(ভূমিকা - প্রাচীন বাংলায় লোহা তৈরির ইতিহাস নিয়ে খুব একটা কাজ হয় নি বললেই চলে। ১৯০৭
সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত এই মোনোগ্রাফটি সেই কাজের শূন্যস্থান অনেকটা পূরণ
করেছে। তবে পাঠকদের মনে রাখতে হবে, লেখক যে বাংলার কথা বলছেন সেটি অবশ্যই ব্রিটিশ
বাংলা অর্থে বাংলা সুবা। এই বইটি থেকে আমরা নিজেদের জন্য প্রযোজনীয় অধ্যায় বেছে
নিয়েছি। সেই সঙ্গে সেই অধ্যায়গুলোর সব তথ্যই যে আমরা অনুবাদ করেছি তাও নয়।
সম্পাদকেদের যতটুকু মনে হয়েছে, এই সংখ্যায় যতটুকু তথ্য প্রয়োজনীয় ততটুকু তথ্যই
ব্যবহার করা গিয়েছে। আমাদের এই খন্ডে এই বইটি দুটি কাজ সম্পন্ন করছে। প্রথমতঃ এক
নজরে উৎসুক পাঠকের জন্য এটি বাংলা সুবার লোহা, ইস্পাত শিল্পের ইতিহাসের একটি
বিহঙ্গ দৃষ্টি তৈরি করে দেয়। দ্বিতীয়তঃ বাংলার গ্রামের কামারশালগুলো নিয়েও এটি
বিশদে আলোচনা করেছে। আমরা লেখকের সেই প্রতিবেদন টুকুও কামারশালের ছবি-প্রতিবেদনের
বর্ননায় ব্যবহার করেছি। এই বইএর শেষে অনেকগুলি ছবি এবং হাতে আঁকা চিত্র জোড়া
রয়েছে।)
১৫০ খৃস্টপুর্বাব্দ থেকে ৪০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তৈরি উদয়গিরি(১৫০
খৃস্টপুর্বাব্দ), বুদ্ধগয়া(১০০ খৃস্টপুর্বাব্দ – ১০০ খৃস্টাব্দ) বা অমরাবতী(৩০০ -
৪০০ খৃস্টাব্দ ) মন্দিরগুলোর প্রচুর পাথর খোদাই মুর্তি দেখতে পাই যাদের হাতে নানান
ধরণের লোহার অস্ত্র রয়েছে। ...৬০০ খৃস্টাব্দে তৈরি ভুবনেশ্বর এবং ১২৩৭ খৃস্টাব্দের
কোণার্ক মন্দির এখনও পর্যন্ত অপরূপভাবে, বিকৃত না হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। রাজা
রাজেন্দ্রলাল মিত্র অ্যান্টিকুইটিজ় অব ওড়িশায় মন্দিরগুলির বিশদ বর্ননা দিয়েছেন।
এই মন্দিরগুলির ভাষ্কর্যে পাওয়া শস্ত্রগুলির সঙ্গে অন্যান্য দেশের শস্ত্রের তুলনা
টানা একটি আনন্দদায়ক কাজ হতে পারে। ...তবে আমার মনে হয় ভাষ্কর্যগুলো থেকেও আরও
গুরুত্বপুর্ন বিষয় রয়েছে।
কোণার্ক(ব্ল্যাক প্যাগোডা) তৈরি করতে বিশাল বিশাল লোহার স্তম্ভ ব্যবহার
হয়েছে। যদিও ফার্গুসন এটিকে নবম শতের মন্দির বলছেন, পরে স্টার্লিংএর সুত্রে জানা
গিয়ছে এটি তৈরির নির্দিষ্ট তারিখ। মন্দিরের সামনে, পুর্ব দিকে, বিশাল বিশাল পাথরকে
ধরে রেখেছে ২৩ ফুট সাড়ে এগারো ইঞ্চির মোটা একটি লোহার বার(কড়ি)। মন্দিরের জগমোহনের
ছাদটিকে ধরে রাখতেও ব্যবহার হয়েছে লোহার কড়ি। ফার্গুসন, হিস্টোরি অফ আর্কিটেকচারের
৪২৮ পাতায় বলছেন, ‘ইন্টার্নালি দ্য চেম্বার্স ইজ সিঙ্গুলার্লি প্লেন, বাট
প্রেজেনটস সাম কন্সট্রাক্টিভ পিকিউলিয়ারিটিজ ওয়ার্থি অব এ্যাটেনসন। অন দ্য ফ্লোর
ইট ইজ আবাউট ৪০ ফিট স্কোয়ার অ্যান্ড দ্য ওয়াল সাইজ প্লেন টু অ্যাবাউট দ্য সেম
হাইট। হিয়ার ইট বিগিনস টু ব্রাকেট ইনওয়ার্ডস, টিল ইট কন্ট্রাক্টস টু অ্যাবাউট ২০
ফিট, হয়ার ইট ওয়াজ় সিইল্ড(ceiled) উইথ আ ফ্ল্যাট স্টোন রুফ, সাপর্টেড বাই রট আয়রন
বিমস ...শোইং আ নলেজ় অব দ্য প্রোপার্টিজ অ্যান্ড স্ট্রেংথ অব দ্য মেটিরিয়াল দ্যাট
ইজ রিমার্কেব্ল ইন আ পিপ্ল হু আর নাউ সো আটার্লি ইনক্যাপেব্ল অব ফোর্জিং সাচ
মাসেস। দ্য এমপ্লয়মেন্ট অব দিজ় বিমস হেয়ার ইজ আ মিস্টিরি। দে ওয়ার নট নিড ফর
স্ট্রেংথ, অ্যাজ দ্য বিল্ডিং ইজ় স্টিল ফার্ম আফটার দে হ্যাভ ফলেন, সো এক্সপেন্সিভ
আ ফলস সিলিং ওয়াজ নট ওয়ান্টেড আরকিটেকচারিলি টু রুফ সো প্লেন আ চেম্বার। ইট ডিমস
টু বি অনলি অ্যানাদার ইন্সট্যান্স অব দ্য প্রোফিউসন অব লেবার হুইচ দ্য হিন্দুজ়
লাভড টু ল্যাভিশ অন দ্য টেম্প্লস অফ দেয়ার গডস।’ ...আমার মনে হয় এই লোহার কড়িটি
নিয়ে আমাদের বিশদে আলোচনা এবং পরীক্ষা করা প্রয়োজন রয়েছে। আমি জানিনা, কোন
যুক্তিতে ফার্গুসন এটিকে রট আয়রন বললেন, কেননা এই লোহার কোনও অংশ রাসায়নিকবা ভৌত
পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। মনে রাখা দরকার দিল্লির প্রখ্যাত
লোহার স্তম্ভ, হয়ত এই কড়ির বয়সী বা তুলনায় আরও অনেক পুরোনো হতে পারে।
আয়রন অ্যান্ড স্টিল ওয়ার্ক ইন দ্য প্রভিন্স অব বেঙ্গল - আ মোনোগ্রাফ, ই আর ওয়াটসন, ১৯০৭, Iron & Steel Works in the province ob Bengal - a monograph, E R Watson, 1907 থেকে
No comments:
Post a Comment