ডি পি আগরওয়াল, লোকবিজ্ঞান কেন্দ্র, আলমোড়া
সময় পার্থক্য দিয়ে দ্রাঘিমার মান নির্নয়ের তত্ত্ব ভাষ্কর জানতেন। কিন্তু আপনি যে তত্ত্বে দিক নির্নয় করলেন, সেটি সপ্তদশ শতকে মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া কোন মুসাফিরের পক্ষে কষা সম্ভবপর ছিল না কারণ যান্ত্রিক ঘড়ি সপ্তদশ শতকে ইওরপে তৈরিই হয় নি, এবং অতীত এশিয়া যে জ্ঞান তৈরি করেছে সে জ্ঞান তখন ইওরোপের ছিল না।
যদি ধরেই নেওয়া যায় যে সেই সময়ের প্রাথমিকভাবে যান্ত্রিক ঘড়ি তৈরি হয়েছিল, সেটি এত বড়, ভারি আর সঠিক মাপের থেকে এত দূরেছিল যে এটি দিয়ে সমুদ্রযাত্রা সম্ভব ছিল না। ফলে তখনও পর্যন্ত ইওরোপের হাতে সমুদ্রযাত্রার কোন নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি ছিল না যা দিয়ে সমুদ্রে তারা দ্রাঘিমা মাপবে – যদিও ততদিনে সারা পৃথিবী চক্কর দিচ্ছে ইওরোপিয় জাহাজগুলি।
১৭০৭ সালে আওরঙ্গেজেবের মৃত্যুর বছরে পার্লামেন্টারি কমিটির সামনে নিউটন বললেন, That for determining the Longitude at Sea, there have been several Projects, true in theory, but difficult to execute. One is a Watch to keep Time exactly, but.. .such a Watch has not yet been made।
কিন্তু নিউটন কথিত ঘড়ি তৈরি করাই ঝামেলাদার। একাধারে তাকে হতে হবে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র, যা সহজে জাহাজে বহন করা যায়। একে জাহাজের গতি নিরপেক্ষ হতে হবে, ঝড়ের মুখে পড়া জাহাজের দুলুনি নিরপেক্ষ হতে হবে, এছাড়াও একে shock proof হতে হবে, একে তাপমাত্রা এবং হিউমিডিটি নিরপেক্ষ হতে হবে, সব থেকে বড় কথা জল নিরপেক্ষ হতে হবে।
সমস্যা নিরসনে একটা বোর্ড অব লঙ্গিচিউড তৈরি হল এবং তাকে ২০০০০ পাউন্ড(যখন ৫০০ পাউন্ডে মহার্ঘ লন্ডনে রাজার হালে এক বছর কাটানো যেত) অনুদান দেওয়া হল। ১৭৩৬এর পর জন হ্যারিসনের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় যান্ত্রিক ঘড়ি তৈরি হল এবং পলাশীর বছর ১৭৫৭ সালে জামাইকা দিকে যাওয়া জাহাজে সেটিকে বসিয়ে বসিয়ে সব শর্তপূরণ করানো হল।
মধ্যসপ্তদশ শতকে ঘড়িটি ব্যপক ব্যবহার্য হয়ে বিপুল উৎপাদন হতে শুরু করল ইওরোপে। পশ্চিম পূর্বের প্রযুক্তির থেকে কয়েক কদম এগিয়ে গ্যাল। এই যান্ত্রিক ঘড়িটিকে আস্তে আস্তে প্রমিতিকরণ করে ফেলার পরে নামকরণ করা হল ক্রোনোমিটার।
No comments:
Post a Comment