দ্বিতীয় খণ্ড
১৬। সন্তানদের প্রতি অবিশ্বাস
মুহম্মদ মুয়াজ্জম বাহাদুর শাহএর মহলদার হামিদা বানু, মুলতান সুবা থেকে
সম্রাটকে লিখলেন, ‘আমি নজর করে শাহজাদার ব্যক্তিগত কক্ষে, যেখানে তার প্রেয়সীরা
আসে, দেখেছি, তার সঙ্গে একটা কলমদানি আর নিয়মের বই থাকে। প্রাসাদের প্রথা এবং
আদবকায়দার প্রতি সম্মান জানিয়ে বলতে পারি (শাহজাদার)এই কাজে বর্তমান মহলদার বা তার
সহায়কের উপস্থিত থাকা খুব জরুরি। মহামহিম, যখন আপনি এই দাসী বৃদ্ধাকে মৌখিকভাবে নির্দেশ
দিয়েছেন, এবং পরে তা সম্রাটের ফরমানেও লিখে বলেছেন, যখনই শাহজাদা তার কলমদানি তলব
করবেন, তখন এই ভৃত্যা বা তার সহকারী সরফউননিসাকে সেখানে থাকতে হবেই।(অথচ সেই ফরমান
অপেক্ষা করে)এই ঘটনা ঘটে চলেছে। এই দাসীকে সম্রাটের কি নির্দেশ?’
এর উত্তরে সম্রাট লিখলেন, ‘যদি তোমার প্রাসাদের প্রথাগত আদবকায়দা শাহজাদার
ব্যক্তিগত কক্ষে ঢুকতে বাধা দেয়, তাহলে কোন আদবকায়দায় তুমি তাকে তার চাহিদামত
কলমদানি পৌঁছে দিলে? যাইহোক, এর পরে কোনদিনই, তার ব্যক্তিগত কক্ষে সেই কলমদানিটি
রেখে আসবে না। আমি এক্ষুণি নাজিরকে একটা নির্দেশ পাঠিয়ে বলছি, যখন তার ব্যক্তিগত কক্ষের
বাইরে তার(লিখবার সরঞ্জামের) প্রয়োজন হবে, তখন তাকে সেটি দেবে, যতক্ষণ তার স্বাক্ষরকর্ম
শেষ না হয়ে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত; তার পরে নাজির সেটি তার নিজের কাছে সিলমোহরের তলায়
রাখবে। নাজির আমার মাথামোটা সন্তানকে বলবে, বহুকাল ধরে শুধরোতে তাকে পিঞ্জরাবদ্ধ
করে রাখলেও সে জ্ঞানী হয় নি, তার চরিত্র পাল্টায় নি, এবং সে নিয়মিত এই ধরণের স্পর্ধিত
অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। দূরত্ব(আমায়) (তাকে)শাস্তি দেওয়া থেকে বঞ্চিত
করতে পারবে না, (কবিতা)
এইটা পোলো বল, এইটা মাঠ,/ তুমি অবিবেচক, মুর্খ মানুষ।
মন্তব্য – ১৬৮৭ থেকে শাহজাদা মুয়াজ্জমকে বন্দী করে রাখা হয়, এবং মুক্তি পান
১৬৯৫ সালের ১৩ জুলাই। ১৬৯৬ সালে তাকে মুলতানের প্রশাসক হিসেবে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি
দুবছর থাকেন, সুবাদার হিসেবে, কিন্তু তার হিংসুটে বাবার গোয়েন্দাদের নজরের সামনে। মহলদার
মহিলা ভৃত্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদ এবং হারেমের নিয়ন্ত্রক – অনেকটা বড় পরিবারের
নিয়ন্ত্রকের মত তার কাজ। সাধারণভাবে যে মহলের নানান গোপন কথা সম্রাটের গোচর করে।
No comments:
Post a Comment