পটুয়া-চিত্রকরদের
পুতুল
কাঠের পুতুল ছাড়া যে
বিশেষ পুতুলটি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেটি হল পটুয়াদের পোড়ামাটির পুতুল।
মেদিনীপুরের(এর সঙ্গে তারাপদ সাঁতরা বলছেন হাওড়ার) চিত্রকরেরা বহু পুরনো পুতুল
গড়ার ধারা আজও ধরে রেখেছেন আসম্ভব দক্ষতায়। মেদিনীপুরের প্টুয়ারা আজও পট আঁকেন
পুতুলও তৈরি করেন।
পটুয়া মহিলা
চিত্রকরেরা যে সব পুতুল তৈরি করেন তা সব ছ্যাঁচে ফেলা। তবে হাতে টিপে টেপা পুতুলও তাঁরা
তৈরি করেন। সেসব পুতুলে থাকে নানাবিধ রঙের প্রলেপ। এই পুতুলগুলোর নামও বেশ কৌতুহল
জাগায় যেমন শিলেট পুতুল, হিংলি পুতুল, মুখোশ পুতুল, বড়ো পুতিল, ঝুমঝুমি পুতুল ইত্যাদি। হিংলি পুতুল তৈরি হয় হাতে টিপে।
দেওয়ালের গায়ে ঝুলিয়ে রাখা পুতুলগুলোকে শিলেট পুতুল বলে, মুখোশ পুতুল নানান আকারের
ছোট বড় দুরকমই হয়। বড়গুলো ২৫ সেমি প্ররযন্ত হয়ে থাকে। শেষ দুটো পুতুল ঘর সাজানোর
জন্য তৈরি হয়।
প্টুয়া রমণীরা যেসব
পুতুল তৈরি করেন তার মধ্যে রয়েছে নানা রকমের মাছ, পশু, পাখি, দেব্দেবীর মুখোশ। তৈরি
করেন রুই থেকে চিংড়ি প্রায় সব ধরণের মাছ, বিড়াল, বাঘ, হাতি, গরু, ময়ূর, টিয়া পাখি,
দাঁড়ে বসা জোড়া পাখি, কলসি কাঁখে বৌ, স্ত্রী পুরুষের মুখোশ, রামকৃষ্ণ, লক্ষ্মী,
সরস্বতী, ষষ্ঠী, শিবদুর্গা, কালী, দুর্গা, মোহান্ত, সাধু ইত্যাদি। হিংলি পুতুলের
মধ্যে সবথেকে ভাল লাগে কোলে, ছড়ানো পায়ের ওপরে রাখা সন্তান।
পুতুলগুলো বেশ হাল্কা করে তৈরি করা হয়। এবং এর
পদ্ধতি বেশ আকর্ষণীয়। হালকা করার দরকার কেননা এগুলোকে দূর-দূরান্তে নিয়ে বিক্রি
করতে হয়। হালকা করে গড়ার পদ্ধতি হচ্ছে, কাদার মণ্ডটি বেলে রুটির মত করে তারপর
হাতের আঙ্গুলের মোড়কে নানান রূপ দেওয়া হয়(কোনোদিন সুযোগ হলে এ নয়ে বিশদে বলা যেতে
পারে।)।
No comments:
Post a Comment