জেমস হোলজম্যান(১৯২৫)
ভাবানুবাদ –
বিশ্বেন্দু নন্দ
প্রথম অধ্যায়
সমাজে নবোবেরা
(এই অধ্যায়টা শুরু করেছিলাম কিন্তু বাদ
রেখে গেলাম। নবোবদের উত্থানের পিছনে কারণ এবং তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছেন
হোলজম্যান, যা আমাদের লুঠের এই আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক আপাতত)
অষ্টাদশ শতকে
ইংলন্ডে প্রত্যেক মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা ছিল। একটা নির্দিষ্ট সীমার বাইরে ধনী
হওয়া বা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়াকে ভাল চোখে দেখা হত না – অবাঞ্ছিত ছিল। অভিজাতদের জোবন
নির্বাহের জন্য যতটুকু দরকার ছিল, তাকেই তাঁর সম্পদ রূপে গণ্য করা হত। আধুনিক
দর্শন অনুযায়ী সম্পদ প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ ছিল না। প্রত্যেক শ্রেণীর বিকাশের
জন্য জন্য আলাদা আলাদা রকমের সম্পত্তির পরিমান বরাদ্দ ছিল – এবং যে ব্যক্তি এই
তৈরি করে দেওয়া সামাজিক উপযোগিতার বাইরে বেরিয়ে এসে নিজের ভাগ্য নিজে তৈরি করবে,
তাকে সমাজ বাঁকা চোখে দেখবে। মধ্যযুগীয় সাধারণ জমিদারির
মত ধারনার দর্শন নিয়ে জাতি রাষ্ট্র বহুকাল ধরে জাবর কেটেছে ঠিকই, কিন্তু আদতে
সামাজিক কর্মসম্পয়াদন ভাবনা, জীবনধারণের মান, প্রতিপত্তি একসঙ্গে জুড়েমুড়ে অন্য
একটি সুউচ্চ সামাজিক অবস্থা নির্মান করত। র্যাক্সহল বলছেন একমাত্র তৃতীয় জর্জ
কাউকে ব্যবসায় অনুমতি দিতেন না। সাউথ সি আকাশকুসুম(বাবল)এর সুযোগে দেখতে পাই
প্রচুর পথের ভিখারি ধণাঢ্য আর ধণাঢ্য পথের ভিখারিতে পরিণত হয়েছে। এই আকাশকুসুমে যে
ভিখারিরা ধণাঢ্য হয়েছে বলা হয়েছে নির্ধনেরা অঅভিজাত-অভদ্র পথে ধনী
হয়েছে(আন-জেন্টলি রিচ) – এই লব্জটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। কোন জমিদার/বাড়িওয়ালা দেখছে তাঁর ভাড়াটের মেয়েটা অত্যাধুনিক
চালচলনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে, সে তখন সচেতন হয়ে তার ভাড়াটি বাড়িয়ে দিত। একমাত্র ইস্ট
ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলেই দেখা গিয়েছে পথের ভিখারি বালকটা শেষ জীবনে কোম্পানির
ডিরেক্টর পদ অলঙ্কৃত করেছে। এবারে এমন সময় এল যে সাধারণ মধ্যবিত্তের ছেলেপুলেদের
ধনী হওয়ার এবং উচ্চতর সম্মান পোয়ার পথ খুলে গেলে, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পথ ধরার
বার্তা আসতে শুরু করল।
স্থানু এবং স্তরীভূত
সমাজে হঠাৎ বড়লোক নবোবেরা কিছুটা ব্যতিক্রমী কিন্তু এক্কেবারে নতুন শ্রেণী নয়। তিনি
সাম্রাজ্যবাদের উপফল যা পুরোনো সমাজকে ভেঙ্গেচুরে দিচ্ছে। ১৭৬৩র পর থেকেই দেশ
দখলের বন্যা আর তার সঙ্গে ব্যবসার গলাজড়াজড়ির চেহারা আস্তে আস্তে খোলসা হচ্ছিল। সমাজের
নিচের তলার মানুষেরাই তাদের সম্পদ-ভাগ্য ফেরানোর কাজ শুরু করলেন। তাদের নিজেদের
কর্মক্ষমতায় তারা স্বপরিচয় তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন। ব্রিটেনে
এই যে বিপুল শ্রেণী সংগ্রাম শুরু হল, তাতে জমির মালিকানার সঙ্গে ইংলন্ডের পকেট বরোগুলোর
প্রতিনিধিত্বতেও চিরস্থায়ী বদল ঘটল। ভারত থেকে আসা নবোব, ক্যারিবিয় আখ বাগানের
মালিক, আফ্রিকার দাস মালিক, সরকারি যুদ্ধবাজ কন্ট্রাক্ট্রারেরা সঙ্কীর্ণচিত্ত এবং
কৃষি ইংলন্ডে আততায়ীর মত অনুপ্রবেশ ঘটাতে শুরু করল।
No comments:
Post a Comment