Sunday, June 3, 2018

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা - বাংলার তাঁত ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রাথমিক কারণ সাম্রাজ্যের অত্যাচার - মেট্রোপলিটনে অতিরিক্ত উতপাদন নয়

১৭৫৭র পরে ব্রিটিশেরা ইওরোপিয় জাতভাইদের কাপড় কেনার সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে তাঁতি আর দাদালদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ডাচ আর ফরাসীরা প্রতিবাদ জানায় মালদা, মেদিনীপুর, জাঙ্গিপুর, হরিপাল, ঢাকা ইত্যাদি আড়ং থেকে মালপত্র কিনতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। কয়েকবার বৈঠকের পর ১৭৬৭ সালে ৪ মার্চ ফরাসী, ডাচ আর ব্রিটিশদের নিয়ে আড়ং ঘোরার পরিদর্শক কমিটি তৈরি করা হল। কমিটিতে রইল ডাচ কুঠিয়াল Johannes Mathias Ross এবং সাগরেদ Martinus Koning। ব্রিটিশদের পক্ষে রইল John Bitter আর Claude de la Porte(মেদিনীপুরের আড়ং জুড়ে ইনি বিপুল অত্যাচার করবেন)। ফরাসীদের পক্ষে রইল Roeland আর Des Granges। ঠিক হল ৬ জনের দলের নেতৃত্ব দেবেন রস। তিনি কলকাতার ব্রিটিশ কর্তা হেনরি ভেরলেস্টকে তাদের আড়ং ঘোরার সমীক্ষাটি জমা দেবেন। এই দলের কাজ হিসেবে বলা হল investigate the best procedures to be followed to put out the contracts so that each of the three nations was served satisfactorily. Towards that end, you would make an accurate estimate of the amount of land in each aurung which was used for planting cotton as well as of the average annual output of cotton in each aurung. You would also fi nd out the number of weavers and classify them as being of excellent, middling or poor quality।
১১ এপ্রিল রস এবং কোনিং এবং ফরাসীরা কলকাতা থেকে আড়ং সমীক্ষায় বেরোলেও ব্রিটিশেরা সেই দলে যোগ দিল না। বলা হল তারা ৪মে হরিপাল আর ধনেখালিতে দলের সঙ্গে যোগ দেবে। ডাচেরা বলল এটা চুক্তি বিরোধী। তিন দেশের দলকেই একসঙ্গে যেতে হবে। ইতোমধ্যে ব্রিটিশ হুমকিতে ফরাসীরা সরে গ্যাছে। ব্রিটিশদের ভয়ে দ্বারহট্টে এবং অন্যান্য অড়ঙ্গে কোন তাঁতি বা দালাল ব্রিটিশদের সঙ্গে দ্যাখা করতে রাজি হল না। তাঁতিরা, দালালেরা ডাচেদের অগ্রিম দেওয়া অর্থ ফিরিয়ে দিতে লাগল। ফরাসী আর ডাচেরা অসহায় ভাবে দেখতে থাকল।
শুরু হল বাংলা বাজারে লুঠ। বাংলা বাজার থেকে ব্রিটিশেরা তাদের জাতভাইদের সরিয়ে দিয়ে কম দামে কাপড় কেনা শুরু করল।ডাচ ফরাসিরা অভিযোগ করলে ব্রিটিশেরা বেমালুম অস্বীকার করল।তাঁতিরা কলকাতায় আর্জি জানাল এই দামে কাপড় সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ক্ষিরপাই থেকে ৫০ জনের মত তাঁতি ততদিনে তাঁত ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। পালাবার আগে জগতশেঠদের প্রতিকারের জন্যে আর্জি জানালে তারা জানাল তাদের পক্ষে কিচ্ছু করা সম্ভব নয়। এইভাবে পরের তিন/চার দশকে গোটা বাংলার ২২টা মসলিন আড়ং বন্ধ হয়ে গেল। ঢাকা জনশূন্য হল।
অথচ Fort William থেকে 28 April 1775 বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হল - the weavers of the province of Bengal and Bihar should enjoy a perfect and entire liberty to deal with any persons whom they pleased and that no person should use force of any kind to oblige the weavers or other manufacturers to receive advances of money or to engage in contracts for the provision of clothes against their will, and that all persons off ending against this order should suffer severe punishment.
যাই হোক শেষ কয়েকটি আড়ং ঘুরলেন ডাচেরা। হরিপাল আর ধনেখালি, কিছুটা চন্দ্রকোণা আড়ঙে বিশদ তথ্য পেলেন। সেই অসাধারণ সমীক্ষা নিয়ে লিখেছেন ওম প্রকাশ।সেই তথ্য এখানে তুলে দেওয়া গেল কয়েটি তালিকায়। এটিই একমাত্র মসলিন আড়ংএর বিশদ উতপাদ বর্ণনা। সঙ্গে তিনি ব্রিটিশ কোম্পানির তথ্য দিয়েছেন।
এই কথাগুলো বার বার বলা দরকার। শুধু লন্ডনের অতি উতপাদনের ধ্বংস হয় নি, তার জন্যে বাংলার তাঁতিদের ওপর বিপুল অত্যাচার নামিয়ে আনতে হয়েছিল।
---
রিওলো-তীর্থঙ্করের সম্পাদিত বই হাউ ইন্ডিয়া ক্লোদ দ্য ওয়ার্ল্ডে ওম প্রকাশের প্রবন্ধে FROM MARKET-DETERMINED TO COERCION-BASED: TEXTILE MANUFACTURING IN EIGHTEENTH-CENTURY BENGAL

No comments: