Saturday, July 1, 2017

GST আর ছোটলোকেরা

আমরা গাঁইয়া উৎপাদকেরা সরাসরি GSTর বিরুদ্ধে। দিদি এতে খুব ভুল করলেন। তিনি কারোর কথায় প্রভাবিত হন এতা মানু না। কিন্তু তিনি ভুল করলেন। অমিত মিত্র দিদিকে ভুল বুঝিয়েছেন এই তত্ত্ব পাত্তা দিচ্ছি না।
GSTর বিরুদ্ধে ফেদারেলজম, সরকারের সার্বভৌমত্বে আপস করা ইত্যাদি গভীর দার্শনিক তত্ত্বগুলি ছেড়ে দিয়েই বলছি, আমরা মনে করছি পুঁজি তার মত করে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে গাঁইয়া উৎপাদন ব্যবস্থাকে - যেটা তার হাতের বাইরে ছিল এত দিন। ২০০৮এর ইওরোপিয় ধাক্কায় তারা দেখে নিয়েছে এই বাজারের জোর কতটা। ২০১৪ সালে পার্লামেন্ট হকার নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করা হয়। ফলে শহরে হকারদের রাশ এখন রাষ্ট্রের মুঠোয়। কিন্তু গাঁয়ের উতপাদকেদের কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তার দু বছর প্রে নোট বাতিলের চেষ্টায় গাঁয়ের উৎপাদন ব্যবস্থার পায়ে লোহার রড মারা হয়। কিন্তু তাদের মেরে ফেলা যায় নি। তার কয়েক মাস পরেই এল GST, আদতে কিভাবে ব্যবসা কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ করবে তার খেলা। এর অধিকাংশ শেয়ার কিন্তু বেরসরকারি কোম্পানিগুলোর হাতে রয়েছে। তথ্যগুলোর নিয়ন্ত্রণ এতদিন কর সরকারি সঙ্গঠনগুলো করত এবারে করবে সরাসরি কর্পোরেটরা। যেমন করে ১১৭৩ সালের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের সম্রাটের পক্ষে কর আদায়ের সুযোগ পেয়েছিল - এবং ছোটলোকেরা যে বাংলায় উদ্বৃত্ত অর্থনীতি তৈরি করেছিল, তা কেড়ে নিয়ে গোটা উৎপাদন ব্যবস্থাকে ভাঙ্গার জন্য ভদ্রদের কাজে লাগানো হয় - বাংলার নিজস্ব উৎপাদন ব্যবস্থার অনেকতা ভেঙ্গে দেওয়া হয় - বিদেশ থেকে কম দামি কাপড়/পণ্য এসে বাংলার বাজার দখল করেছিল এই তথ্য অনৃতভাষণ । এবারেও অবস্থা প্রায় একই।
কিন্তু তাসত্ত্বেও যেভাবে আমরা নোট বাতিল রুখেছিলাম সেটা লক্ষ্যনীয় - আমাদের সদস্যদের তার আগে পরিকল্পনা মাফিক ব্যাঙ্কে খাতা করে দেওয়া হয়। গাঁইয়া উৎপাদকেরা খাতায় কিছু টাকা রাখে বটে কিন্তু তাদের মূল লেনদেনটা হয় নগদে। ফলে ধাক্কা খেলেও তাড়াতাড়ি নানান উপায়ে টাকা বদলে নেয় তারা। কত আর টাকা তারা লেনদেন করে।
তো এবারেও কি করব তার পরিকল্পনা করতে আমরা দিনাজপুরে বৈঠকে বসছি আষঢের শেষে। দেখা যাক আমাদের সদস্যরা কোন দিকে আমাদের নিয়ে যান।
--
আপনি যে প্রশ্নটা করেছেন, ঠিক রিলায়্যান্স এবার থেকে এলাকা এলাকায় এই বিহারী/ঝাড়খণ্ডী মুদির দোকানগুলো দখল করবে। কয়েক বছর আগে হিন্দুস্থান লিভার চেষ্টা করেছিল হয় নি – কিন্তু এবারে কাজটা সহজ হয়ে যাবে – সেননা ক্রেতা-বিক্রেতাদের কেনার/পছন্দের সব তথ্য এখন GSTNএর সার্ভারে থাকবে – এবং যেহেতু এই মালিক কর্পোরেট ফিনান্স সঙ্গঠনগুলী। সেহেতু এই তথ্য নিয়ে তারা অধরা বাজার জয় করতে বেরোবে - এটা মধ্যবিত্ত/ভদ্রলোকেদের সন্তানেদের পক্ষে সুখবর। তাদের পরিবারের রোজগার বাড়বে। কন্সালট্যান্টের কাজ রাখা হয়েছে। ফলে GST নিয়ে মধ্যবিত্ত-ভদ্র-অভিজাতদের মাথা ব্যথা নেই – তাদেরই বেকার সন্তান পুনর্বাসিত হবে।

No comments: