বাংলার বস্ত্র
শিল্পের তাঁতি এবং অন্যান্য কারিগরের রোজগার কত ছিল সে নিয়ে আমাদের হাতে খুব বেশি
তথ্য সূত্র নেই। একটাই ১৭৩৬ সালের তথ্য দেখানো যায় যেখানে ঢাকা কুঠিয়াল লিখছেন যে
চরকা কাটনি এবং men
that served weavers কাজ করে a pun
[one pun
of
cauris]
and
their rice (BPC,
vol. 11, f. 289,
28 Aug.
1736)। সে সময় চাল পাওয়া যেত এক টাকায় ২ মন চাল এবং
কারিগরেরা তাদের কাজের বিনিময়ে ২ সের চাল দৈনিক পেত তাহলে চাল বাবদ তার মাসিক
মুদ্রায় রোজগার হত ৪৮ পণ কড়ি এবং মাসে সে যদি ৩০ পন কড়ি মুদ্রা শ্রমের বিনিময়ে
পাতেন তাহলে তার মাসিক মুদ্রার রোজগার ৭৮ পণ কড়ি বা ১৯.৫ আনা বা ১টাকা সাড়ে তিন
আনা(4
pun of
cauris =
1
anna, 16 annas =
1
Rupee)। এই হিসেবে মোটামুটি জন টেলরের দেওয়া অঙ্ক সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায় – মধ্য অষ্টাদশ
শতকে একজন সাধারণ তাঁতির মাসিক রোজগার ছিল ১টাকা থেকে দেড় টাকা(ঢাকা কুঠিয়াল
জানিয়েছিল ১৭৩৮ সালে চালের দাম এটাকায় ২ মন ২০ সের থেকে ৩ মন(Bengal and Madras
Papers, vol. II,
p. 34,
Fort
William Consultati6ns, 11
Dec.
1752;
BPC,
vol. 26,
f..21,t, l 'l Dec. 1752; James Long, Unpublished
Record, (ed\ M.P. Saha, p. 40,· doc.
no. 103) ঢাকার কুঠিয়াল দাম বেশ বাড়িয়েই বলছিল কারণ তাকে যে বেশি
দামে কাপড় দেওয়া হয়েছিল, সেই ব্যাপারটার ন্যায্যতা প্রতিপাদন করতে সে দাম বাড়ার
বিষটা তুলেছিল। তাই মোটামুটি ধরে নিয়েছি টাকায় ২ মন চালের দাম)। ওপরের আলোচনা থেকে
যে গুরুত্বপূর্ন তথ্যটা উঠে এল সেটা হল, পুরো সময়ের কাজ করা চরকা কাটনি একজন
তাঁতির সহায়ক বা তাঁতির সমান রোজগার করত।
অষ্টাদশ শতকের
শেষের দিকে তাঁতি, কাটুনি এবং ধোবির রোজগার নিয়ে বেশ কিছু অঙ্ক কষা হয়েছে। জন টেলরের
হিসেবে মলবুস খাস – সম্রাটের পরার কাপড়, বাংলার সূক্ষ্ম বস্ত্রের মধ্যে অগ্রগণ্য –
থেকে ঢাকার সোনারগাঁওতে ৬ মাস ধরে ৩ জন বোনার নেট লাভ – যেখানে প্রধান তাঁতি সুতো
সরবরাহ করত, তাঁতি বুনত এবং তাঁতির সাহায্যকারী নানান কাজে সাহায্য করত – মোট ৪৭
টাকা(আসলে ৪১টাকা, কিন্তু তাঁতি সুতোর সূক্ষ্ম হেরফের করে আরও ৬টাকা বাঁচাতে পারত)।
তাঁতিকে প্রধান তাঁতি মাসে ৩-৩.৫ টাকা আর তার
সাহায্যকারীকে ১.৫-১.৭৫টাকার বিনিময়ে কাজে লাগাত। টেলর সযত্নে বলছেন এই লাভ খুবই
কম কারণ, less
even than what the weavers are understood
to make by several other high priced assortm.ents of this
province(Ibid.,
f. 145-47)। ওপরে
যে রোজগারের হিসেব দেওয়া গেল, সেটা কিন্তু দামিতম কাপড় তৈরির মজুরি, গড় তাঁতির
মজুরি হিসেবে ধরে নেওয়া ঠিক নয়। টেলর নিজে এই বিষয়টা বিশ্লেষণ করে পরে বলছেন,
তাঁতির মজুরি খুব দামি কাপড়ের জন্যে ২.৫ থেকে ৩.৫ টাকা এবং তার সহকারী পায় ১টাকা
থেকে ২ টাকা(Ibid.,
f. 205)। যদিও
ওপরে টেলরের দেওয়া সর্বোচ্চ হার প্রায় কাছাকাছি, কিন্তু ন্যুনতম হারে কিছু
পার্থক্য রয়েছে। তার অর্থ ঢাকার সাধারণ তাঁতির রোজগার দক্ষ দামি শাড়ি তৈরির তাঁতির
থেকে কম ছিল।
No comments:
Post a Comment