গৌরচন্দ্রিকা
Introduction
“The whole experience of buying fast food has become
so routine, so thoroughly unexceptional and mundane, that it is now taken for
granted, like brushing your teeth or stopping for a red light. It has become a
social custom as American as a small, rectangular, hand-held, frozen, and
reheated apple pie.”
বইটির এই একটি উক্তি দিয়েই এরিক স্ক্লোসারএর গোটা ফাস্ট ফুড নেশনকে ব্যাখ্যা করা যায়, কেমন করে আমেরিকার গৃহস্থের জীবনে পরতে পরতে জড়িয়ে গিয়েছে ফাস্ট ফুড বা চটজলদি খাবার। এরিক তার বইটির মুখবন্ধ রচনা করছেন কলোরাডোর, কলোরাডো স্প্রিংএর চেইনি পাহাড়ের বর্ণনায়। কোনও ভ্রমণকারীর চোখে, চেইনি যে কোনও পাথুরে পাহাড়ের মতই দেখতে অতীব সুন্দর। কাঁকুরে, ছিরিছাঁদহীন সৌন্দর্যে ভরা পাহাড় শ্রেণী।
কলোরাডো প্রসঙ্গে অনেকেরই মনে পড়বে ছোটবেলায় দেখা ম্যাকানাজ় গোল্ড সিনেমার কথা। ম্যাকানাজ় গোল্ড, সেই সব সিনেমার মধ্যে অন্যতম, যে সিনেমায়, হলিউড, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরবর্তীকালের বিশ্বজোড়া মানুষদের, রেড ইন্ডিয়ানদের খুন করাকে বৈধতা দেওয়ার ভাষা তৈরি করে। ম্যাকানাজ় গোল্ড
সিনেমায়, সাদা মানুষেরা সোনা খুঁজতে গিয়ে, ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে কলোরাডোর রেড ইন্ডিয়ানদের মেরে ফেলে। এবং আমরা বারবার এই সেনেমা দেখে সেই তত্বের বৈধতা প্রদান করি, আমাদের দেশে উন্নয়নের জন্য উচ্ছেদকে যথেষ্ট পরিমানে বৈধতা দিই।
গত সহস্রাব্দের শেষ শতকের পাঁচের দশক থেকেই এই কলোরাডো পাহাড়ের গর্ভে লুকিয়ে রয়েছে উত্তর আমেরিকার বিশালকায় বিমান বাহিনীর মূল দপ্তর। ঠাণ্ডা যুদ্ধের আবহে এই বিশাল বিমান কমান্ড তৈরি হয়েছিল। সরকারের ধারনাছিল, তাদের অন্তরীক্ষ প্রতিরক্ষাকে বৈদেশিক আক্রমন থেকে বাঁচাতে পাহাড়ের গর্ভে ঢোকা প্রয়োজন। পাহাড়ের পেট চেঁচে বার করে সেই গর্ভে ১৫টা তিনতলা বাড়ি তৈরি হয়েছে। যেখানে রোজ ১৫০০ প্রতিরক্ষা কর্মী কাজ করেন। এই সেনা কমান্ড যেন কি নেইএর দেশ। রয়েছে নিজেদের ক্যাফেটেরিয়া, সেলুন, জিমসহ একটি উপাসনাঘরও। কিন্তু যখনই কর্মীদের কিছু নতুন খাওয়ার শখ ওঠে তখন ডাক পড়ে হয় ডমিনো পিৎজার বা ভুমিতলের শহরের কোনও চটজলদি খাবারের দোকানের। খুনসুটি করে এরিক বলছেন, যদি কোনোদিন ভবিষ্যতে আমেরিকা আক্রান্ত হয়, তাহলে তারা চেইনি পাহাড়ে আমেরিকিয় সভ্যতার কিছু অতীব গুরুত্বপূর্ণ হতিয়ারের নিদর্শন, “Burger
King wrappers, hardened crusts of Cheesy Bread, Barbeque Wings bones, and the
red, white, and blue of a Domino’s pizza box.” উপহার পাবে।
আদতে যে বাস্তবটা আমাদের সামনে হাঁ করে খুলে দিয়েছেন এরিক, তাতে দেখছি উচ্চ শিক্ষা, কম্পুটার বা আমেরিকার ফ্যাশন বড় গাড়ি কেনার তুলনায় অনেক বেশি গড় আমেরিকার নাগরিক(কেননা গ্রাম বলে কিছু নেই) খরচ করেন চট জলদি খাবার কেনায়। তিনি হিসেব দিচ্ছেন, “On any given day in
the United States about one-quarter of the country’s adult population
visits a fast food restaurant.” ভয়াবহ বললেও অত্যুক্তি হয় না। এই কারনেই যে, গত সহস্রাব্দের চারের দশকের আগে, আমেরিকার মত এত বড় দেশকে, চটজলদি খাবার খেয়ে ফেলতে পারে নি। তার পরেই হঠাৎই যেন কয়েক দশকে গড় আমেরিকার নাগরিকের খাওয়ার অভ্যাসটাই পাল্টে গেল। চটজলদি খাবার “not only transformed
the American diet, but also out landscape, economy, workforce, and popular
culture.”
এরিক বই শুরু করেছেন চেইনি পাহাড়ের গল্প দিয়ে। সেটি শুধু ত্র্যস্ত আমেরিকার ছবি দেখাতে নয়, তিনি চেইনির সঙ্গে তুলনা করছেন চটজলদি খাবার-বেচু কর্পোরেটদের। কেন? তার জবানিতেই শুনুন, এই দুটি ক্ষেত্র “conceal remarkable
technological advances behind an ordinary-looking facade.” প্রাযুক্তিক প্রয়োগকে সাধারন মুখোশে লুকিয়ে, বাইরে পাহাড়ের সাধারণ পাথুরে দৃশ্যকে ফুটিয়ে রেখেছে এরা। এরিক কলোরাডো শহরকে বইটির মুখড়ায় তুলে এনেছেন, এবং লেইট মোটিফের মত করে, চক্রবত, বার বার তুলে আনেন এই শহরের বিকাশকে, এই বইএর নানাক্ষণে। কেন না,
কলোরাডো শহরের বিকাশিক পরিবর্তনে সবার আগে চোখে পড়ে চটজলদি খাবার শিল্প। গত কয়েক দশকে শহরের জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় দুগুণ, এবং সে সময়ে রকি মাউন্টেন আমেরিকার সব থেকে বিকাশশীল এলাকাগুলোর মধ্যে সবার আগেছিল, “the Rocky Mountain
region as a whole has the fastest-growing economy in the
United States, mixing high-tech and service industries in a way that may define
America’s workforce to come.”
এরিক বলছেন বইটি লিখতে গিয়ে তিনি এধরনের প্রচুর খাবার খেয়েছেন। তিনি বলছেন, এই চটজলদি খাবারকে তিনি নাকউঁচু করে বা নৈতিকতার দৃষ্টিভঙ্গিতে সমালোচনা করছেন না, বরং এই ব্যবসাটা হঠাতই বাড়বাড়ন্ত হল কেন তা বোঝার চেষ্টা করছেন। তার সমালোচনা আমেরিকার একটি গড় শিশুর স্বাস্থ্য বা তার পুষ্টির বিষয়ে। তিনি দাবি করছেন এই খাবার খেয়ে শরীর যথেষ্ট পুষ্ট হয় না। এবং যে কর্মীরা এই খাবারগুলো তৈরি করেন তারাও আমেরিকার অপুষ্টির শিকার এই শিশুদের থেকে বয়সে খুব একটা বড় নয়।
তিনি মনে করছেন একজন গড় আমেরিকার নাগরিক তিনটি কারনে চটজলদি এই খাবারের দিকে অনেক বেশি করে ঝুঁকছেন। কেননা এই খাবারগুলি ১। খেতে ভাল, ২। দামে কম, ৩। সুবিধের।
No comments:
Post a Comment