তৃতীয় খণ্ড
৬৬। আবিসিনিয়(আমাদের চলতি ভাষায় হাবসি) নৌসেনাধ্যক্ষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা
মছলি-বন্দরের সংবাদ লেখকের প্রেরণ করা সমীক্ষাপত্র থেকে সম্রাট জানতে পারলেন যে, ডান্ডা-রাজপুরির থানেদার সিদ্দি য়াকুত খাঁর পাঠানো সেই সংবাদপত্রে নিজের সিলমোহর দিয়ে জানিয়েছেন যে, তাঁকে যদি ডান্ডা-রাজপুরির মুতসুদ্দিগিরি(খাজনাদার)র অধিকার দেওয়া হয় তার সময়ের আগের পদাধিকারীর তুলনায় অনেক ভাল কাজ করতে পারবেন, তাতে এলাকার সমৃদ্ধি হবে এবং কেন্দ্রে আরও বেশি অর্থ পাঠাতে পারবেন।
সেই সমীক্ষা পত্রের ওপরে সম্রাট লখলেন যে, ‘আমি বহুকাল ধরে এই আত্মঅহঙ্কারী, আগ্রাসী চরিত্রের সিদ্দি য়াকুত খাঁকে চিনি(এখানেই পাণ্ডুলিপিটি হঠাতই শেষ হয়ে গিয়েছে)’।
মন্তব্য – ১৬৭০ সালের পরে ডান্ডা-রাজপুরিতে যে সব সিদ্দি মুঘল সকারের কাজ করতেন, তাঁদের সক্কলের উপাধি ছিল য়াকুত খাঁ। এরা বম্বে উপকূলের নৌসেনার দায়িত্বে ছিলেন। কাফি খাঁ এদের ইতিহাস লিখে গিয়েছেন। ডান্ডা-রাজপুরি বম্বে উপকূলের মহাবালেশ্বরের উত্তর-পশ্চিম দিকের একটি যমজ শহর, এটি জাঞ্জিরা দ্বীপের মুখোমুখি। এই দ্বীপটি আবিসিনিয়দের অধিকারে বহুকাল ধরে ছিল। মছলি-বন্দর আজকের পূর্ব উপকূলের কৃষ্ণা নদীর তীরের মছলিপত্তনম। ১৭০২ সালে জনৈক সিদ্দি য়াকুত ডান্ডা-রাজপুরীর রাজস্বঅধিকারী ছিলেন।
৬৭। একটি খণ্ড
একটি আবেদনের উত্তরে সম্রাট লিখলেন, ‘যদিও সে একটি শিশু, আমি জানি সে জ্ঞানী। হয়ত সে এই আবেদনটি করেছে সুকর(=মাতালাবস্থা) অবস্থায় কেন না এই স লেখা হয়েছে শুধু ‘স’ ব্যবহার করে যাতে কোন বিন্দু নেই, কিন্তু শুকর(=কৃতজ্ঞতা) লেখা হয় বিন্দুযুক্ত শিন অক্ষর দ্বারা। ফলে তার কৃতজ্ঞতার প্রতি সম্মান দেখানো গেল না।
মন্তব্য – আরবি স কে শ-তে রূপান্তরিত করা যায় তার ওপরে তিনটি বিন্দু যোগ করে। এই খণ্ডটি ৬৯ নম্বরের সঙ্গে জোড়া ছিল। কিন্তু(আমরা দেখব) এর ভাবের সঙ্গে ৬৯ নম্বরের ভাবের কোন মিল নেই – কেননা রুহুল্লা খাঁয়ের চিঠিতে শুকর শব্দটা ব্যবহারই হয় নি। বা ৬৬এর গল্পে এই শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এটা পড়ে বোঝা যায় যে এটি কোন একটা গল্পের হারানো প্রাপ্তি।
৬৮। তোমার তন্নিষ্ঠ সেবার জন্য খুব বেশি গর্বিত হোয়ো না
‘ফাতাউল্লা খাঁকে লেখ, (এলাকা থেকে পাঠানো)বিভিন্ন সমীক্ষার বিশদ বিবরণ থেকে তার কীর্তিকলাপের গুরুত্ব বোঝা যাচ্ছে, এবং রাজসভায়(মুজরা) সেগুলির আবশ্যকতা আছে; কিন্তু নিজের জীবনকে বাজি ধরে(হয় পুরষ্কারের বিনিময়ে) যেন আমার সেবা না করে, বা সে আমার সেনাপতিদের রুষ্ট করে যেন আমাকে রুষ্ট না করে’।
মন্তব্য - মীর মহম্মদ সাদিক, ওরফে ফাতাউল্লা খাঁ বাহাদুর আলমগীরশাহি, পানহালা আর খেলনা দখল করায় সবার নজরে আসেন, ফলে সম্রাটের সেনাপতিরা তার ওপর রুষ্ট হয়ে পড়ছিলেন। আমার হিস্ট্রি অব আওরঙ্গজেবে উল্লেখ যোগ্য বিশদ বিবরণ আছে।
{তৃতীয় খণ্ড সমাপ্ত}
(চলবে)
No comments:
Post a Comment