রাষ্ট্র সমস্ত সামাজিক দায়বদ্ধতা ঝেড়ে ফেলেছিল
সাম্রাজ্যের প্রান্তিক প্রশাসনের কথা যত কম বলা যায় তত ভাল। সুবার সদর,
যেখানে স্থানীয় সুবাদার, দেওয়ান এবং কাজি থাকতেন, তাঁরা অনুসরণ করতেন
রাজসভায় তাঁদের উচ্চতমদের কাজের পদ্ধতি। এক ইওরোপিয় লেখক বলেছেন,
সুবাদারেরা তার নিজের সুবায় পাদশা(বাদশা) ছিলেন। কিন্তু সাধারণের, বিশেষ
করে গ্রামীণদের রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক জীবন নিয়ে কোন তথ্য এখনও পর্যন্ত
পাওয়া যায় নি, এবং তার একটা কারণ রয়েছে। আমি এর আগে বলেছি, রাষ্ট্র সে সময়ে
নাগরিকের সুরক্ষা আর রাজস্ব আদায় করে তার দায় শেষ করে দিত – কোন সামাজিক
কাজে মাথা দিত না, আর যতদিন না গ্রামীনেরা রাষ্ট্র বা তাঁদের স্থানীয়
প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে, তত দিন রাষ্ট্র তাঁদের দিকে
তাকিয়েও দেখত না। সামাজিক উন্নতি, অর্থনৈতিক বিকাশের কোন দায়(একমাত্র
সম্রাট নিজের দায়িত্বে – খালসা শরিফা – যেখানে তিনি প্রায়
স্বাধীন জমিদারের মত আচরণ করছেন), শিল্প সংস্কৃতি বিকাশের দায়(নিজের
ভালবাসার এলাকা টুকু ছাড়া), যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়ানোর দায়(যতক্ষণ না তা
সামরিক প্রয়োজন উদ্ভুত হচ্ছে) রাষ্ট্র নিতে অস্বীকার করেছে।
এই সব কাজ যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে একেবারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়েছে, আর গ্রাম সংসদে গ্রামীণ মোড়ল বা পঞ্চায়েত বা যৌথভাবে নেওয়া হত। আর বড় এলাকায় এই কাজে দায় ছিল জমিদার বা সামন্তদের।
মানুষের জীবন বিকাশে ঐচ্ছিকভাবে পরিকল্পনা করার প্রথম দায় দেখিয়ে ছিলেন যিশুখ্রিস্ট জন্মের ২৫০ বছর আগে রাজা অশোক। তার কাজের অনুসরণ আকবর ছাড়া কোন মুঘল সম্রাট করেন নি। তার উচ্চস্তরের নির্দেশ ব্যতিরেকে নিজের সদরের বাইরে যে সব মুঘল প্রশাসক কাজ করার উৎসাহ দেখিয়েছিলেন, তার ভিত্তি ছিল শুধুই ব্যক্তিগত স্বার্থ আর লোভ। এবং এই কাজগুলি সামাজিক জীবনে খুব ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে।
চিনের মত মধ্যযুগের স্থানু(মেডিয়াভ্যাল স্টেশনারি টাইপ অব সিভিলাইজেশন) সাম্রাজ্যগুলিতে প্রচুর আদিবাসী সমাজ বাস করত। এই সাম্রাজ্যগুলি একজোট হয়ে ছিল, কেননা এই রাষ্ট্র বিশাল গ্রাম সামাজে বিন্দুমাত্র হস্তক্ষেপ করে নি। এর বিনিময়ে গ্রামগুলোকে নির্দিষ্ট পরিমান সৈন্যবাহিনী আর রাষ্ট্রকে ভূমি রাজস্ব দিয়ে রাষ্ট্রকে সাহায্য করতে হত।
এগুলি প্রায় স্থানীয় অটোনমির মত ছিল। কিন্তু এই অটোনমি এনজয় করা এলাকা ভৌগোলিকভাবে এত ছোট ছিল, এবং এদের কাজ কর্ম এত সীমাবদ্ধ ছিল যে, এই মুঘল আমলের এই গ্রামগুলিকে স্থানীয় অটোনমি নয় প্যারোকিয়াল সেলফ গভর্মেন্ট বলা যায়। যে মানুষের রাজনৈতিক স্বাধীনতা নেই, কর তুলে জাতীয়(গোষ্ঠী বা জাতির বাইরে) স্তরে কাজ করতে পারে না, তাঁদের স্থানীয় অটোনমি ভোগ করত এই কথা বলা যাবে না।(ভূমিকা শেষ)
এই সব কাজ যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে একেবারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়েছে, আর গ্রাম সংসদে গ্রামীণ মোড়ল বা পঞ্চায়েত বা যৌথভাবে নেওয়া হত। আর বড় এলাকায় এই কাজে দায় ছিল জমিদার বা সামন্তদের।
মানুষের জীবন বিকাশে ঐচ্ছিকভাবে পরিকল্পনা করার প্রথম দায় দেখিয়ে ছিলেন যিশুখ্রিস্ট জন্মের ২৫০ বছর আগে রাজা অশোক। তার কাজের অনুসরণ আকবর ছাড়া কোন মুঘল সম্রাট করেন নি। তার উচ্চস্তরের নির্দেশ ব্যতিরেকে নিজের সদরের বাইরে যে সব মুঘল প্রশাসক কাজ করার উৎসাহ দেখিয়েছিলেন, তার ভিত্তি ছিল শুধুই ব্যক্তিগত স্বার্থ আর লোভ। এবং এই কাজগুলি সামাজিক জীবনে খুব ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে।
চিনের মত মধ্যযুগের স্থানু(মেডিয়াভ্যাল স্টেশনারি টাইপ অব সিভিলাইজেশন) সাম্রাজ্যগুলিতে প্রচুর আদিবাসী সমাজ বাস করত। এই সাম্রাজ্যগুলি একজোট হয়ে ছিল, কেননা এই রাষ্ট্র বিশাল গ্রাম সামাজে বিন্দুমাত্র হস্তক্ষেপ করে নি। এর বিনিময়ে গ্রামগুলোকে নির্দিষ্ট পরিমান সৈন্যবাহিনী আর রাষ্ট্রকে ভূমি রাজস্ব দিয়ে রাষ্ট্রকে সাহায্য করতে হত।
এগুলি প্রায় স্থানীয় অটোনমির মত ছিল। কিন্তু এই অটোনমি এনজয় করা এলাকা ভৌগোলিকভাবে এত ছোট ছিল, এবং এদের কাজ কর্ম এত সীমাবদ্ধ ছিল যে, এই মুঘল আমলের এই গ্রামগুলিকে স্থানীয় অটোনমি নয় প্যারোকিয়াল সেলফ গভর্মেন্ট বলা যায়। যে মানুষের রাজনৈতিক স্বাধীনতা নেই, কর তুলে জাতীয়(গোষ্ঠী বা জাতির বাইরে) স্তরে কাজ করতে পারে না, তাঁদের স্থানীয় অটোনমি ভোগ করত এই কথা বলা যাবে না।(ভূমিকা শেষ)
No comments:
Post a Comment