জেমস হোলজম্যান(১৯২৫)
নবোবেরা সাধারণত তাঁর এলাকার বাধ্যতামূলক সামাজিক নানান উৎসবে যোগদান করতেন।
এলাকার ঘোড় দৌড়ের মীটিঙের প্রধান হতেন এবং উপহারের স্মারকের জন্য তারা তাদের
বরাদ্দ বাধ্যতামূলক ১০ গিনি দানও করতেন। বিভিন্ন খয়রাতির দান গ্রহণের সংগঠনে তাদের
নাম জ্বলজ্বল করত। পল্ক, সেন্ট জর্জ হাসপাতালের চিরস্থায়ী গভর্নর ছিলেন। ১৭৬৮তে
তিনি ফিস্ট অব দ্য সনস অব দ্য ক্লার্জিতে অন্যতম স্টুয়ার্ট ছিলেন। রামবোল্ড,
ফারার, হেনরি ভ্যান্সিস্টার্ট এবং টমাস প্যাটল ম্যাগডালেন হাসপাতাল, লরেন্স,
ভেরলেস্ট যুক্ত ছিলেন মিডলসেক্স লাইং-ইন হাসপাতালে, স্ট্রেচি ওয়েস্টমিনিস্টার
হাসপাতালের সঙ্গে। অন্যান্য নানান সেবা কাজের সঙ্গে হয়ত বহু ভারত ফেরতের নাম যোগ
করা যায়, কিন্তু মেরিন সোসাইটি – যে কাজে গরীব ছেলেদের সমুদ্রে যেতে শেখানো হত,
সেই সংগঠনের সঙ্গে বহু নবোব স্বেচ্ছায় যুক্ত ছিলেন। ১৭৭৩ সালে সোসাইটির নতুন বাড়ির
জন্য ধরা ছিল, ৮ সেন্ট প্রতি প্যাগোডা ধরে সাড়ে ১৫৮০ প্যাগোডা, অর্থাৎ ৬৩২ ডলার ৪
সেন্ট। বাড়িটির বিশপগেট স্ট্রিটে প্রথম পাথরটি পাতার দিনে গভর্নর নিজের খরচে লন্ডন
ট্যাভার্নে খেলেন, সেখানে তার অনুগামী বন্ধুবান্ধবেরা নিজেদের খরচে স্বস্বাস্থ্য
পান করলেন এবং একজন মাদ্রাজ থেকে আসা ভারতীয় এই অর্থটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। এই
সোসাইটির কাজে যে সব বিখ্যাত ইস্ট ইন্ডিয়ান চাকুরে আর ডিরেক্টর জুড়ে ছিলেন তারা
হলেন হেনরি ভ্যান্সিস্টার্ট, এডোয়ার্ড কটসফোর্ড, টমাস ফেরের, লরেন্স সুলিভান, জন
ডোরিয়েন এবং জন পুর্লিং।
নবোবদের শহরের শহরের বাস গৃহগুলি ওয়েস্ট এন্ডের দিকে ছড়ানো ছিল। গ্রসভেনর
স্কয়ারের পাশের এলাকা মেফেয়ারে প্রচুর ভারত ফেরত থাকতেন। স্কয়ারে থাকতেন লুক
স্ক্র্যাফটন, পরে স্যর লায়নেল ডারেল, পল বেনফিল্ড। স্যর ফ্রান্সিস সাইকস থাকতেন
আপার ব্রুক স্ট্রিটে, পার্ক স্ট্রিটে হেনরি স্ট্রেচি, লোয়ার গ্রসভেনর স্ট্রিটে
স্যর সি ডবলিউ বি রাউজ। মেফেয়ারের উল্টোদিকে বন্ড স্ট্রিট-পারে ওল্ড বার্লিঙ্গটন
স্ট্রিটে থাকতেন স্যর জন কল, হ্যানোভার স্কয়ারের জর্জ স্টিটে থাকতেন জেনারেল কাইলুয়াদ।
সোহোর ড্যানিজেনসে থাকতেন লর্ড পিগো আর স্যর উইলিয়াম জেমস। পিগো আগে থাকতেন সোহো
স্কোয়ারে পরে আসেন জেরাড স্ট্রিট। সেন্ট জেমস স্কয়ারে থাকতেন নাথানিয়েল মিডলটন,
হেনরি ভেরলেস্ট, আর রিচার্ড বারওয়েল। ১৭৭০ থেকে ১৭৮১ পর্যন্ত ভেরলেস্ট থাকতেন
আজকের যেটা পোর্য়ল্যান্ড ক্লাব, তখন ৯ নম্বর ছিল। ১৭৮২-১৭৯৬ পর্যন্ত বারওয়েল।
রিচার্ড বিচার থাকতেন পোর্টম্যান স্কোয়ার আর জেনারেল রিচার্ড স্মিথ থাকতেন গ্রেট
অর্মন্ড স্ট্রিট।
লন্ডনে যে সব ভারত ফেরত থাকতেন তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য জুটতেন
জেরুজালেম কফি হাউস, ক্রাউন আর এঙ্কর ট্যাভার্নে। কোম্পানির পরের কোর্ট অব
প্রোপ্রাইটর মিটিঙের ভারত ফেরতদের কি পথ হতে পারে তা পরিকল্পনা করতে এঙ্কর
ট্যাভার্নে বসতেন তারা। কিভাবে স্টকগুলো ভাঙতে হবে(১৭৭৩এর রেগুলেটিং আইনের আগে কোম্পানির ডিরেক্টর
নির্বাচনের জন্য ৫০০ পাউন্ডের অংশিদার একটি ভোট দিতে পারতেন – তার ৫০০ পাউন্ডের
ওপরে যত কোটি পাউন্ডের অংশ থাকুক না কেন।
৫০০ পাউণ্ডের বেশি থাকা অংশিদার তার ৫০০ পাউন্ড হিসেবে ভেঙ্গে ফেলত ৫০০ পাউন্ডের
গুণিতকে কয়েকটি ভোটে এবং সেগুলিকে ডামি হিসেবে উপস্থাপিত করত। ফলে তার হাতে ৫০০
পাউন্ড রয়েছে সে ডায়রেক্টর নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বেশি সুযোগ পেত। ১৭৭৩এর পরে এই আইনটা
গিয়ে দাঁড়াল ১০০০ পাউন্ডের জন্য একটি ভোট, ৩০০০এর জন্য দুটো, ৬০০০জন্য তিনটে ভোট
আর ১০০০০ বা তার ওপরে চারটে ভোট। তাছাড়া ভোট দেওয়ার জন্য কোন অংশিদারকে তার অংশ ছ
মাসের বদলে অন্তত এক বছর ধরে রাখার নিয়ম হল। অংশ ভাগ করার যে পরিকল্পনা হত সেটা
কিছুটা হলেও রোখা গেল। কিন্তু বাস্তবে হল ১০০০০ পাউন্ডের অংশিদারি যার আছে সে
চারটি ভোট নয়, সেটিকে ১০ ভাগে ভাগ করে দশটি ভোটের মালিক হয়ে বসত।) এবং য়র্ক্সায়ার
থেকে কর্নওয়ালের শেষ পর্যন্ত নির্বাচকদের প্রার্থীদের পিছনে লেলিয়ে দিতে হয় তাও
সিদ্ধন্ত হত। বছরে ছমাস ধরে এক পক্ষ কাল পর পর বেঙ্গল ক্লাবের সদস্যরা ক্রাউন আর
এঙ্করে বসতেন, এবং তখন বহু বছরের যোগাযোগের দিরুন একটা বন্ধুত্বের অচ্ছেদ্য বন্ধন
জুড়ত।
(চতুর্থ
অধ্যায় শেষ)
No comments:
Post a Comment