদাবক্স গ্রন্থাগারে রাখা আছে।
সম্রাট জাহাঙ্গির তার পূর্বজর মত শিক্ষা আর জ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
তিনি জ্ঞানী আর বিদ্বানদের উপহার দিয়ে সম্মানিত করতেন। তাঁর সময়ে বহু কবি, ধর্মতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক বিকশিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে যাদের নাম এই মুহূর্তে উল্লেখ করতে হয় তারা হলেন, পাদশানামার লেখক আবদুল হামিদ লাহোরি, আরেক পাদশানামার লেখক আমিনি কোয়াজিনি, আমলইশাহির লেখক মহম্মদ সালেহ, শাহজাহান নামার লেখক ইনায়েত খান প্রভৃতি। সম্রাটের জৈষ্ঠ সন্তান দারা শুকোর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রচুর পুস্তক রচনা ও ফারসি ভাষায় অনুবাদ হয়।
সম্রাট জাহাঙ্গির তার পূর্বজর মত শিক্ষা আর জ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
তিনি জ্ঞানী আর বিদ্বানদের উপহার দিয়ে সম্মানিত করতেন। তাঁর সময়ে বহু কবি, ধর্মতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক বিকশিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে যাদের নাম এই মুহূর্তে উল্লেখ করতে হয় তারা হলেন, পাদশানামার লেখক আবদুল হামিদ লাহোরি, আরেক পাদশানামার লেখক আমিনি কোয়াজিনি, আমলইশাহির লেখক মহম্মদ সালেহ, শাহজাহান নামার লেখক ইনায়েত খান প্রভৃতি। সম্রাটের জৈষ্ঠ সন্তান দারা শুকোর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রচুর পুস্তক রচনা ও ফারসি ভাষায় অনুবাদ হয়।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের মৌলিক জ্ঞানের বই ছাড়াও শাহজাহানকে উদ্দেশ্য করে ডিক্সনারিও তৈরি হতে থাকে। এগুলির মধ্যে আবদুর রশদ অল তাতভির ফারলাঙ্গিরশিদি এবং মন্তাখাবউললুঘাতইশাহজাহানি, আমানুল্লার চহর অনসার দানিশ মহম্মদ সাদিকের শাহিদিসাদিক। শেষতমটি ধর্মীয়, দার্শনিক, রাজনৈতিক, নৈতিক, এবং মহাজাগতিক বিষয় নিয়ে রচিত।
সম্রাট দিল্লিতে একটি উচ্চশিক্ষাকেন্দ্র গড়েন এবং দারুলবাকা নামক শিক্ষা কেন্দ্রটি সারাই করে নতুনভাবে গড়ে তোলেন। স্বাভাবিকভাবে প্রত্যেক শিক্ষাকেন্দ্রতে গ্রন্থাগার ছিল। যদিও সম্রাট নিজে বই সংগ্রহ এবং গ্রন্থাগার তৈরিতে খুব বেশি উৎসাহিত ছিলেন না কিন্তু তাকে মধ্যরাত্রে নিয়মিত বই পড়ে শোনানো হত। যদুনাথ সরকার লিখছেন, সন্ধ্যে সাড়ে আটটার সময় তিনি হারেমে প্রবেশ করতেন। প্রায় দুতিনঘন্টা মহিলাদের গান ও নৃত্য উপভোগ করতেন। এরপরে পাদশাহ বিছানায় শুতে যেতেন। সম্রাটের মুল শোবার ঘরে একজন পাঠিকা (না পাঠক?) পর্দার আড়ালে থেকে ভ্রমন কাহিনী, নবী এবং সাধুসন্তদের জীবন কাহিনী এবং পূর্ববর্তী রাজাদের বিষয় শুনতেন। এগুলির মধ্যে তার ব্যক্তিগত পছন্দের ছিল বাবর আর তৈমুরের জীবনী।
১৬৩৮ সালেওর এপ্রিলে সুরাটে যোহানন এলবার্ট ভন ম্যান্ডেলস্লো নামক এক যুবা জার্মান উপস্থিত হন। তিনি পরপর আহমেদাবাদ, বম্বে, আগরা আর লাহোরে ভ্রমন করেন। তিনি তার দিনপঞ্জীতে বলছেন শাহজাহানের রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারে উত্তমরূপে বাঁধাই করা ২৪০০০ বই আছে। মুল গ্রন্থাগারিকের নাম দারোগাইকিতাবখানা। তার লেখায় আবদুর রহমান, রশিদআলি, হস্তলেখাবিদ মীর সালিস, মীর সৈয়দ আলি, ইত্রিমাদ খান, জাফর খানের পুত্র ইনায়েত খানএর নাম পাওয়া যায়।
(চলবে)
(চলবে)
No comments:
Post a Comment