এর সঙ্গে জুড়তে
হবে নদীমাতৃক বাংলার আরেকটি সুবিধে সড়ক আর অসংখ্য নদিপথে সস্তায় সহজ গতায়াত
ব্যবস্থা। বাংলার প্রায় প্রত্যেকটি বস্ত্র উৎপাদন এলাকায় নদীপথে যাওয়ার ব্যপ্ত এবং
অন্যান্য বস্ত্র উৎপাদন এলাকার তুলনায় শস্তাতম পরিবহন সুবিধে ছিল শুধু বাংলার
বিভিন্ন ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলির সঙ্গেই নয়, উত্তরভারতের বা বিভিন্ন বন্দরের
সঙ্গেও। ফলে বছরের পর বছর ধরে, এবং আমরা যে সময়ের কথা আলোচনা করছি সে সময়েও, বাংলা
সারা ভারতের অন্যান্য বস্ত্র উতপাদনে প্রতিযোগী কেন্দ্রগুলোর তুলনায় তুলনামূলক
প্রতিযোগিতাহীনভাবে অনেক এগিয়েছিল।
বাংলার
বস্ত্রশিল্পের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট
বাংলার বস্ত্র
শিল্পের বেশ কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট ছিল। বাংলার হস্তশিল্পের সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণতম বৈশিষ্ট্য ছিল, এর আগেও এটা আমরা আলোচনা করেছি, সেটা হল এটা মূলত
গ্রামের পরিবারভিত্তিক শিল্পব্যবস্থা। অবশ্যই শহুরে এলাকাতেও বেশ বড়ভাবে এই
শিল্পটি বিকশিত ছিল, কিন্তু বাংলার হস্তশিল্পের উৎপাদন ব্যবস্থার মৌলিক চরিত্র ছিল
এটা গ্রামীন এবং পরিবার ভিত্তিক। এ প্রসঙ্গে আমরা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির
চাকুরে-ঐতিহাসিক ওর্মের মন্তব্য তুলে দিতে পারি, it is difficult to find a
village in which every ma'n, woman and child is not employed in
making a piece of cloth এবং এর
থেকে শিল্পের গ্রামীন চরিত্রটি সহজেই পরিস্ফূট হয়(Orme, Historical
Fragments, p.409)। যদিও
বিদ্দেশি বণিক কোম্পানিগুলি এবং কিছু কিছু দেশিয় ব্যবসায়ীও শহুরে কারিগর পাড়া আর
শহুরে গঞ্জগুলি থেকে বিভিন্ন মধ্যস্থজালের মাধ্যমে জোগাড় করতেন যাদের প্রতিনিধি
বিভিন্ন আড়ং এবং গ্রামীন হাট থেকে চাহিদামত তাদের রপ্তানি পণ্য জোগাড় করতেন। ঢাকা,
কাশিমবাজার, মালদা, হুগলি, রাধানগর, শান্তিপুর, জুগদিয়া ইত্যাদি বাংলার বিভিন্ন
দক্ষতাসম্পন্ন তাঁতিরা এই কেন্দ্রগুলিতে নানান ধরণের বস্ত্র তৈরি করতেন ঠিকই
কিন্তু এ এলাকাগুলির পরিচয় ছিল বিপুল বড় বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে। এর আগে যে আমরা
ড্যানিস সমীক্ষার কথা আলোচনা করেছি, সেখানেও এই শিল্পকে মূলত গ্রাম কেন্দ্রিক বলা
হয়েছে। এই শিল্পের চরিত্র যে মূলত গ্রামীন এটাও পরিষ্কার হয়ে গ্যাছে বীরভূমের আলোচনায়
যে জেলায় মূলত গারা বা গুরা(সাধারণ মানের ক্যালিকো) উৎপাদন হত, এবং এটা almost solely
inhabited by weavers (Ole
Feldbaeck, 'Cloth Production in Beqgal', BPP, p.128)।
আবারও বলা যাক
বাংলার বস্ত্র শিল্প প্রাথমকভাবে গ্রামীন পরিবারভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা এবং
পরিবারের সদস্যরা তাঁতের নানান কাজ করা ছাড়াও বহু সময় কৃষি এবং চাষেরও কাজ করত। চরকা
কাটনি, রেশমের সুতো লাটাই করার মপ্ত বেশ কিছু কাজ প্রায় পুরপুরি চাষী-তাঁতি
পরিবারের মহিলারাই করে থাকেন এবং তাঁতি-চাষী পরিবারের শিশুরাও এই ধরণের উতপাদনের
নানান পর্যায়ের সঙ্গে জুড়ে থাকে। শুধু ওর্মেই the assistance which a wife and family
are qpable of affording to the labours
of the loom এই কথা বলবেন না, একইসঙ্গে ডেনিস সমীক্ষা, যেটি নিয়ে আমরা
আলোচনা করেছি, সেখানেও বলা হবে he himself, his
wife and family may clean and spin' and took the cloth after weaving
to tpe market (Orme,
Historical Fragments, pp. 409-10; Ole Feldbaeck, 'Cloth Production
in Bengal', BPP,
p.
126 আর Ibid.,
p. 126)। ১৬৭০ সালের মালদার বস্ত্র শিল্প নিয়ে বর্ণনায় ডাচ কোম্পানির আমলা লিখবেন এই
জেলার একটি আড়ংএর পশ্চাদ্ভূমি হল ৩৫০টি গ্রাম(Report of Henry Caansius on Maida, VOC,
1278, ff.2173-2174, 7 Sept.
1690)। ১৭৪১ সালে কাশিমবাজারের ব্রিটিশ কাউন্সিল লেখে যে ইওরোপিয় রপ্তানি ব্যবসার
অন্যতম প্রধান পণ্য, গুরা তৈরি হচ্ছে, town and villages
within the circqit of twenty miles. round about Cutwah [Katwa]
(which town 'is chief place to which they [merchants and weavers]
bring said cloth
when
rrady iQ. order to send it away by boats or land carriage as the time of the
year admits)( Fact. Records, Kasimbazar, vol. 6, 16. Oct. 1741)। এমন কি পলাশীর
বছরে ১৭৫৭ সালে ঢাকা কুঠিয়ালেরা যখন তাঁতিদের সঙ্গে চুক্তি করার পরিকল্পনা করছিলেন
দালাল আর পাইকারদের এড়িয়ে গোমস্তা মার্ফত, তার লিখলেন, extent of the
different aurμpgs is so very
considerable তাতে প্রয়োজন
হবে infinite
number of servap.ts to
overlook the weavers(Fact. Records,
Dacca, vol 3, 30 Nov. 1757)।
No comments:
Post a Comment