সম্প্রতি কবিকঙ্কণ চণ্ডী পড়লাম। ১৪৬৬ শকাব্দে (১৫৪৪ সালে) লেখা এই উপন্যাসের তিনটি অংশে - প্রথমে দেব খণ্ড, পরেরটি আখেটিক খণ্ড শেষটি বণিক খণ্ড - শেষ দুই খণ্ড এমন কিছু রচনা রয়েছে, তা উল্লেখ্য - কেননা বাংলার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। সে সময়ের বাংলার সামাজিক বিবরণ এই লেখা থেকে পাওয়া যায়।
কয়েকটি পোষ্ট আগে আমি লিখেছিলাম সাধুর পিতার শ্রাদ্ধে এই বেনেরা উপস্থিত হন - আদতে সেটি একটি পরোক্ষ সূত্র থেকে নেওয়া। কিন্তু চন্ডী পড়তে গিয়ে দেখা গেল সেটি আদতে খুল্লনার পাত্র নির্বাচনে জনার্দ্দন পণ্ডিতের নিদান।
অন্যের দেওয়া তথ্য নির্ভর করে ভুল করেছিলাম - কেননা চণ্ডী আমার হাতের কাছেই ছিল। তার প্রায়শ্চিত্ত করলাম চণ্ডী থেকে আমার পছন্দসই অন্ততঃ দশ পাতা নকল করে।
অন্যের দেওয়া তথ্য নির্ভর করে ভুল করেছিলাম - কেননা চণ্ডী আমার হাতের কাছেই ছিল। তার প্রায়শ্চিত্ত করলাম চণ্ডী থেকে আমার পছন্দসই অন্ততঃ দশ পাতা নকল করে।
এই পর্বে জনার্দ্দন পণ্ডিত রাঢ বাংলার বণিক পরিবার ছেনে ধনপতিকে খুজে দিচ্ছেন খুল্লনার পিতাকে।
সেই পঙক্তি হতে প্রাসঙ্গিক কয়েক লাইন তুলে দেওয়াগেল।
আগামি দিনে কবিকঙ্কণ চণ্ডী থেকে আরও কিছু সামাজিক বক্তব্য তুলে দেওয়া যাবে।
এটি ধনপতি সদাগরের উপাখ্যান থেকে নেওয়া।
এমন
বচন শুনি দ্বিজবর বলে বাণী
শুন লক্ষপতি সদাগর।
যত
আছে গন্ধ বেণে, সব দেখই মনে গণে,
খুল্লনার যোগ্য নাহি বর।
যেবা
চাঁদ সদাগর, তাঁর নাতি আছে বর
যার ঘর চম্পক নগরী।
তাঁর
সনে কৈলে কাজ, সভাতে পাইবে লাজ,
জাতি নাশ কৈল বিষহরি।।
বর্দ্ধমানের
ধূস দত্ত, যার বংশে সোম দত্ত
মহাকুল বেণের প্রধান।
বাশুলীর
প্রতিদ্বন্দ্বী, দ্বাদশ বৎসর
বন্দী
বিশালক্ষী কৈল অপমান।।
মহাস্থান
সাত গাঁ, যথা বৈসে রাম দাঁ,
তাঁর শুন কুলের বাখান।
মড়ায়
পূর্ণিত বাড়ী, বাসা দিয়া লয় কড়ি
তাঁর ঘর শ্মশান সমান।।
হরি
দত্ত বড়সুলে তব সম নহে কুলে
রাজা তাঁর কইল অপমান।
ফতেপুরে
রাম কুণ্ডু, সে বেটা লুণে ভণ্ড
সে নহে তোমার সমান।।
করজ্জনার
হরি লা, নাহি পোষে বাপ মা,
প্রভাতে না করি তাঁর নাম।
ভাল্লকির
সোমচন্দ, সে জন কোপোত ছন্দ
ভিক্ষা পথে শূন্য তার ধাম।।
No comments:
Post a Comment