Saturday, July 29, 2017

নতুন বাংলার নবোদ্যম - ওয়াপাগ বঙ্গবাসী সম্মেলন - বঙ্গবাসী কলেজ - প্রথম দিন

হারানো বাজার ফিরে পাওয়ার ডাক
চুঁইয়ে পড়া উন্নয়নের তত্ত্ব বর্জনের ডাক
(এই সম্মেলনের প্রথম দিনের নানান ঘটনা বিষয়ে তনুশ্রী দত্ত এবং প্রসূন ভৌমিক বিশদে নানান ছবি দিয়ে প্রকাশনা দিয়েছেন। তাই সেই এক বিবরণ নতুন করে না দিয়ে তাত্ত্বিক অবস্থনটা আবার নতুন করে বোঝাবার চেষ্টা করলাম।)
যাদের হাতে এক সময় উৎপাদনের রাশ ছিল, সেই ব্যবস্থা কেড়ে নিয়ে নিরন্তর কর্পোরেট উৎপাদন ব্যবস্থার জোয়াল চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে - সে কাজে কর্পরেটরা সফল হোক বা না হোক। আজও পলাশীর আড়াইশ বছর পরে বাংলা তথা ভারতের অন্যান্য অঞ্চল খুঁজে চলেছে, পশ্চিমি ধাঁচে বিকাশের অলীক মহা সড়ক।
অথচ কয়েক হাজার বছর ধরে বাংলা তথা গ্রাম ভারতের ছোটলোক উৎপাদকেরা নিজেদের দক্ষতায়, নিজেদের প্রযুক্তিতে, নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতায় বাংলা তথা ভাররতের বিভিন্ন অঞ্চলকে করে তুলেছিল বিশ্বের গন্তব্যস্থল।
১১৬৪/১৭৫৭র পরে সেই উদ্যমে ছাই পড়ল - বাংলার বৈশ্য-শূদ্র-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার সমাজের বৈদেশিক বাণিজ্যের উদ্যমটি কেড়ে নেওয়া হল বিশিল্পায়ন করে। মীর কাশিমের সময় থেকে চেষ্টা চলেছিল বাংলার ছোটলোকেদের ব্যবসা দখল করার - দশকের দশক ধরে এই দখলদারির কাজে কর্পোরেটরা সফল হলেও ইঞ্চি মেপে তারা এগোতে পেরেছে। আজও গ্রাম উতপাদনে গাঁইয়ারা ডেঁটে বসে রয়েছেন - আজও বাংলার ্পরম্পরার গ্রাম উৎপাদনের বাজার খুব কম করে ৬০ হাজার কোটি টাকা।
পলাশী থেকে ১৪১৮/২০১১ পর্যন্ত এক ধরণের কর্পোরেটমুখী গ্রাম বিকাশের আয়োজন হয়েছে - যেখানে বিকাশের কাজে সার্বিকভাবে কর্পোরেটদের তাত্বিকতার রমরমা - গাঁইয়াদের উৎপাদন ব্যবস্থাকে পিছিয়ে পড়া সেকেলে অকেজো হস্ত শিল্প বলে দাগিয়ে দিয়ে জাতীয় উতপাদনে যে তাদের কোন অবদান নেই সে কথা বোঝাবার চেষ্টা করেছে চুঁইয়ে পড়া তত্ত্ব প্রচারের মাধ্যমে। কিন্তু বাংলার নতুন সরকার নতুনভাবে বাংলাকে দেখার চেষ্টা করেছে - বাংলার বিকাশের উদ্যম নিয়েছে।
আজও ভাল ফসল না হলে কর্পোরেট জিডিপি নেতিয়ে পড়ে, ভাল বর্ষা না হলে কর্পোরেটদের মাথায় হাত পড়ে, ইওরোপিয় কর্পোরেটদের অতিলোভের নানান বিষ এশিয়ায়, ভারতে বাংলায়, ঢালার সমস্ত চাপ নীলকণ্ঠ হয়ে সামলে দেন পথের ব্যবসায়ী আর গাঁইয়া পরম্পরার উৎপাদকেরা।
---
ঠিক এই পশ্চাদপটে ওয়াপাগের বঙ্গবাসী সম্মেলনের গুরুত্ব। গিল্ডটি তৈরি হয়েছে সারা বাংলার বিপুল পরম্পরার তাঁতি, উৎপাদক এবং অভিকর শিল্পীদের একজোট হওয়ায়।
বঙ্গবাসী কলেজে তারা কাল একজোট হচ্ছেন নিজেদের হক বুঝে নিতে। আজও বহু উৎপাদক জেলা থেকে এসেছেন। কাল আসবেন প্রায় ২০০ জন। আর আসবেন ওয়াপাগের বন্ধুরা - যারা সমস্ত কিছু জ্ঞান, তাদের যোগাযোগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন গ্রাম বাংলার বিকাশে।
চিন আজ রেশম পথের রাশ ছাড়ছে। বাংলার বৈদেশিক বাজার হারানো প্রম্পরার গ্রামীনেরা আজ নতুন করে বুঝে নিতে চাইছেন তাদের হারিয়ে যাওয়া বিশ্ব বাজার।
বঙ্গবাসী সম্মেলন সেই ডাক দিচ্ছে - আমাদের হক আমরা বুঝে নেব - হারানো বাজারের রাশ আমরা জিনে নেব।

No comments: