গতিশীলতা
তাঁতিদের ভৌগোলিক
গতিশীলতা বিষয়ে আমরা বলতে পারি যে সপ্তদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের উদাহরণে আমরা দেখি
যে তাঁতিরা তাদের বাসস্থান থেকে প্রায়শই নড়তে চাইতেন না, এমন কি বিপুল বিশাল
অর্থনৈতিক দুর্যোগেও। তাঁতিদের না নড়ার সেই মানসিকতা যে পরে আমাদের আলোচ্য সময়ে
পাল্টেছে এমন মনে করার কোন কারণ নেই (S. Chaudhuri, Trade and
Commercial Organization, p. 151, বলা হয়েছে ১৬৬০ সালে কাশিমবাজার থেকে তাঁতিদের তুলে এনে
হুগলীতে বসাতে বেশ ঝামেলা পোয়াতে হয়েছিল এবং একই সঙ্গে তাদের মাদ্রাজে নিয়ে যেতেও
ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ for
their caste
and lineage is such that they shall lose their birth right if they come upon
salt water)। তবে এই সময়ে আমরা লক্ষ্য করি যে, বেআইনি আদায়, অত্যাচার
বা ধারের চাপে বহু সময় তাঁতিরা তাদের গ্রাম থেকে পালিয়ে যেতেন। তবে তাঁতিদের কাজের
ওপর অতিরিক্ত চাপ আর বাধ্যবাধকতা কোন প্রভাব ফেলত কি না তা নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে।
ওর্মে বলছেন If
guards
were placed upon the [weaving]
village which is the only method of compulsion that can
be used, the alarm would be taken; and half of the country, by
the retreat of these people [presumably weavers], wouldl be depopulated in a
day's time(Orme,
Historical
Fragments, p.
411)। গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির খাতায় খুব একটা দুর্লভ
ছিল না (Beng.
Letters Recd., vol. 22, f.298, para. 80, 18 Sept. 1752; FWIHC,
vol.
I, p. 606)। জুগদিয়ার ব্রিটিশ কুঠিয়াল ১৭৫১ সালে লিখছেন, dread of the
nawab's extortions তাদের
বেশ কিছু তাঁতি গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে(Fact. Records, Dacca, vol. 3, Annex. to
Consult., 17 Nov. 1754)। খাসা জোগাড় করতে চাঁদপুরে টমাস হিন্ডম্যানকে পাঠানো হলে
তিনি ঢাকায় জানাচ্ছেন, দালাল আর পাইকারদের ধার শুধতে না পেরে তাদের তাঁতিরা পালিয়ে
গিয়েছেন, have
thrown more money into their hands than they were able
to account for (N.K.
Sinha, Economic
History of Bengal, vol.
I, p.157)।
গ্রাম ছাড়ার এই
ধরণের প্রচুর উদাহরণ কোম্পানির তথ্যে সুপ্রচুর। মারাঠা হ্যাঙ্গামে, অন্যান্য
অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি প্রভাবিত পশ্চিম প্রান্তবাংলার বহু তাঁতি উত্তরবংগের
নানান এলাকায় পালিয়ে গিয়েছিলেন। ১৭৪৫ সালে কলকাতার দাদনি বণিকেরা কাপড়ের দাম
বারাবার দাবি করেছিলেন কারণ the late troubles in the country [the Maratha
invasion] and the extortion of the government had ruined
numbers of weavers and made them fly another parts(J3PC, yol. 17, f.
495, 21 March 1745.)। আবার যখন দাদনি বণিকদের ফোর্ট উইলিয়াম কাউন্সিল জানাল যে
তারা কেন কাপড়ের জন্যে এত বেশি অর্থ দাবি জানাচ্ছে, uch extravagant
prices and proposing to
contract for so few goods', দাদনি বণিকেরা জানাল, on account of dearness of cotton,
rice and oil and everything in
general at the aurungs, and most of the weavers being obliged to
fly from their place of residence on acoount of
the government and troubles in
the country (BPC,
vol. 25, f.
125vo,
25 April 1752)। এছাড়াও আরও কিছু উদাহরণ আছে যদিও খুব বেশি নয়, কাজের
অভাবে তাঁতিরা তাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। জুগদিয়ার ব্রিটিশ কুঠিয়াল ১৭৫০ সালে
ঢাকাকে লিখছেন, তারা যদি প্রয়োজনীয় অর্থ না পাঠায়, এবং তাঁতিদের যদি কাজ না দেওয়া
যায় তাহলে তারা leave the
aurungs for want of work(Beng.
Letters Recd., vol. 21, f. 25, para,: 59, 23 Aug. 1750)। ১৭৫১ সালে
দাদনি বণিকেরা জানিয়েছিলেন তারা জামাওয়ার সরবরাহ করতে পারবেন না তার কারণ, the weavers
who used to work inJamawars were gone-from thence হয়ত প্রয়োজনীয় কাজের অভাবে(NAI, Home Misc., vol. 16, ff.
183-84, para. 7l,
Letter
to Court, 4 Feb. 1751)। এই সব
উদাহরণ কিন্তু অতি রোজগারের প্রভাবে এক এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার
উদ্যমের ভৌগোলিক গতিময়তার খুব বেশি উদাহরণ হতে পারে না। এর একটা বড় কারণ হয়ত
বাংলার বস্ত্র শিল্প মূলত গ্রামীন পরিবারভিত্তিক উদ্যম এবং একটি জাতের থাকবন্দীর
মধ্যে আটকে ছিল। একমাত্র ১৭৫০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাঁতিদের ফোর্ট
উইলিয়ামের চত্বরে আনতে সফল হয়েছিলেন, তবে এটা খুব সীমিত পরিসরে হয়েছিল(BPC, vol. 29, f. 157vo., 11 August
1757)। ওপরের আলোচনার সূত্র ধরে সহজভাবে বলতে পারি, সাম্প্রতিক উদাহরণে দেখা গিয়েছে
বাংলার তাঁতিরা করমণ্ডলের তাঁতিদের তুলনায় অনেক কম গতিশীল ছিল(S, Arasaratnam,
'Weavers, 'Merchants and Cqmpany', IESHR, vol. XVII, no. 3, p.274)।
No comments:
Post a Comment