১৬-২৫ শ্রাবণ, ১৪২৩, ১-১০ আগস্ট, ২০১৬
ইংরেজি শিক্ষিত
বাঙ্গালিরা দেশিয় প্রযুক্তিকে প্রাচীন, অকার্যকর বলে দাগিয়ে দিয়েছেন। বঙ্গীয়
পারম্পরিক কারু ও বস্ত্র শিল্পী সঙ্ঘ এবং উইভার্স আর্টিজান অ্যান্ড ট্রাডিশনাল
আর্টিস্টস গিল্ড তাকে সম্মান দিতে বদ্ধ পরিকর। আমরা যারা উচ্চ শ্রেণিতে পশ্চিমি
অর্থনীতির পাঠ নিয়েছি, তারা জানি কিভাবে কৃষিতে সবুজবিপ্লব আলোচনা করতে গিয়ে দেশিয়
পদ্ধিতিকে প্রিমিটিভ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তো মেকলেবাদী
দ্বারকানাথ, রামমোহনের উত্তরাধিকারী বাঙ্গালিরা খুব গভীরভাবে বাংলায় ইওরোপিয়
প্রযুক্তির চাষ করে চলেছেন তাঁদের পলাশিজাত পূর্বপুরষদের প্ররোচনায়, নিশ্চিতভাবে
বাংলায় ইওরোপিয় প্রযুক্তির শিকড় গজাতে বাংলার প্রযুক্তিকে প্রথমে ধ্বংস(মসলিন,
সেচ, ধাতুবিদ্যা ইত্যাদি) করেছেন,জনগনের চোখে তাঁকে ব্রাত্য করিয়েছেন – এবং সেই
কাজ গতি পেয়েছে বড়পুঁজি আর বড়পুঁজি বিকশিত ঔপনিবেশিক নেহেরুবাদী বামপন্থী
অর্থনীতির রমরমায় – চেষ্টা ছিল কি করে গ্রামে পর্যন্ত বড় পুঁজি নির্ভর অর্থনীতির
প্রযুক্তির প্রবেশ নিশ্চিত করা যায়। এ নিয়ে আমরা অতীতে প্রচুর বলেছি, আরও আগামী
দিনে বলব যে মাঝে মাঝে হয়ত নানান রকম চোখে ছাই দেওয়া রকমফের করায় – যেমন একশ বছর
আগের স্বদেশি অর্থনীতি – শুধু ইওরোপিয় অর্থনীতির গর্দভের চামড়া ছাড়িয়ে দেশিয়
অর্থনীতির চামড়া প্রানো বড় পুঁজির উতপাদন ব্যবস্থা ঠাঁই পেল স্বদেশিরূপে – এবং
রবীন্দ্রনাথ থেকে সত্যজিত থেকে অমর্ত্যপন্থীরা আজও বন্দনা করেন স্বেই উতপাদন
ব্যবস্থার – যার সঙ্গে দেশিয় উৎপাদন ব্যবস্থার বিন্দুমাত্র সংযোগ নেই তাঁকে
স্বদেশি দাগিয়ে দিয়ে বিন্দুমাত্র হাত কাঁপেনা মধ্যবিত্তর। গ্রামীন অর্থনীতি নিয়ে
যে সব বিদ্যালয় কাজ করেন, বিভাগ চালান তাঁদের মূল উদ্দেশ্য হল কিভাবে দেশিয়
প্রযুক্তিকে ইওরোপিয় প্রযুক্তি দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা যায় তার নিদান দান করা আর
সরকারি দান বাগানো। ব্যাস। তবে এটাও ঠিক স্বদেশি প্রযুক্তির বাঁচা নিয়ে বড় পুঁজির
দাস মধ্যবিত্তের কেন যে উতসাহ থাকবে বুঝি না আজও আমরা কেননা আমরাই তো এখনো মধ্যবিত্তের
সাধের পৃষ্ঠপোষক বড় পুঁজির একমাত্র প্রতিযোগী।
তবুও ইওরোপপন্থী,
বড় পুঁজির দাস বিশ্বায়নী বামপন্থী, কংগ্রেসি ভাজপার দেশিয় প্রযুক্তি ধ্বংসী
অর্থনীতির বাইরেও আজও বাংলার পরম্পরার গ্রামীন অর্থনীতি, প্রযুক্তি আর উতপাদন
ব্যবস্থা শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে টিকে রয়েছে। ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার বাইরে দাঁড়িয়ে নিজের
মত করে বয়ে চলেছে সে।
তো এই দেশিয়
প্রযুক্তি আর ইওরোপিয় প্রযুক্তির বন্ধুত্বপূর্ণ মেল বন্ধন ঘটিয়ে কিছু উৎপাদন তৈরি
করার পরিকল্পনা করেছেন সুজিত আর সোফি। দুজনের যুবা, দুজনেই স্বপ্নদর্শী।
আগামী উল্লিখত
তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হবে ইওরোপ-এশিয়ার প্রযুক্তির মেলবন্ধন কর্মশালা।
প্রত্যেককে
স্বাগত।
নিচের ছবিটি
কর্মশালার স্থল ঘুরে দেখছেন সোফি-সুজয়-বিশ্বেন্দু।
No comments:
Post a Comment