চতুর্থ অধ্যায়
সুবাগুলির প্রশাসন৫
৪। ফৌজদার এবং তাঁর
দায় দায়িত্ব
সাধারণ শান্তি বজায়
রাখা এবং প্রশাসনিক কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য সুবাদারের সাহায্যকারী হিসেবে থাকতেন
ফৌজদারেরা। এই আধিকারিকেরা সুবার বিভিন্ন মহকুমার(সাবডিভিশন)
দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন, এঁরা খুব
সভ্য হতেন, জমিদারদের হিসাবপত্র পরীক্ষায় চৌকস হতেন, এবং তাঁরা রাষ্ট্রের বিপুল
সংখ্যক রাজস্ব জোগাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হতেন, এবং তাঁরা শেষ পর্যন্ত কিন্তু শহরেই
বাস করতেন।
যখন কোন নতুন ফৌজদার
চাকরিতে বহাল হতেন, তিনি কি নীতি অনুসরণ করবেন এবং তাঁর ব্যবহার কি হবে সে
সম্বন্ধে তাকে এই উপদেশগুলি দেওয়া হতঃ-
‘ফৌদারকে সাহসী হতে
হবে এবং সেনাদের সঙ্গে মধুর ব্যবহার করতে হবে। তুমি এমন বাহিনী তৈরি করবে, যে
বাহিনীতে একমাত্র যারা সাহসী বলে জ্ঞাত এবং ভাল পারিবারিক অবস্থা থেকে আসা সেনারা কাজ
পায়।
‘যখন তুমি তোমার কাজের স্থানে পৌঁছবে, সবার আগে স্থানীয় প্রশাসনিক বিষয়ে অভিজ্ঞ এমন মানুষ খুঁজে
বার করবে, যেমন স্থানীয় কানুনগো, যারা অন্যান্য প্রশাসনের আধিকারিকদের ভালভাবে জানেন এবং
তাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে তাদের হৃদয় জিতে নেবে, তাদের থেকে জানবে, তোমার মহকুমায় যে সেনাদল আছে তাঁরা তোমার খামতির বা অসুবিধের সুযোগ নিতে পারে কি না, এবং আদৌ তাদের
সঙ্গে কোন আইনভঙ্গকারী জমিদারের সুসম্পর্ক আছে কি না।
‘জানবে স্থানীয়
জমিদারেরা নিয়মিত রাজস্ব প্রদান করে কি না, বা তোমার আগে যে আধিকারিক ছিল তার
সঙ্গে জমিদারেরা লড়ুয়ে মনোভাব নিত কি না। যারা বশ্যতা মানবে না তাঁদের সঙ্গে প্রথমে
সুব্যবহার করবে; তোমার সেই ব্যবহারে তারা যদি সদর্থক সাড়া না দেয় তাহলে তাঁদের শাস্তি
প্রদান করবে। যখন মনে করবে তোমার হাতে যে পরিমান সেনা রয়েছে, তারা সেই জমিদারকে
শাস্তি দিতে আপারগ, তখন তাঁর বিরোধী(জমিদার)দের তাঁর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেবে; সেই জমিদারের
কিছুটা জমি কেড়ে নিয়ে তাঁর পাশের জমিদারকে অর্পণ করবে; এর ফলে যখন যুদ্ধ লাগার পরিস্থিতি
হবে তখন সেই বন্ধু জমিদারের পক্ষে তোমার সেনা পাঠাবে।
‘রাজসভায় একজন
বিশ্বাসী করণিককে তোমার চিঠিপত্র ব্যবস্থাপনা করতে দেবে; যারা তোমার পাঠানো চিঠির
তথ্যানুসারে রাজসভায়(অবশ্যই প্রধান দেওয়ানকে) তা যথাযথভাবে পেশ করতে পারে।
‘স্থানীয়
ওয়াকায়িনবিশ, সাওয়ানিনিগার এবং হরকরাদের(যারা তাকে নানান খবর দেবে এবং গুপ্ত
খবরদার, গোযেন্দা) সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবে, যাতে রাজদরবারে তাঁদের পাঠানো সমীক্ষা
তোমার পক্ষে যায় এবং তোমার পদোন্নতি হয়।
‘সবসময় শস্ত্র নিয়ে
ব্যায়ামাভ্যাস করবে, নিয়মিত শিকারে যাবে, নিরন্তর ঘোড়ায় চড়বে যাতে নিজেকে যে কোন জরুরি অবস্থার
জন্য তৈরি রাখতে পার এবং প্রয়োজনে কোন সময় না নিয়েই লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়তে পার।
দুর্বলদের বিচার দেবে।
(চলবে)
No comments:
Post a Comment