পার্থ পঞ্চাধ্যায়ী, বিশ্বেন্দু নন্দ, এবং কলাবতী মুদ্রার নথিকরণ দল
*** মুঘল আডমিনিস্ট্রেশন
*** এনেকডোটস অফ আওরঙ্গজেব
*** লাইফ অব মীর জুমলা
*** উনবিংশ এবং বিংশ শতে রাষ্ট্র এবং দেশজ চিকিৎসা ব্যবস্থা ১৮০০-১৯৪৭
*** ইন্ডিয়ান টিচার্স অব বুদ্ধিস্ট ইউনিভার্সিটি
*** দ্বিতীয় ইতিহাসঃ লুঠেরা ইংরেজ, সাথী মধ্যবিত্ত, সাংস্কৃতিক গণহত্যা আর গ্রামীন স্বাধীণতা সংগ্রাম
বহুদিনের চেষ্টায় কয়েকটি বই অনুবাদ করলাম
মুঘল আমল বোঝার ক্ষেত্রে তিনটি বই -
যদুনাথ সরকারের
১) মুঘল আডমিনিস্ট্রেশন - যেখানে আচার্য মুঘলদের অনুসৃত প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্পষ্ট ভাবে বিবৃত করেছেন - মুঘলদের সম্বন্ধে নানান ধরণের ভুল ধারণা এই বইটি দূর করতে সাহায্য করবে। এ ছাড়াও ব্রিটিশ আমলে দুর্বিসহ অবস্থায় পড়ার আগে, সব থেকে বেশি লালন পালন পেত দুটি পেশা কৃষক আর কারিগর - কারণ তারা জানতেন এরা মুঘল সাম্রাজ্যকে খাওয়ায় পরায়।
২) আনেকডোটস অফ আওরঙ্গজেব – আওরঙ্গজেবের উপাখ্যান - হামিদুদ্দিন খাঁ বাহাদুরের রচনা। আচার্য যদুনাথ সরকারের আহকমইআলমগিরির ইংরেজি অনুবাদের বাংলা অনুবাদ - এতে বাদশা আলমগিরের পারিবারিক, বৈদেশিক যোগাযোগ, তার কঠোরতা-কোমলতা, তার অনন্যতা, তিন ভায়ের মধ্যে তার বীরত্ব কাহিনী এবং মুঘল রাজত্বের নানান সুস্বাদু অজানা কাহিনী - যা মানুষটাকে নতুন করে, নতুন ভাবে চিনতে সাহায্য করবে।
৩) জগদীশ নারায়ণ সরকারের, লাইফ অব মীর জুমলায় আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার দাক্ষিনাত্যের প্রশাসন, তার বিপুল হীরের খনি, ইওরোপিয়দের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, সুজার বিরুদ্ধে আক্রমনে বাংলায় নৌকোর রণনীতি সজ্জা - যে খান থেকে ব্রিটিশদের পন্টুন ব্রিজের ধারণা চুরি এবং সব শেষে অসম আক্রমণ ও মৃত্যু। ঔরঙ্গজেবের সময় দাক্ষিনাত্য এবং বাংলা-অসমের উদ্বৃত্ত অর্থনীতির ঝলক পাওয়া যায় এই বইটিতে।
ওপরের এই তিনিটি বই আমদের দেখায় ব্রিটিশ সময়ের আগে বাংলার নানান এলাকার অবস্থা। আমাদের কাজ যেহেতু বাংলার লুঠ এবং পলাশীর আগের বৈশ্য-শূদ্র-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার পরম্পরার সমাজ যে উদ্বৃত্ত বাংলা তৈরি করেছিল, তাকে জানা, সেহেতু আওরঙ্গজেবের আশেপাশের সময় জানা এবং জানানো খুব প্রয়োজন ছিল। অব্যবহিত ব্রিটিশপূর্ব সময় জানা বোঝা না গেলে এই কর্পোরেট ব্যবস্থার বদলে কোন উৎপাদন ব্যবস্থা কেন চাইছি, কেন আমরা বারবার বলছি ১১৬৫/১৭৫৭র আগে আমরা ফিরে যেতে চাইছি সে তত্ত্বটা বোঝানো সম্ভব নয়।
এ ছাড়াও মুঘল আমল শেষে ব্রিটিশ আমলের শুরু থেকে ভারত ভাগ পর্যন্ত
৪) পুনম বালার উনবিংশ এবং বিংশ শতে রাষ্ট্র এবং দেশজ চিকিৎসা ব্যবস্থা ১৮০০-১৯৪৭
পুণম বালা গবেষণার কাজটা করেছিলেন ব্রিটিশ বাংলার চিকিৎসা ব্যবস্থা বিষয়য়ে সেটা জানা প্রয়োজন ছিল, কারণ সে সময় আয়ুর্বেদ চিকিৎসা ব্যবস্থার কি হালত ছিল। করে, কখন রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় পশ্চিমি চিকিৎসা ব্যবস্থা থানা গেড়ে বসল, তা জানাটাও জরুরি ছিল যেহেতু আমরা দেশজ চিকিতসা ব্যবস্থা প্রসারে উৎসাহী।
আর ইসলামি আমলের আগে ভারতে আর তিব্বতে বাংলা তথা ভারতীয় শিক্ষাবিদ আর বিশ্ববিদ্যালয়
৫) ফণীন্দ্র নাথ বোসের ইন্ডিয়ান টিচার্স অব বুদ্ধিস্ট ইউনিভার্সিটি
প্রায় অর্ধেক অনুদিত হয়ে রয়েছে
ফনিন্দ্রনাথ বোসের বইটা খুব জরুরি এই কারণে ১৮৩৬ সালের উইলিয়াম এডাম শিক্ষা সমীক্ষায় আমরা দেখতে পাচ্ছি গ্রামে অনুচ্চবর্ণই প্রধাণত এই শিক্ষা ব্যবস্থার ধারক-বাহক ছিলেন। ফলে তার আগের প্রাতিষ্ঠনিক বৌদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থাটা কেমন ছিল সেটা জানাও জরুরি। এছাড়াও এডাম সমীক্ষায় জনগণের সমীক্ষা ছিল বিকেন্দ্রিভূত - অথচ রাষ্ট্র দ্বারা পোষিত বৈদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা যে চরম কেন্দ্রিভূত ও রাজানুগ্রাহি ছিল সেটাও আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
---
এছাড়াও
দ্বিতীয় ইতিহাসঃ লুঠেরা ইংরেজ, সাথী মধ্যবিত্ত, সাংস্কৃতিক গণহত্যা আর গ্রামীন স্বাধীণতা সংগ্রাম
এখানে বাংলার লুঠ, পলাশীর পর স্বাধীনতার লড়াই, নবজাগরণকে নতুন করে দেখা, সাংস্কৃতিক দাসত্ব ইত্যাদির চেষ্টা করা হয়েছে।
---
অনুবাদের সময় ফেসবুকে যারা এই নালায়ককে প্রতিনিয়ত সঙ্গ দিয়েছেন, যারা এই পল্লবগ্রাহীকে টেনে শেকড়ে গুঁজে রাখতে পেরেছেন তাদের অসম অধ্যাবসায়ে, তাদের সক্কলকে আমার শ্রদ্ধাভরা প্রণাম, ভালবাসা। যারা এগুলি পড়ে মন্তব্য করেছেন, যারা পড়েন নি, যারা অযাচিতভাবে আমার ভুল শুধরে দিয়েছেন, তাদের সক্কলকেই আমার প্রণাম সালাম।
সক্কলে সুস্থ থাকুন। আর মাঝে মাঝে আমাদের মাথায় হাত রাখুন।
অলমিতি।
No comments:
Post a Comment