দ্বিতীয় খণ্ড
কাম বক্স
২৫। কাম বক্সএর গ্রেপ্তারি
নাজিরের চিঠি আর শাহজাদা মুহম্মদ খাঁ বক্সের পাঠানো খবর কাগজ থেকে সম্রাট জানতে পারলেন যে, জিনজি দুর্গ অধিকারের পর শাহজাদার কাছে নসরত জং খাঁ অনুরোধ করেন, যে সেনাকে নিয়ে ধীরে যাত্রা করতে এবং চারিদিকে নজরদারি করে শিবির ফেলতে, কেননা শত্রুপক্ষের জমিতে তখনও পঞ্চাশ হাজার অশ্বারোহী সৈন্য রয়েছে। শাহজাদা খুব রুক্ষ্ম স্বরে জানালেন, ‘এখানে আমি আমার মালিক। আমি যেখানে খুশি কুচ করে যাব’ এবং এই বিতর্ক চলতে চলতে ঝগড়ার পর্যায়ে চলে গেল। খাঁ তার সঙ্গে সভায় বসতেন না, শুধু শাহজাদা যখন অশ্বারোহে বেরোতেন, তখন তার সঙ্গে কথা বলতেনমাত্র। বুধবার, নবম জিকাদা (১৩ জুলাই, ১৬৯২)র দিনে শাহজাদা তার তাঁবুতে পৌঁছে এক দাসকে দিয়ে খাঁকে ডেকে পাঠালেন এবং খাঁ একটু দেরি করেই আসার সিদ্ধান্ত নিলেন। ততক্ষণে চারটি দাস তাকে ডাকতে গিয়েছে। খাঁএর গোয়েন্দারা খবর দিল যে, তার সৎভাইয়ের সঙ্গে মিলে শাহজাদা, খাঁকে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা করে ফেলেছে। নাজিরের চিঠি থেকে এটা পরিষ্কার যে এই পরিকল্পনাটা সত্য। খাঁ সংবাদলেখকদের ডাকলেন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে, সঙ্গে নিলেন রাও দলপত বুন্দেলাকে, নিজের হাতির পিঠে চেপে তিনি পৌছলেন শাহজাদার তাঁবুতে। তাঁবুর কাপড়(জালি) উঠিয়ে তিনি শাহজাদার তাঁবু হাতি দিয়ে উপড়ে ফেলতে শুরু করলেন। তার তাঁবু উপড়ে যাচ্ছে দেখে শাহজাদা পালাতে উদ্যমী হলেন হারেম থেকে। রাও দলপত তার হাত ধরে তাকে টেনে নিয়ে এলেন খাঁএর হাতির সামনে। দলপতকে খাঁ ইশারা করলেন, দলপতের হাতির ওপর শাহজাদাকে বসাতে। চার কুচের দিন ধরে দলপতের সঙ্গে শাহজাদা বন্দী রইলেন।
নাজিরের চিঠি আর শাহজাদা মুহম্মদ খাঁ বক্সের পাঠানো খবর কাগজ থেকে সম্রাট জানতে পারলেন যে, জিনজি দুর্গ অধিকারের পর শাহজাদার কাছে নসরত জং খাঁ অনুরোধ করেন, যে সেনাকে নিয়ে ধীরে যাত্রা করতে এবং চারিদিকে নজরদারি করে শিবির ফেলতে, কেননা শত্রুপক্ষের জমিতে তখনও পঞ্চাশ হাজার অশ্বারোহী সৈন্য রয়েছে। শাহজাদা খুব রুক্ষ্ম স্বরে জানালেন, ‘এখানে আমি আমার মালিক। আমি যেখানে খুশি কুচ করে যাব’ এবং এই বিতর্ক চলতে চলতে ঝগড়ার পর্যায়ে চলে গেল। খাঁ তার সঙ্গে সভায় বসতেন না, শুধু শাহজাদা যখন অশ্বারোহে বেরোতেন, তখন তার সঙ্গে কথা বলতেনমাত্র। বুধবার, নবম জিকাদা (১৩ জুলাই, ১৬৯২)র দিনে শাহজাদা তার তাঁবুতে পৌঁছে এক দাসকে দিয়ে খাঁকে ডেকে পাঠালেন এবং খাঁ একটু দেরি করেই আসার সিদ্ধান্ত নিলেন। ততক্ষণে চারটি দাস তাকে ডাকতে গিয়েছে। খাঁএর গোয়েন্দারা খবর দিল যে, তার সৎভাইয়ের সঙ্গে মিলে শাহজাদা, খাঁকে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা করে ফেলেছে। নাজিরের চিঠি থেকে এটা পরিষ্কার যে এই পরিকল্পনাটা সত্য। খাঁ সংবাদলেখকদের ডাকলেন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে, সঙ্গে নিলেন রাও দলপত বুন্দেলাকে, নিজের হাতির পিঠে চেপে তিনি পৌছলেন শাহজাদার তাঁবুতে। তাঁবুর কাপড়(জালি) উঠিয়ে তিনি শাহজাদার তাঁবু হাতি দিয়ে উপড়ে ফেলতে শুরু করলেন। তার তাঁবু উপড়ে যাচ্ছে দেখে শাহজাদা পালাতে উদ্যমী হলেন হারেম থেকে। রাও দলপত তার হাত ধরে তাকে টেনে নিয়ে এলেন খাঁএর হাতির সামনে। দলপতকে খাঁ ইশারা করলেন, দলপতের হাতির ওপর শাহজাদাকে বসাতে। চার কুচের দিন ধরে দলপতের সঙ্গে শাহজাদা বন্দী রইলেন।
এই জোড়াপাতা পড়ে সম্রাট লিখলেন,(কবিতা)
একজন বাঁদীর পুত্র কোন মতেই ভাল হয় না/ সে যতই রাজারদ্বারা পালিত হোক না কেন।
নোয়া(নবী আর শান্তি বিষয়ে) তার দুর্বিনীত পুত্রকে কিছু শেখাতে পেরেছিল, যাতে আমি সফল হব(একই কাজে?)? নসরত জং খাঁ জ্ঞান বিবর্জিত মানুষ নন। যে তার বিরুদ্ধে বলবে, সে আমার কাছে শয়তানরূপে প্রতিপাদ্য হবে। শয়তানের নেতা, আমার বুরবক পুত্রকে নসরত জং খাঁ বিজাপুর পর্যন্ত নিয়ে যাক, এবং সেখানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তাকে সঁপে দিক। বিজাপুরের সুবাদারকে একটা ফরমান লিখে নির্দেশ দাও যে, এক হাজারি মনসবদার দিয়ে তাকে পাহারা দিয়ে আমার কাছে পাঠাক’। সেই চিঠির প্রান্তে সম্রাট লিখলেন, ‘আর সে যেহেতু আমার পুত্র, কবিতা উদ্ধৃতি দিয়েই বলি, সে তোমার শত্রু, প্রমানিত হয়েছে, এবং তাকে শত্রু হিসেবেই চিহ্নিত কর’, - তাহলে আমি কেন আমার বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া করব, যখন একজন ভাল কর্মচারী হওয়ার গুণ আমি সেই মানুষটার মধ্যে দেখেছি; আর যখন সেই কর্মচারী আমার নিজের আত্মীয় হয়, সে যদি আমার মামীর সন্তান হয়, তাহলে আমি তাকে বন্ধু বলব’। এছাড়া আরও একটি সূত্র লিখছে, সেই প্রান্তে তিনি লিখলেন, প্লেটো বলেছেন, তোমার তিনজন বন্ধু হতে পারে, যে তোমার নুনের(ভোজনের) অংশিদার; তোমার বিপদের অংশীদার আর তোমার ভ্রমনের বন্ধু।
মন্তব্য - কাম বক্স আওরঙ্গজেবের উদিপুরী মহলের সব থেকে ছোট এবং লাই পাওয়া সন্তান(জন্ম ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৬৬৭ সাল)। ১৬ ডিসেম্বর ১৬৯১এর জনজির ঘেরাওয়ের সঙ্গী হয়। সেনাপতি ছিলেন আসাদ খাঁ এবং তার পুত্র নসরত জং। ১৬০৮এর ৭ জানুয়ারি দুর্গের পতন হয়। মতামুটি ২৮ ডিসেম্বর, দুই সেনাপতি আর শত্রুর চক্রান্তে সে গ্রেপ্তার হয় এবং রাজসভায় পৌঁছোয় ১৪ জুন ১৬৯৩তে। ভীমসেন নুক্সাইদিলকাসায় এই কাণ্ডের বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। নোয়ার দুর্বিনীত পুত্রের নাম ক্যানন।
(চলবে)
No comments:
Post a Comment