নিজের কাজের কাছে ফিরে যাওয়া
বাংলা পরম্পরার গ্রামীন উতপাদক মধুমঙ্গল মালাকারের বাড়ির চৈহদ্দিতে অন্তত দুটি জিকা গাছ দেখলাম। এই গাছ নিঃসৃত আঠা তাঁর পূর্বজরা এবং গ্রামের মানুষ নির্বিশেষে নানান কাজে ব্যবহার করতেন বহু বহু বহ্য প্রন্ম ধরে এছাড়া বেল গাছ সহ অন্যান্য গাছের আঠাতো ছিলই।
তো বাংলার গ্রামে নানান কাজে যে সব ধরণের আঠা ঐতিহাসিকভাবে ব্যবহৃত হত (এমন কি বাড়ি তৈরি করার কাজেও) সেগুলি নিয়ে কোন এক দিন আলোচনা করা যাবে, আজ শুধু জিকা গাছ থেকে আঠা ঝরে পড়ার কয়েকটা ছবি দিলাম।
আমরা বিগত কয়েক মাস ধরে মাথা ঘামাচ্ছিলাম, আজ গ্রামের ছোট উতপাদকেরা গ্রামের মণিহারি দোকান থেকে মিলের তৈরি আঠা কিনে এনে কাজ চালান, তাতে কাজের দাম বেশি পড়ে এবং কর্পোরেটদেরও পৃষ্ঠপোষণা করা হয়, দীর্ঘস্থায়ী কাজ সম্ভব হয় না - গ্রামের সম্পদ গিয়ে জমা পড়ে কর্পোরেটদের সিন্দুকে। তো যে প্রথা ছিল সেটাকে কেন নতুন করে আবিষ্কার করি না!
প্রকৃতি মা নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছেন মানুষের কাজের নানান উপকরণ বিনামূল্যে - তার উন্মার্গগামী সন্তানদের জন্য, অকৃপন ভাবে মমতাভরে। উৎপাদকেরা তা এক সময়, তাঁদের মায়ের দেখানো পথে সেই দানগুলি নির্বিবাদে ব্যবহার করেছেন। ব্রিটিশ এবং ততপরবর্তীকালে তাঁদের স্বার্থরক্ষার কাজে নিবেদিত ইংরেজিশিক্ষিত শাসকেরা সব কিছুকে পণ্য ভাবানোর ভাবনা ভাবাবার আগে কি করে ভারতীয়রা এই কম মূল্যে বিশ্ব বাজারে তাঁদের উতপাদন সরবরাহ করতেন, তার কুড় খুঁজেপেতে ঐতিহাসিক, গবেষকেরা মাথা কুটে মরেছেন, উদ্ভাবনী শক্তি দেখিয়ে নানান বাহারি তত্ত্ব পেশ করেছেন - একবারও গ্রাম বাংলার ঘুরে দেখেন নি কি সাধারণ কিন্তু অসাধারণ প্রাকৃতিক ধনসম্বলকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের সম্পদকে বাঁচিয়ে গিয়েছেন উত্তরকালের জন্য - শুধু প্রকৃতিমায়ের দান স্বীকার করেছেন নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা বিকাশের জন্য।
তো মোটামুটি ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে আপাতত জিকা গাছের গঁদ ব্যবহার করব আমরা, আমাদের নানান কাজে। সেগুলি সংগ্রহ করার উদ্যম নেওয়া হচ্ছে।
জয় হোক বাংলার পথএর।
জয় হোক বাংলার গ্রামীন প্রযুক্তি!
জয় বাংলা, জয় গ্রাম বাংলার জ্ঞানচর্চা!
বাংলা আমার মা!
জয় হোক বাংলার গ্রামীন প্রযুক্তি!
জয় বাংলা, জয় গ্রাম বাংলার জ্ঞানচর্চা!
বাংলা আমার মা!
No comments:
Post a Comment