তৃতীয় অধ্যায়
অর্থ ও ঘরগেরস্তি(হাউসহোল্ড) দপ্তর৯
প্রধান দেওয়ানের(হাই স্টুয়ার্ট) দায়িত্ব
দেওয়ানের তলায় থাকতেন সাম্রাজ্যের আমলাতন্ত্রের দ্বিতীয় প্রধানতম আধিকারিক দেওয়ান বা খানইসামান। তিনি আদতে খরচের আসল দেওয়ান।
\তার কাজকর্মগুলির প্রতি নির্দেশ
খানইসামানের অবর্তমানে এবং তার স্বাক্ষরে নগদ তহবিল(ক্যাশ ব্যালেন্স) এবং সংগৃহীত দ্রব্যগুলি, মুশরফ এবং তহবিলদারের পাঞ্জাগুলি মিলিয়ে দেখে নেবেন যে তালিকার সঙ্গে মজুদ ভাণ্ডার মিলছে কি না, না হলে তাঁদের ডেকে কম পড়া দ্রব্যগুলি ভর্তুকির ব্যবস্থা করবেন;
বিভিন্ন কারখানা এবং মালখানার বছরের ব্যায়ের হিসেব নিজের কাছে রাখবেন। খোঁজ করুণ কতগুলি খেলাত(পোষাক) খিলাতখানা এবং প্রত্যেক কারখানায় রয়েছে। মালখানার যদি আরও প্রয়োজন হয় তাহলে চাহিদা অনুযায়ী ব্যয়বরাদ্দ(সরনজাম) তৈরি করুণ(মাঝখানের ৪৯ পাতা নেই। তারপর...) ...নাহলে প্রয়োজনে পাওয়া যাবে না।
স্বর্ণকার, কলাইকার(এনামেলার), মুদ্রার ছাঁচ তৈরি কারক, জাল বুনক, ধাতুবিদ(অনেকটা স্বর্ণকারদের স্তরের – ‘সাধা কর’) ইত্যাদিদের সঙ্গে মিশে যান এবং ভাল ব্যবহার করুণ।
দস্তরএ খানইসামানের কাজকর্ম সম্বন্ধে যা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা হল,
১) শ্রমিকদের রোজের শ্রমিকদের মাসিক, বাৎসরিক, এবং দৈনন্দিন হাজিরা এবং যারা নতুন ঢুকছে, তাঁদের বেতন এবং পুরাতনদের বেতনবৃদ্ধির কাগজে স্বাক্ষর
২) নানান কারখানার দারোগা, আমিন, মুশরিফ, এবং তহভিলদারদের নতুন নিয়োগ, পদচ্যুতি, বা বদলি
৩) কারখানার কাজের নিয়মনীতি এবং ঘরগেরস্তির খাজাঞ্চিখানার নীতি তৈরি
৪) শ্রমিকদের নিয়োগ এবং বেতনের চিটা(স্লিপ) তৈরি করা
৫) কারখানার ব্যবস্থাপকেদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে প্রত্যুত্তর
৬) বিভিন্ন দাওয়াতখানা বা বিশ্রামগৃহে অভিজাতদের থাকার ব্যবস্থা
৭) নিমগোস্ত এবং পাওগোস্ত পরিদর্শন
৮) কারখানার শ্রমিকদের থেকে একরারানামা নেওয়া
৯) বিভিন্ন কারখানা এবং মালখানার দরখাস্ত বিচার বিবেচনা করা
১০) নজর, দান দক্ষিণার খরচ এবং উপহারের বিষয়ে নিজরদারি
১১) গৃহপালিত পশুদের খাদ্য বরাদ্দ
১২) কারখানা থেকে কোন কিছু ধার নেওয়া বিষয়ে অনুমতিপত্র
১৩) প্রাসাদের বিভিন্ন রান্নাঘরে খাদ্য বিতরণ করা, সেগুলি বাড়ানো বা কমানো, জেনানা মহল ছাড়া বিভিন্ন মহলের নির্দেশপত্রে প্রথমে খানইসামান এবং তার পত্র বুয়ুতাতের স্বাক্ষর প্রয়োজন।
১৪) মুতালিবাত বা রাষ্ট্রীয় আগ্রিম উদ্ধার বিষয়ে হিসাব-নিকাশ(মুহাসিবাত) উপস্থাপনায় স্বাক্ষর
১৫) কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা। আর নজরদারিতে থাকা কোন আধিকারিকের সম্পত্তি বা বেতন নতুন করে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ পাওয়ার সেই নকলটি স্বাক্ষর করে দেওয়ানের দপ্তর থেকে তার তনখা যাতে দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করা।
১৬) জেলায় যাওয়া সম্রাটের যে কোন ফর্মায়েশ পূরণ করা।
১৭) বাগানের রোজগার গ্রহণ, এবং দোকান এবং বাড়ি থেকে ভাড়া নেওয়া
১৮) কারখানার বড় চিঠি রাখা,
১৯) সুবার ডায়েরি আর আওয়ারিজা এবং সম্রাটের আওয়ারিজা কোন পরিবর্তন ছাড়া বন্ধ(সিল) করে রাখা
২০) শহরে নতুন এসে থাকার জন্য আধিকারিকদের অগ্রিমের দরখাস্ত বিষয়ে স্বাক্ষর,
২১) কারখানার দারোগা, আমিন, মুশরিফ এবং তহবিলদারদের উপস্থিতির নথি প্রত্যায়িত করা
২২) পেশকাশ(উপহার এবং উপঢৌকন) বা কোন মৃত মনসবদার থেকে বরামত করা সম্পত্তির(আমনুল) নানা বিষয়ের তালিকায় স্বাক্ষর,
২৩) বিভিন্ন রিশালার প্রধান(সাহেবইরিশালা)দের আর্থিক উপহারে প্রতিস্বাক্ষর
২৪) বিভিন্ন কারখানায় মালবাহকদের বিতরণ
২৫) রাজকুমার/রাজকুমারীদের বিবাহের ব্যবস্থাপনা,
২৬) হিসাব-কিতাবের(মুহাসিবত) পর যে নগদ উদ্ধার হল, তার তুমার (রেজিস্টার) পরীক্ষক খানইসামানের দপ্তরে পাঠাবেন, এবং বুয়ুতাতএর দপ্তরে তার নকল পাঠাতে হবে।
২৭) বিভিন্ন বাড়ি আর গৃহ সম্বন্ধে পরিকল্পনা(বিকল্প পাঠে, হিসাব-কিতাব)।
(চলবে)
No comments:
Post a Comment