পঞ্চম অধ্যায়
করব্যবস্থা
গ। পারিশ্রমিক বা দালালি
১৬৬৬ সালে শিহাবুদ্দিন তালিশ অভিযোগ করে, ‘মুসলিমরা যেদিন থেকে ভারতের শাসন ক্ষমতা দখল করে, সেদিন থেকে শাহজাহানের রাজত্বের শেষ পর্যন্ত জাহাজপোত গুলিতে প্রত্যেক ব্যবসায়ী – গোলাপ ব্যবসায়ী থেকে মাটির তৈজস বিক্রেতা থেকে মসলিন বিক্রেতা থেকে মোটা কাপড় বিক্রেতাদের থেকে হাসিল(শুল্ক) আদায় করার প্রথা চালু করেছিল’।
১৬। রাহদারি, রাস্তায় টহলের জন্য
(১৬৫৯ সালে আওরঙ্গজেব এটি বাতিল করেন, এই করের জন্য যে তকলিফ আর হেনস্থা হতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের, সে ঘটনাগুলি আমি হিস্টোরি অব আওরঙ্গজেব’ এং স্টাডিজ ইন আওরঙ্গজেব’স রেইনএ তুলে ধরেছি। এই করটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সময়, এই কর বাবদে দেশ থেকে মোট ২৫ লাখ টাকা তোলা হত।)
১৭। বাজারের জমির জন্য কর(তহইবাজারি)। সাধারণত সবজি বিক্রেতা এবং মধ্যশ্রেণীরা এই জিনিসগুলি নিয়ে বাজারে বসে পড়ত, এবং যে জায়গাটুকুতে তারা বসত, তার ভাড়া তাদের গুণতে হত। খুব পুরোনো কর – ১৩৭৫ সালে ফিরুজ শা এটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
১৮, ১৯। নির্দেশনামা বলে যে সব ঋণ শোধ হয়েছে এবং মালিকের চুরি যাওয়া সম্পদ উদ্ধারে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হাকিম সেই সম্পদের মূল্যমানের এক চতুর্থাংশ পরিমান দাবি করতেন। আওরঙ্গজেব এই কর বাতিল করেন, এবং মকদ্দমাকারীদের পক্ষ থেকে দেয় ধন্যবাদসূচক নৈবেদ্য(ঘুষ)এর(শারাই জুর্মানা ওয়া শুক্রানা) ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এটিও একটি পুরোনো এবং মুসলমানি বিচার প্রথা।
২০। শাহ দামি(টাকার তিনের কুড়ি অংশের শুল্ক?)
২১। গুড় জ্বাল দেওয়ার জন্য লোহার কড়াইয়ের ওপর কর(মিরাট জুড়ছে, ‘কিন্তু চিনি ফোটানোর কাজে আইন অনুযায়ী কর লাগু হবে’)।
২২। শুকিয়ে যাওয়া নদী পারাপারের জন্য আদায় করা কর(যে নদী হেঁটে পার হওয়া যায়, সেটি থেকেও)
২৩। এই করের নাম ছিল মাঝির পারিশ্রমিক(মাল্লাহি), সরকারিভাবে যে সব বণিক, পথচারী নদী পারাপার করতেন(অবশ্য মাঝির রোজগারের ওপর কর নয়)
২৪। পাথর এবং লোহার বাটখারা ওপর ধার্য কর, সেগুলির ওপর পাঞ্জা মারার সময় নেওয়া হত
২৫। আগ্নেয়াস্ত্র সুমারি(দস্তইয়ার), বাড়ি আর তাদের অধিবাসী, হিন্দুদের থেকে যা নেওয়া হয়েছে কিন্তু তাতে মুসলমানেদের ছাড় দেওয়া। আমরা জানি শহরে এ ধরণের তালিকা তৈরির দায়িত্ব ছিল কোতোয়ালের। কিন্তু বাস্তবিকভাবে এগুলিতে কর চাপানো বেআইনি ছিল(এছাড়া তালিকা বলছে দস্তরশুমারি বা পাগড়ির ওপর কর, আইনিআকবরি সূত্রে জানা যাচ্ছে এ ধরনের কর রদ করেন আকবর)
২৬। বিভিন্ন শুল্করহিত জমির(মদদইমাশ) যারা ভোগ করছেন, তাদের জন্য যে দানের অঙ্গীকার (মুকাররারি) করা হত, আর ওপরে কর
২৭। চাষীদের জমির সীমা চহ্নিত(চকবন্দী) করণে জন্য কর;
২৮। বানজারা আর অন্যান্যদের মোষ চরাবার জন্য কর, মিরাট বলছে, ‘প্রত্যেক সময়ে যখন মোষের দল শহরে আসত, তখন গাউচরায়ির নামে, সেই পশুদের ঘাস আর বজরা ঘাস খাওয়াবার জন্য তাদের থেকে একটঙ্কা করে আদায় করা হত’। এই সূত্রে অন্যত্র বলছে, ‘পশুগুলি শহরে চারণ না(সাইমা) করলেও, তাদের মূল্য নিসবের থেকে অনেক কম হলেও, পাটন শহরে আধিকারিকরা প্রত্যেক ভেড়ার জন্য প্রত্যেক বছর বলপ্রয়োগ করে চার মুরাদি টাকা, গরুর জন্য আট আনা আর মোষের জন্য এক টাকা কর আদায় করে’।
২৯। গাড়ি, উট বা বার্তাবাহক ভাড়ার জন্য কর।
৩০। ধাওয়াইয়া শ্রেণীর মানুষ, যারা গাড়ি ভাড়া দেয়, বুরহানপুর বা অন্যান্য এলাকা থেকে বলদ ক্রয় করে সেখানে কর দিয়ে আহমেদাবাদে নিয়ে এলে, এখানেও তাদের থেকে কর নেওয়া হয় আর তারা যদি কর দিতে আপারগ হয় তাহলে তাদের অপরাধী ঘোষণা করে দেওয়া হয় এবং জরিমানা করা হয়।
৩১। চুঙ্গী(অকট্রয় সংগ্রহ কেন্দ্র) এবং অন্যান্য জায়গায় দাঁড়িপাল্লা(ডান্ডী)র জন্য কর বসানো হয়, এগুলিকে তারাজুকাশির জন্য দারোগা কর বলা হয়, কোথাও ধরণ এবং ডান্ডিধারীও বলা হয়(মিরাট একে বলছে দারোগাগানা ওয়া রুসুমি কোতোয়ালি)।
৩২। বিশেষ সময়ের জন্য – বছরে(সালিয়ানা), মরশুমের জন্য(ফসলানা), মাসে একবার(মাহানা) বা শুক্রবার(জুমাগি), দৈনিক(রোজিয়ানা) বা শীতে(জামস্তানি), বা দুটো ঈদে(ঈদি)(লেখা বোঝা যাচ্ছে না, তবে প্রথম থেকেই মুসলমানেরা এই কর থেকে ছাড় পেতেন)
৩৩। কাগজের দামে(সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য এবং চাষীকে চিটা দেওয়ার জন্য)
(চলবে)
No comments:
Post a Comment