এমত সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা একজন শিক্ষিত সাংস্কৃতিককর্মী, ব্রিটিশ
আমল থেকেই শিখে ফেলেছে, ইয়োরোপের সংস্কৃতি, সে নিজে, চাকুরি, তার বড় কর্তা আর তার
কাজের জগতই বাস্তব - তার বাইরে সব ফোক, ট্রাইবাল – হয় সংরক্ষন যোগ্য, নয় বধযোগ্য।
এরা তার ফিল্ডের সাবজেক্ট। তাদের দুঃখ, দারিদ্র আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে, নিজের
দেশের ক্ষেত্র সমীক্ষার এলাকাকে সে চিহ্নিত করে। রিপোর্ট লেখে তার আন্তর্জাতিক
ভাষা, ইংরেজিতে। নৃতত্ববিদের অনুকরনে সে নিজেকে, নিজের সমাজ থেকে আলাদা করে নিয়ে,
নানান লোকসংস্কৃতির ক্ষেত্র সমীক্ষায় যায়। ইয়োরোপের প্রতিনিধি হিসেবে সে যে
যাচ্ছে, সে তত্ব সে হয়ত ভুলেছে। এখন সে এটিকে নিজের সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে মনে
করে।। মুখ, চোখ, করোটির মাপ নেয়, প্রায় না দেখা সংস্কৃতির হাল হদিশ করে। ইয়োরোপের
সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে, কোনও একটা নির্দিস্ট বিষয় নিয়ে সে ‘কাজ’ করে
বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠে। সে যতটুকু দেখে, তার বাইরে তার নিজের দেশের আরও বিশাল পৃথিবী
তার কাছে অধরা থেকে যায়। যোগ হয় বিদ্যালয়ে, মহাবিদ্যালয়ে বা নিজে থেকেই
স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে পড়া সমাজতত্ব বিষয়ে নানান পশ্চিমী ভাবুকদের পথ নির্দেশ। তার
দেখার বাস্তবের বাইরে, নিজের দেশে, আর যে সব কিছু রয়েছে, তাকে সেই তত্বসংস্কৃতির
সঙ্গে জুড়ে, তার মনের মত করে, গড়ে তোলে বিশেষ এক সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতির ধারণা।
সেই ধারনাযুক্ত অর্থনীতি তাকে ভাবিয়েছে চাহিদা সমান প্রগতি, সমান উন্নয়ন সমান শিল্পায়ন।
গাঁয়ের লোকেরা প্রিমিটিভ পদ্ধতিতে চাষ করে। পিছিয়ে পড়া চাষের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে যে
সংস্কৃতি তাই লোক বা আদিবাসী সংস্কৃতি। যার চাহিদা নেই সে হয় গরীব। সে জানে গ্রামে
শুধুই চাষ হয়। গ্রামের মানুষ অশিক্ষিত, গেঁয়ো ইত্যাদি। তাদের এলাকায় শিল্পায়ন বা
শিল্পায়িত সংস্কৃতির সঙ্গে যোগ ঘটিয়ে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে আসার প্রাণপণ চেষ্টা
করে। তার নিজের দেশের, গ্রামের ‘দূরের’ ‘অগম্য’ এবং ‘প্রান্তিক’ লোকসংস্কৃতি,
যেহেতু প্রাচীন, সেটি সংরক্ষনযোগ্য এবং উন্নয়নের কাজে আড় হয়ে দাঁড়ালে নির্বিচারে
বধযোগ্য। ইয়োরোপের তৈরি করে দেওয়া, লোকসংস্কৃতি যে লুপ্তপ্রায়, সে বিষয়ে সে অনেকের
থেকে অনেক বেশী জানে। শহরে কোনও একটি আঙ্গিক দেখলে মন্তব্য করে, এখনও টিকে রয়েছে?
এবার সত্যিই সেই শহুরে
সংস্কৃতির প্রতিনিধি হিসেবে আমি, আমার ফিল্ড, বাংলার দিনাজপুরে একটি লুপ্তপ্রায়
সংস্কৃতির কথা বলব। একটি প্রায় অজানা পুতুল নাচ। যে চারটি ধারার কথা আগে বলাগেল,
তার বাইরে আরও একটি ধারা অন্ততঃ ৩০ বছর আগেও বাংলার বীরভূম, বর্ধমান, বাঙ্কুরাসহ
অন্যান্য জেলায় টিকে ছিল। আজ মাত্র একজন সংস্কৃতি কর্মী সেটিকে অবলুপ্তির করাল
গ্রাস থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। সেই সংস্কৃতি প্রকাশভঙ্গীর নাম চদর বদর আর সেই
শিল্পীর নাম ডমন মুর্মূ। সাকিন উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার-কালিয়াগঞ্জ রাস্তায় পতিরাজ
হাটের কাছে মহানন্দপুর গ্রাম। কিন্তু চারটে
পুতুলনাচের আঙ্গিকের বাইরে এই পুতুল নাচের আঙ্গিকটি খুব বেশী আলোচনায় আসে নি।
বোলপুর শান্তিনিকেতনে যে চদর বদরটি রয়েছে, সেটি কিন্তু ঝাড়খণ্ডের। যতদূর সম্ভব
দুমকা জেলার। বাংলার সাঁওতাল সমাজ খুবই সংগঠিত, কিন্তু আজ সমগ্র সমাজের মাত্র একটিজন
ছাড়া, বাংলার সমগ্র সাঁওতাল সমাজ যেমন পাঞ্ছি বোনা ভুলেছে, যেমন লোহা তৈরির কাজ
ভুলেছে, তেমনি ভুলেছে চদর বদর নাচানো। Lokfolk লোকফোক forum of folk লোক tribal আদিবাসী culture সংস্কৃতি of West Bengal পশ্চিমবঙ্গ, বাংলা. LOKFOLK is Bengal বাংলা India's ভারতের traditional পারম্পরিক knowledge system জ্ঞানভাণ্ডার, history ইতিহাস, Indigenous technology প্রযুক্তি. We have two mass bodies গনসংগঠন Bongiyo Paromporik Kaaru O ও Bastro Shilpi Sangho; Bongiyo Paromporik Aavikaar Shilpi Sangho. Journal পত্রিকা, PARAM, পরম. Picture - KaaliKaach কালিকাচ, Dinajpur দিনাজপুর, Madhumangal মধুমঙ্গল Malakar মালাকার
Monday, October 7, 2013
কেন সাঁওতাল সমাজের চদর বদর নিয়ে আলোচনা করব২?, Why to discuss Chadar Badar, the puppet of santhals2
লেবেলসমূহ:
chadar badar,
puppet,
Santhal,
চদর বদর,
পুতুল নাচ,
সাঁওতাল সমাজ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment