মুঘল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বিদেশি প্রভাব
প্রথমত যে দেশ থেকে শাসকেরা এসেছে সেই দেশের ধর্মবিশ্বাস আর জাতিবিশ্বাস
নিয়ে ভারতে এসেছিল। ভারতের বাইরের দেশগুলিতে রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে যখন ইসলাম
গৃহীত হয়েছে, তার আট শতক পরে মুঘল ভারতে রাজত্ব করতে শুরু করেছে। এবং সেই
সব দেশে নতুন প্রশাসনিক ধারণাও বিকশিত হয়েছে।
আমাদের তুর্ক বিজেতারা যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভারতে নিয়ে এলেন, সেই ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বাইরের মুসলমান দেশগুলিতে পরীক্ষিত এবং সফলভাবে প্রয়োগ হয়ে চলেছিল; যেমন ইরাকের আব্বাসিদ খালিফা প্রশাসন বা মিশরের ফাতিমি খালিফ প্রশাসন এই তত্ত্বগুলি ততদিনে প্রয়োগ করে তাকে তাত্ব্বিক রূপ দিয়েছিল। মুঘল প্রশাসন এই প্রশাসনিক ভাবনার সঙ্গে জুড়লেন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ভারতীয় প্রশাসনের পরীক্ষিত রীতিনীতিগুলিকে। বলা ভাল ভারতীয় প্রশাসনিক ভাবনার সঙ্গে জুড়লেন আরব-পারস্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
মুঘল সাম্রাজ্যের সরকারি প্রশাসন, ধর্ম ব্যবস্থা, কর নীতি, দপ্তরে দপ্তরে সম্পর্ক, দপ্তরের ব্যবস্থাপনা আর গঠন, আমলাদের পদের নামকরণ বিদেশ থেকে সোজাসুজি ধার করে আনা। কিন্তু সেই ধারকরা নীতির সঙ্গে দেশের নানান প্রান্তে চালু, মানুষের মনের মধ্যে গেঁথে থাকা প্রশাসনিক নীতিগুলোর সামঞ্জস্য বিধান করা জরুরি হয়ে পড়ল। এক্ষেত্রে সমঝোতায় যেতে হল কিন্তু আমদানি করা নীতি সমূহকে। আর যেহেতু ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রীতিনীতি, আইন কার্যকর হয়ে রয়েছে, এতদিন ধরে সম্মানিত হয়ে এসেছে, তার ওপর কিন্তু বহিরাগত ইসলামি আইন চাপিয়ে দেওয়া হোল না, যেহেতু সেই রীতিনীতি সেই মৌল ধারণার বিরোধী ছিল না; এবং রাষ্ট্র চালানোর জন্য যে সব জাঁকজমকপূর্ণ রীতিনীতিগুলি প্রবাহিত হতে থাকল প্রজন্ম থেকে প্রন্মান্তরে(যেমন পূন্যাহ – এমন কি বহু পরে ক্লাইভও তা মেনেছেন); আর সাধারণভাবে গ্রাম্য প্রশাসনে যে সব নিচের দিককার কর্মচারী ছিল, তাদের ক্ষমতার ধাপগুলি, ভারতীয় শব্দবন্ধ বজায় রইল আগের মত; আর শুধু রাজদরবারে(যেখানে সম্রাটই শেষ কথা ছিলেন), উচ্চ আমলাদের ব্যবহারে(যারা পারস্য এবং মিশরের রীতিনীতি থেকে অনুপ্রেরণা পেতেন) আড়ম্বরে পালিত হতে থাকল বিদেশি ইসলামি আইন।
বিভিন্ন প্রাদেশিক প্রশাসনের উদাহরণ থেকে মুঘল প্রশাসনে বিদেশি রীতিনীতিগুলি চিহ্নিত করা যেতে পারে। যেমনা হামবুর্গের সি এইচ বেকার এন্সাইক্লোপিডিয়া অব ইসলামএ লিখছেন, ‘আরব সাম্রাজ্যের(যেমন মিশরে) প্রথম দিকে দুটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রশাসন(গরভর্নরশিপ) আর খাজাঞ্চি(ট্রেজারি) দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। প্রশাসকের নাম ছিল আমীর, তার নিয়ন্ত্রণে থাকত সেনা আর আরক্ষা বাহিনী(পুলিশ), তার পাশাপাশি ছিলেন খাজাঞ্জিখানার প্রধান, যার নাম আমিল। এই আলাদা আলাদা দপ্তর পরস্পরের ওপর কড়া নজরদারি রাখত। প্রশাসন আর সেনা প্রধান হওয়ায় আমীরের ক্ষমতার স্থান ছিল প্রথমে, কিন্তু দুজনেই সমপদের, অথচ বাস্তবে দেখা যেত খাজাঞ্চিখানার প্রধান আমিলের প্রভাব একটু হলেও বেশি।
আমাদের তুর্ক বিজেতারা যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভারতে নিয়ে এলেন, সেই ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বাইরের মুসলমান দেশগুলিতে পরীক্ষিত এবং সফলভাবে প্রয়োগ হয়ে চলেছিল; যেমন ইরাকের আব্বাসিদ খালিফা প্রশাসন বা মিশরের ফাতিমি খালিফ প্রশাসন এই তত্ত্বগুলি ততদিনে প্রয়োগ করে তাকে তাত্ব্বিক রূপ দিয়েছিল। মুঘল প্রশাসন এই প্রশাসনিক ভাবনার সঙ্গে জুড়লেন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ভারতীয় প্রশাসনের পরীক্ষিত রীতিনীতিগুলিকে। বলা ভাল ভারতীয় প্রশাসনিক ভাবনার সঙ্গে জুড়লেন আরব-পারস্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
মুঘল সাম্রাজ্যের সরকারি প্রশাসন, ধর্ম ব্যবস্থা, কর নীতি, দপ্তরে দপ্তরে সম্পর্ক, দপ্তরের ব্যবস্থাপনা আর গঠন, আমলাদের পদের নামকরণ বিদেশ থেকে সোজাসুজি ধার করে আনা। কিন্তু সেই ধারকরা নীতির সঙ্গে দেশের নানান প্রান্তে চালু, মানুষের মনের মধ্যে গেঁথে থাকা প্রশাসনিক নীতিগুলোর সামঞ্জস্য বিধান করা জরুরি হয়ে পড়ল। এক্ষেত্রে সমঝোতায় যেতে হল কিন্তু আমদানি করা নীতি সমূহকে। আর যেহেতু ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রীতিনীতি, আইন কার্যকর হয়ে রয়েছে, এতদিন ধরে সম্মানিত হয়ে এসেছে, তার ওপর কিন্তু বহিরাগত ইসলামি আইন চাপিয়ে দেওয়া হোল না, যেহেতু সেই রীতিনীতি সেই মৌল ধারণার বিরোধী ছিল না; এবং রাষ্ট্র চালানোর জন্য যে সব জাঁকজমকপূর্ণ রীতিনীতিগুলি প্রবাহিত হতে থাকল প্রজন্ম থেকে প্রন্মান্তরে(যেমন পূন্যাহ – এমন কি বহু পরে ক্লাইভও তা মেনেছেন); আর সাধারণভাবে গ্রাম্য প্রশাসনে যে সব নিচের দিককার কর্মচারী ছিল, তাদের ক্ষমতার ধাপগুলি, ভারতীয় শব্দবন্ধ বজায় রইল আগের মত; আর শুধু রাজদরবারে(যেখানে সম্রাটই শেষ কথা ছিলেন), উচ্চ আমলাদের ব্যবহারে(যারা পারস্য এবং মিশরের রীতিনীতি থেকে অনুপ্রেরণা পেতেন) আড়ম্বরে পালিত হতে থাকল বিদেশি ইসলামি আইন।
বিভিন্ন প্রাদেশিক প্রশাসনের উদাহরণ থেকে মুঘল প্রশাসনে বিদেশি রীতিনীতিগুলি চিহ্নিত করা যেতে পারে। যেমনা হামবুর্গের সি এইচ বেকার এন্সাইক্লোপিডিয়া অব ইসলামএ লিখছেন, ‘আরব সাম্রাজ্যের(যেমন মিশরে) প্রথম দিকে দুটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রশাসন(গরভর্নরশিপ) আর খাজাঞ্চি(ট্রেজারি) দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। প্রশাসকের নাম ছিল আমীর, তার নিয়ন্ত্রণে থাকত সেনা আর আরক্ষা বাহিনী(পুলিশ), তার পাশাপাশি ছিলেন খাজাঞ্জিখানার প্রধান, যার নাম আমিল। এই আলাদা আলাদা দপ্তর পরস্পরের ওপর কড়া নজরদারি রাখত। প্রশাসন আর সেনা প্রধান হওয়ায় আমীরের ক্ষমতার স্থান ছিল প্রথমে, কিন্তু দুজনেই সমপদের, অথচ বাস্তবে দেখা যেত খাজাঞ্চিখানার প্রধান আমিলের প্রভাব একটু হলেও বেশি।
No comments:
Post a Comment