ষষ্ঠ অধ্যায়
আইন ও বিচার ব্যবস্থা
২। সম্রাটের বিচারের
বর্ণনা
বিচার ব্যবস্থার
বিভাগটি নজরে পড়েছিল বিদেশি ভ্রমনকারীদের। ১৬১১তে উইলিয়ম ফিঞ্চ লিখছেনঃ
আগ্রার প্রাসাদটির চারটি
দরজা,...পশ্চিমে বাজারের দিকের অন্যতমটির নাম কাছারি দরজা, এই দরজায় প্রধান বিচারক
হিসেবে কাজি বিচারে বসতেন। এই কাজির কাছারিতে রাজা, উজির সকালে প্রায় তিনঘন্টা
বসতেন, এবং তাঁর হাত দিয়ে ভাড়া, দান, জমি, ফর্মান, ঋণ ইত্যাদি ছাড়পত্র পেত...
মঙ্গলবার পশুর এবং বিচারকেদের রক্তের দিন, সম্রাট নিজে রায় দিতেন এবং বধ্যভূমিতে
প্রাণদণ্ড দেখতেন’(দর্শন ঝরোখার তলায় নদীর তীরে প্রাণদন্ডটি অনুষ্ঠিত হত)।
পাঁচ বছর পর টেরি
দেখছেন,
‘তাঁর আদালতে যা যা
ঘটছে, সম্রাট সব কিছু নিজের হাতে হ্যান্ডল করতেন, অধিকাংশ বিচার করতেন অভিয়োগ
অনুযায়ী(স্কান্ডাম এলিগেটা) এবং অনুমতিক্রমে(প্রোবাটা)। বিচার খুব দ্রুত হত এবং
প্রাণদণ্ডও দ্রুত কার্যকর করা হত। শহরের এবং সুবার প্রশাসক নিজেই বিচারের
প্রতিমূর্তি ছিলেন। আমি কোন লিখিত আইন দেখিনিঃ রাজা এবং তাঁর প্রতিনিধিদের ইচ্ছেই
ছিল আইন’।
বার্নিয়ে
আওরঙ্গজেবের বিচারের পদ্ধতি নিজে দেখে বর্ণনা করেছেনঃ
দেওয়ানিখাসে উপস্থিত
বিচারপ্রার্থীরা হাতে আবেদন নিয়ে উপস্থিত হতেন এবং তাদের সম্রাটের সামনে উপস্থিত
করা হত আর তাদের আবেদন পড়া হত; সম্রাট নিজে বিচারপ্রার্থীর অভিযোগ শুনতেন, এবং
সঙ্গে সঙ্গে তাঁর রায় প্রদান করতেন। সপ্তাহের অন্য এক দিনে দুঘণ্টা ধরে, বিভিন্ন
অভিজাত এবং ধনীদের সঙ্গে নিয়ে আসা সমাজের নিম্নস্তরের দশজনের অভিযোগ শুনতেন,।
এছাড়াও তিনি আরও একদিন আদালতখানায় দুজন প্রধান কাজির সঙ্গে উপস্থিত হতে ভুলতেন না’।
মানুচি লিখছেন সম্রাটের
বিচার দানের প্রক্রিয়ার কথা,
‘রাজা
আমখাসে(দেওয়ানিআম) জন দর্শন দিতেন এবং সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের অভিযোগের বিচার
করতেন। কেউ কেউ (তার বিপক্ষের)মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করত, কেউ কেউ অবিচার এবং হিংসার
অভিযোগ জানাত...সম্রাট ক্ষুব্ধ স্বরে কয়েকটি বাক্যে তাঁর রায় জানাতেন যেমন চোরের
মূণ্ডচ্ছেদ বা বিদেশি ভ্রমনকারীদের যে সব প্রশাসক আর ফৌজদার লুটেছে, তাদের শাস্তি...বহু
ক্ষেত্রে তিনি পাপীকে ছাড়তেন না, কোন কোন মামলায় তিনি আরও বেশি করে তদন্ত করে তাঁর
কাছে সেই সমীক্ষা পেশ করতে বলতেন(স্তোরিয়া)।
(চলবে)
No comments:
Post a Comment